হাইকোর্টের রায়ে, অবশেষে ক্ষতিপূরণ পেল নিহত চার নকশালপন্থী কৃষকের পরিবার। বোলপুর থানার মুলুকে, বাবা, ছেলে-সহ চার নকশালপন্থী কৃষককে খুনের ঘটনায় জেলা জজ কোর্টের রায়কে বহাল রাখে কলকাতা হাইকোর্টের ডিভিশন বেঞ্চ। ২০১৫ সালের ৬ জুলাই, কলকাতা হাইকোর্টের বিচারপতি নদীরা পাথেরিয়া ও ইন্দ্রনীল চট্টোপাধ্যায়ের ডিভিশন বেঞ্চ ৪৬ জনকে যাবজ্জীবন কারাদণ্ডের নির্দেশ দেন। পাশাপাশি মুলুক হত্যা মামলায়, নিহত চার নকশালপন্থী কৃষকের পরিবারকে এক মাসের মধ্যে কমপক্ষে প্রত্যেককে দু’লক্ষ টাকা ক্ষতিপূরণের নির্দেশ দেয় ডিভিশন বেঞ্চ।
নিহত ওই কৃষকদের পরিবারের অভিযোগ, ডিভিশন বেঞ্চের রায় এবং নির্দেশের ২৩ মাস পর্যন্ত কোনও ক্ষতিপূরণ না পাওয়ায়, বাধ্য হয়ে কলকাতা হাইকোর্টে মামলা করতে হয়। কলকাতা হাইকোর্টের ডিভিশন বেঞ্চের রায় কার্যকর হচ্ছে না এবং ক্ষতিপূরণ দিতে টালবাহানা এবং গড়িমসির অভিযোগ তুলে রাজ্য সরকারের বিরুদ্ধে মামলা হয় হাইকোর্টে। ওই পরিবারগুলির পক্ষে সিপিআই (এমএল) জেলা সম্পাদক তথা আইনজীবী শৈলেন মিশ্র বলেন, “যে ক্ষতিপূরণের টাকা এক মাসের মধ্যে পাওয়ার কথা ছিল, সেটা পেতে প্রায় ২৪ মাস বা দু’বছর লাগল। ওই পরিবারগুলি ক্ষতিপূরণ পাওয়ায় আমরা খুশি। তবে জেলা আইনি পরিষেবা সহায়তা কেন্দ্রের ভূমিকা উল্লেখযোগ্য।”
প্রসঙ্গত, নকশালপন্থী সংগঠন করার অপরাধে ১৯৮৭ সালের ১৯ নভেম্বর বোলপুর থানার মুলুক গ্রামের বাসিন্দা কৃষক শেখ জিয়াউদ্দিন, শেখ মান্নান, সুধীর ঘোষ ও তাঁর ছেলে নির্মল ঘোষকে লাঠি, টাঙ্গি, বল্লম, তির ধনুক-সহ ধারালো অস্ত্রশস্ত্র দিয়ে খুন করে সিপিএম। এক পরিবারের বাবা, ছেলে সহ চার জন কৃষককে খুনের ঘটনার ২২ বছর পর ২০০৯ সালের ৩১ মার্চ ৪৬ জন অভিযুক্তকে যাবজ্জীবন কারাদণ্ডের নির্দেশ দেয় সিউড়ি জেলা জজ আদালত। নিম্ন আদালতের রায়ের বিরুদ্ধে কলকাতা হাইকোর্টের দ্বারস্থ হয় সাজাপ্রাপ্তেরা। নিম্ন আদালতের রায়কে বহাল রাখার পাশাপাশি নিহত কৃষকদের পরিবারকে ক্ষতিপূরণের নির্দেশ দেয় ডিভিশন বেঞ্চ।
এ দিন নিহত জিয়াউদ্দিন শেখের স্ত্রী অমিলা বিবি, শেখ মান্নানের স্ত্রী রাবিয়া বিবি, সুধীর ঘোষের স্ত্রী আশালতা ঘোষ ও নির্মল ঘোষের স্ত্রী ডলি ঘোষ জানান, কলকাতা হাইকোর্টের নির্দেশে ক্ষতিপূরণ পেয়েছি।