নানা কাজে লাগছে ছাই

ছাই দিয়ে ইট তৈরি করে একশো দিনের প্রকল্পে অনেক পরিবারের স্থায়ী রোজগারের ব্যবস্থা করে দিয়েছে বাঁকুড়া জেলা প্রশাসন। তবে ইট ছাড়াও আরও অনেক কিছুই তৈরি করা যেতে পারে ছাই দিয়ে।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

গঙ্গাজলঘাটি শেষ আপডেট: ০৮ এপ্রিল ২০১৭ ০১:৪৯
Share:

সম্ভাবনা: ছাই দিয়ে তৈরি সামগ্রীর প্রদর্শনী। নিজস্ব চিত্র

ছাই দিয়ে ইট তৈরি করে একশো দিনের প্রকল্পে অনেক পরিবারের স্থায়ী রোজগারের ব্যবস্থা করে দিয়েছে বাঁকুড়া জেলা প্রশাসন। তবে ইট ছাড়াও আরও অনেক কিছুই তৈরি করা যেতে পারে ছাই দিয়ে। তাপবিদ্যুৎ কেন্দ্রের ছাই কী ভাবে কাজে লাগানো যেতে পারে সেই সংক্রান্ত একটি আলোচনা সভায় উঠে এল এমন নানা প্রসঙ্গ। শুক্রবার মেজিয়া তাপবিদ্যুৎ কেন্দ্রের (এমটিপিএস) অডিটোরিয়ামে ওই আলোচনাসভায় উপস্থিত ছিলেন রাজ্যের দূষণ নিয়ন্ত্রণ পর্ষদের চেয়ারম্যান কল্যাণ রুদ্র, বাঁকুড়া জেলা পরিষদের সভাধিপতি অরূপ চক্রবর্তী, এমটিপিএসের চিফ ইঞ্জিনিয়ার মৃণাল বিশ্বাস প্রমুখ।

Advertisement

এমটিপিএসের ছাই ফেলার জন্য ৭০০ একর জমিতে দু’টি ছাই-পুকুর রয়েছে। তবে ওই ছাই-পুকুরগুলি বর্তমানে ভরাট হয়ে গিয়েছে। প্রায়ই পুকুর থেকে ছাই উপচে পড়ে আশপাশের চাষ জমি নষ্ট করছে বলে অভিযোগ। সেই ঘটনা রুখতে কয়েক বছর আগে থেকেই পরিত্যক্ত ছাই কী ভাবে কাজে লাগানো যেতে পারে তা নিয়ে ভাবনা চিন্তা শুরু করেন বিশেষজ্ঞেরা।

বাঁকুড়া জেলা প্রশাসন একশো দিনের কাজ প্রকল্পে কয়েক বছর আগেই এমটিপিএসের পরিত্যক্ত ছাই থেকে ইট তৈরির কারখানা শুরু করে। এই মুহূর্তে বাঁকুড়া ১ ব্লকে দু’টি ও গঙ্গাজলঘাটি ব্লকে একটি ছাই-ইট তৈরির কারখানা গড়েছে প্রশাসন। কয়েকশো পরিবার স্থায়ী রোজগার পাচ্ছে ওই কারখানা থেকে।

Advertisement

ছাই-ইঁট কাজে লাগানো হচ্ছে সরকারি গৃহ ও সড়ক নির্মাণ প্রকল্পেও। জেলায় বহু বেসরকারি সংস্থাও ছাই-ইট তৈরির কারখানা গড়ে লাভবান হচ্ছে। জেলা ও বাইরের বাজারেও চাহিদা বেড়েছে এমটিপিএসের পরিত্যক্ত ছাইয়ের। চিফ ইঞ্জিনিয়ার মৃণালবাবু এ দিন বলেন, “এমটিপিএসের ছাই পুকুর থেকে বহু বেসরকারি সংস্থা ছাই তুলে নিয়ে গিয়ে কাজে লাগাচ্ছে। এ ভাবে দৈনিক কমবেশি আড়াই হাজার টন ছাই বাইরে যাচ্ছে।” কেবল ইট নয়, সিমেন্ট, অ্যাসবেসটস, টাইল, পাকা নালা তৈরির চ্যানেল, টালি-সহ বিভিন্ন জিনিস গড়া হচ্ছে ছাই দিয়ে।

বাঁকুড়া জেলা সভাধিপতি অরূপবাবু এ দিন জেলার স্বনির্ভর গোষ্ঠীগুলিকে দিয়ে প্রশাসনিক ভাবে ছাই থেকে শিল্প গড়ার বিষয়ে আলোচনা করেন। এ বিষয়ে এমটিপিএস কর্তৃপক্ষের সাহায্যও চান তিনি। অরূপবাবু বলেন, “এই সব জিনিসপত্রের বাজারে চাহিদা রয়েছে। ছাই দিয়ে গড়লে দরও সস্তা হবে। জেলার ২৩টি ব্লকেই বিভিন্ন স্বনির্ভর গোষ্ঠীগুলিকে নিয়ে আমরা অ্যাসবেসটস, টাইল, চ্যানেল গড়ার প্রকল্প শুরু করার কথা ভাবছি।” জেলার সমস্ত পঞ্চায়েত প্রধানদের সঙ্গেও এই প্রকল্প নিয়ে শীঘ্রই আলোচনা করবেন বলে জানিয়েছেন সভাধিপতি।

মৃণালবাবু বলেন, “সভাধিপতি ব্লকে ব্লকে প্রকল্প গড়ার জন্য আমাদের কাছে সাহায্য চেয়েছেন। আমরা যাবতীয় সাহায্য করতে প্রস্তুত।” বাঁকুড়া জেলাশাসক মৌমিতা গোদারা বসু বলেন, “সরকারি প্রকল্পে ছাই ইট কাজে লাগানো হচ্ছে। সাধারণ মানুষও কিনছেন। ছাই থেকে অনেক শিল্পই হতে পারে।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন