চলছে আলোচনা। নিজস্ব চিত্র।
জেলার গ্রন্থাগারে শূন্যপদের শতাংশ কবেই ৫১ ছাড়িয়েছে। এক জন কর্মীও নিয়োগ না হওয়ায় ইতিমধ্যেই আটটি গ্রন্থাগার বন্ধ হয়ে পড়ে আছে। আধুনিক পরিকাঠামো গড়ে তোলা দূর এক কর্মীকে একসঙ্গে একাধিক গ্রন্থাগারের দায়িত্বে জুড়ে দেওয়ায় বিস্তর চাপে পড়েছে গোটা ব্যবস্থাটাই। এমন পরিস্থিতির পরিবর্তন না হলে গ্রন্থাগার পরিষেবা ভেঙে পড়ার আশঙ্কা করলেন জেলার ১২৩টি গ্রন্থাগারের কর্মীরা।
জেলা গ্রন্থাগারের উদ্যোগে মঙ্গলবার বোলপুর টাউন লাইব্রেরিতে জনগ্রন্থাগার পরিষেবা এবং সচেতনতার একটি আলোচনাসভা ছিল। সেখানেই জেলা পরিষদের সভাধিপতি বিকাশ রায়চৌধুরীকে কাছে পেয়ে অবিলম্বে শূন্যপদে কর্মী নিয়োগের দাবি তোলেন গ্রন্থাগারের কর্মীরা। পাশাপাশি আধুনিক প্রজন্মকে গ্রন্থাগারমুখী করে তোলার জন্য ধুঁকতে থাকা গ্রন্থাগারগুলিকে অবিলম্বে আধুনিক করে তোলার দাবিও তাঁরা তুলেছেন। এ দিন বিকাশবাবু অবশ্য সংশ্লিষ্ট দফতরের সঙ্গে কথা বলে সমস্যা মেটানোর আশ্বাস দিয়েছেন।
জেলা গ্রন্থাগার সূত্রের খবর, জেলায় ১২৩টি জনগ্রন্থাগার রয়েছে। সেখানে দীর্ঘ দিন ধরে ২৭৬টির মধ্যে ১৪২টি কর্মিপদই শূন্য হয়ে পড়ে রয়েছে। বর্তমানে কর্মরত রয়েছেন মাত্র ১৩৪ জন। অভিযোগ, বারবার শূন্যপদে নিয়োগের দাবি জানিয়েও কোনও কাজ হয়নি। আয়োজকদের পক্ষে বোলপুর টাউন লাইব্রেরির গ্রন্থাগারিক প্রণব দত্ত বলেন, ‘‘এই জেলায় বহু প্রত্যন্ত এলাকায় গ্রন্থাগার রয়েছে। দীর্ঘ দিন কর্মী নিয়োগ না হওয়ায়, বিশেষ করে তারা মুশকিলে পড়েছে। তাই শূন্যপদ পূরণ করে অত্যাধুনিক পরিকাঠামো গড়ে গ্রন্থাগারের পরিষেবার মান বাড়ানোর আর্জি জানিয়েছি আমরা।’’ বর্তমান প্রজন্মের মধ্যে কম্পিউটারের প্রতি ঝোঁক বেশি। তাই গ্রন্থাগারগুলিতে কম্পিউটার এবং ইন্টারনেট সংযোগেরও আর্জি জানানো হয়েছে।
রাজা রামমোহন রায় লাইব্রেরি ফাউন্ডেশনের ফান্ডে আয়োজিত একদিনের ওই আলোচনাসভায় প্রয়োজনীয় পরিকাঠামো গড়ে তোলার পাশাপাশি গ্রন্থাগারগুলিকে কীভাবে আরও আকর্ষণীয় করে তোলা যায়, গ্রন্থাগারের পরিষেবা মানুষের কাছে আরও বেশি করে পৌঁছে দেওয়া যায়— তা নিয়েও এ দিনের সভায় আলোচনা হয়েছে। সভায় বিকাশবাবু ছাড়াও অতিরিক্ত জেলা শাসক (উন্নয়ন) রঞ্জন ঝাঁ, জেলা গ্রন্থাগার আধিকারিক সুমন্ত বন্দ্যোপাধ্যায়, বর্ধমান জেলা গ্রন্থাগার আধিকারিক চন্দন দে খান, বিশ্বভারতীর উপ-গ্রন্থাগারিক নিমাইচাঁদ সাহা, আঞ্চলিক গ্রন্থাগার সদস্য সুব্রত ভট্টাচার্য প্রমুখ যোগ দিয়েছিলেন।