বৈধ কাগজপত্র না থাকায় বিষ্ণুপুর শহরের মূল রাস্তায় টোটো চালানো বন্ধ করে দিয়েছে প্রশাসন। বদলে শুধুমাত্র গলির রাস্তায় টোটো চালানো যাবে বলে জানানো হয়েছে। এর ফলে যাত্রীরা বেশ সমস্যায় পড়েছেন। অন্য দিকে, টোটো চালকদের বক্তব্য, শুধুমাত্র গলির রাস্তায় তেমন যাত্রী না থাকায় সমস্যায় হচ্ছে তাঁদের।
টোটো কেন বন্ধ? বিষ্ণুপুরের আঞ্চলিক পরিবহণ দফতরের এআরটিও মৃণালকান্তি মজুমদার বলেন, ‘‘বিষ্ণুপুরে টোটোগুলির রেজিস্ট্রেশন নেই। ফলে মূল রাস্তায় চলাচলে নিষেধ করা হয়েছে। তার বদলে শহরের গলির রাস্তা তাঁরা ব্যবহার করতে পারেন।’’
বস্তুত মন্দির নগরী বিষ্ণুপুরে শহরের ভিতরে যাতায়াতের অন্যতম প্রধান মাধ্যম রিকশা। যাত্রী থেকে পর্যটকদের অভিজ্ঞতা কিন্তু রিকশা নিয়ে বিশেষ ভাল নয়। তাঁদের অভিযোগ, রিকশার ভাড়ার রেট নির্দিষ্ট করে দেওয়া নেই। ফলে একই রাস্তা বিভিন্ন রিকশাচালক যাত্রী বুঝে বিভিন্ন ভাড়া হাঁকেন। সে দিক দিয়ে অনেক ক্ষেত্রেই টোটোর ভাড়া তাঁদের কাছে বাড়াবাড়ি রকমের বেশি মনে হয় না। ফলে টোটোর উপর নির্ভরশীলতা বিষ্ণুপুরবাসীর অনেকখানি বেড়ে গিয়েছিল। কিন্তু শনিবার সকাল থেকেই শহরের রাস্তায় টোটো উধাও হয়ে যায়। এর ফলে যাত্রীরা বেকায়দায় পড়েছেন। যেমন হুগলি থেকে বিষ্ণুপুর বেড়াতে এসেছিলেন শুভঙ্কর দাস। বিষ্ণুপুর স্টেশন থেকে লালগড়ের কাছে এক অথিতি নিবাসে যাবেন বলে রিকশা ভাড়া করতে গিয়ে তিনি চমকে যান। তাঁর অভিযোগ, ‘‘বিষ্ণুপুর স্টেশনে রিকশার কোনও রেট চার্ট না থাকায় যে যেমন পারে ভাড়া হাঁকছে!’’
সমস্যা দূর করার দাবি নিয়ে বিষ্ণুপুরের বিধায়ক ও পুরপ্রধানের দ্বারস্থ হয়েছে টোটো ড্রাইভার অ্যান্ড ওনার্স অ্যাসোসিয়েশন। সংগঠনের সম্পাদক শঙ্কর চট্টোপাধ্যায় রবিবার বলেন, ‘‘শনিবার প্রশাসনিক এই সিদ্ধান্তের কথা আমরা জানতে পারি। তারপর থেকেই ভীষণ চিন্তায় পড়েছি আমরা। ব্যাঙ্ক থেকে ঋণ নিয়ে টোটো কিনে কাজে নেমেছিলাম। এখন সংসার চলবে কী করে?’’ তিনি জানান, শহরে এখন প্রায় ৭০ জন টোটো চালাচ্ছেন। বিষ্ণুপুরের বিধায়ক তুষারকান্তি ভট্টাচার্য ও পুরপ্রধান শ্যামাপ্রসাদ মুখোপাধ্যায়ের আশ্বাস, ‘‘এতোগুলি পরিবার সমস্যায় পড়ুক আমরা চাই না। পরিবহণ মন্ত্রীর সঙ্গে এ নিয়ে কথা বলা হবে।’’