প্রশিক্ষণ: এনসিসি শিবিরে অস্ত্র-শিক্ষা। রাজনগরের স্কুলে। নিজস্ব চিত্র
গত বছর ফেব্রুয়ারিতে রাজনগরের লাউজোড় স্কুলের কাছে একটি ‘স্মল আর্মস ফায়ারিং রেঞ্জ’ গড়েছিল এনসিসি। তার পর থেকে নিয়মিত বিভিন্ন প্রশিক্ষণ শিবির চলে সেখানে। এখন সেখানে চারটি জেলার স্কুলকলেজ থেকে আসা ৪০০ এনসিসি শিক্ষার্থীদের নিয়ে ১০ দিনের বার্ষিক যৌথ প্রশিক্ষণ শিবির চলছে। এনসিসি সূত্রে খবর, বর্ধমানে এনসিসির গ্রুপ হেড কোয়াটার্সের উদ্যোগে চলছে ওই প্রশিক্ষণ শিবির। আয়োজন করেছে সিউড়ির এনসিসি ১৫ ব্যাটালিয়ন। ১ জুন থেকে শুরু হয়েছে শিবির। চলবে ১০ জুন পর্যন্ত।
এনসিসির তরফে জানানো হয়েছে, পড়ুয়াদের আত্মবিশ্বাস বাড়াতে, একতা ও শৃঙ্খলাপরায়ণ করে তুলতেই ওই প্রশিক্ষণ। রাজনগরে জঙ্গলঘেঁষা জনবিরল ওই স্কুল চত্বর ও আশপাশে প্রশিক্ষণ শিবিরের পরিকাঠামো গড়ে তোলে এনসিসি। স্কুলের গরমের ছুটিতে ওই প্রশিক্ষণ শিবিরে বীরভূম, পূর্ব ও পশ্চিম বর্ধমান, হুগলি এবং পুরুলিয়ার বিভিন্ন স্কুল-কলেজের ২৬০ জন সিনিয়র পুরুষ ক্যাডেট ও ১৪০ জন জুনিয়র ক্যাডেট সামিল হয়।
লেফটেন্যান্ট কলোনেল অলোক ঘোষ জানান, বার্ষিক প্রশিক্ষণ শিবির করার কারণ দু’টি। প্রথমত পড়ুয়ারা কতটা শিখছে তা দেখা এবং দ্বিতীয়ত আগামী দিনে দিল্লিতে সেনাবাহিনীর শিবিরের জন্য শিক্ষার্থীদের প্রাথমিক ভাবে নির্বাচিত করা। অলোকবাবু আরও জানান, শিবিরে বিভিন্ন এলাকার পড়ুয়ারা একত্রিত হয়েছে। তাতে নিজেদের মধ্যে বন্ধুত্ব ও বোঝাপড়া তৈরি হয়। বাইরের পরিবেশের সঙ্গে সকলে মানিয়ে নেওয়া শেখে। দক্ষ ক্যাডেটরা পুলিশ ও সেনাবাহিনীর নিয়োগ পরীক্ষায় কিছুটা সুবিধাও পায়।
এনসিসি আধিকারিকেরা জানান, শারীরিক কসরত ছাড়াও আশপাশের গ্রামগুলিতে সকাল বিকেল ঘুরেছে শিক্ষার্থীরা। সরকারি বিভিন্ন প্রকল্পের সুবিধা বিভিন্ন এলাকায় কী ভাবে পৌঁছনো হয়েছে, তাও দেখে। ১-১০ জুলাই এমনই একটি শিবিরের আয়োজন করা হবে। এই দু’টি শিবির থেকে যোগ্যতার নিরিখে ৪০ জনকে নির্বাচিত করা হবে। তারা খড়গপুরে একটি প্রশিক্ষণ শিবিরে যোগ দেবে। সেখানে ঠিক হবে কত জন দিল্লির শিবিরে সামিল হতে পারবে।
বাড়ি ছেড়ে প্রশিক্ষণ শিবিরে থাকা এবং এত কিছু শেখা অন্য রকম অভিজ্ঞতা— এ কথা বলছেন বর্ধমান বিবেকানন্দ কলেজের ছাত্র রণঞ্জয় সরকার, সিউড়ি বিদ্যাসাগর কলেজের ছাত্র অরূপ মাহাড়া। পুরুলিয়া সৈনিক স্কুলের একাদশ শ্রেণির ছাত্র সৌরভ কুমার সুমনের কথায়, ‘‘খুব ভাল কাটল এই কয়েকটা দিন।’’
রাজনগরের ওই স্কুলের প্রধান শিক্ষক দিলীপ ডোম বলছেন, ‘‘এ ভাবে এত পড়ুয়াদের সঙ্গে শিবিরে থাকা আমাদের স্কুলের ছাত্রদের কাছেও নতুন অভিজ্ঞতা।’’