বিতর্ক উস্কে পাঁচে ‘নোটা’

ইভিএমে সবার শেষ বোতামটি থাকে ‘নোটা’-র জন্য। মানে ‘নান অফ দ্য অ্যাবাভ’।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

রঘুনাথপুর ও বাঁকুড়া শেষ আপডেট: ০১ জুন ২০১৯ ০৫:২৭
Share:

ভোটারদের পছন্দের তালিকায় পাঁচ নম্বরে উঠে এল ‘নোটা’।

Advertisement

ইভিএমে সবার শেষ বোতামটি থাকে ‘নোটা’-র জন্য। মানে ‘নান অফ দ্য অ্যাবাভ’। সাদা কথায় যাকে বলে, কোনও প্রার্থীকেই পছন্দ নয়। ফল বেরোতে দেখা গিয়েছে, জনাদেশের তালিকায় অনেক প্রার্থীকে পিছনে ফেলে দিয়েছে নোটা। বাঁকুড়া এবং পুরুলিয়া জেলায় মোট তিনটি লোকসভা কেন্দ্র। পুরুলিয়া এবং বাঁকুড়ায় পনেরো জন করে প্রার্থী ছিলেন। নোটার থেকেও কম ভোট পেয়েছেন ১১ জন। দু’জায়গাতেই। বিষ্ণুপুরে মোট ৯ জন প্রার্থী ছিলেন। নোটার থেকেও পিছিয়ে চার জন।

নোটা মানে কাউকে পছন্দ নয়। মানে, যাঁরা এগিয়ে রয়েছেন, তাঁদেরও নয়। কত জন মনে করছেন এমনটা? হিসেব বলছে হরেদরে শতকরা ১ জন ভোটার। নির্বাচন কমিশন ভোটে ‘নোটা’ চালু করার পরে অনেক ভোটারই তাঁদের অপছন্দ নথিভুক্ত করছেন। সেই দিক থেকে, গত বারের তুলনায় এই লোকসভায় নোটার ‘ভোটপ্রাপ্তি’ কিছুটা কমেছে বটে। ২০১৪ সালের লোকসভা ভোটে পুরুলিয়ায় নোটায় ভোট পড়েছিল ১.৩৮ শতাংশ। এ বার কমে হয়েছে ০.৮৪ শতাংশের মতো। গত বার বাঁকুড়ায় ছিল ১.৯১ শতাংশ। বিষ্ণুপুরে ১.৬৫ শতাংশ। দু’টি কেন্দ্রেই এ বার নোটায় ভোট পড়েছে ১.০৩ শতাংশ করে।

Advertisement

নোটার থেকে কম ভোট পাওয়া প্রার্থীরা কে কী বলছেন? পুরুলিয়ার বিসএসপি প্রার্থী আনন্দী টুডু বলছেন, ‘‘বিভিন্ন সমস্যা নিয়ে প্রচার করেছিলাম। যে সংখ্যক ভোটার আমাদের সমর্থন জানিয়েছেন, তাতেই আমরা সন্তুষ্ট।” পুরুলিয়া কেন্দ্রের এসইউসি প্রার্থী রঙ্গলাল কুমারের মতো কেউ কেউ দাবি করছেন, নোটায় এত ভোট পড়ার ঘটনার জবাবদিহি আদতে রাজ্যে ও কেন্দ্রের ক্ষমতাসীন দলগুলির করা উচিত। রঙ্গলালবাবুর ব্যাখ্যা, ‘‘নোটা আদতে সংসদীয় রাজনীতির প্রতি বীতশ্রদ্ধ হয়ে পড়া ভোটারদের ভোট। ক্ষমতাসীন রাজনৈতিক দলগুলির কাজকর্মে বীতশ্রদ্ধ হয়েই ভোটারদের একাংশ নোটায় ভোট দিয়েছেন।”

কেন রাজনৈতিক দলগুলি নোটার বোতামে চাপ দিয়ে আসা ভোটারদের মন পাচ্ছে না, তা নিয়ে চর্চা চলছে। বিজেপির বাঁকুড়া সাংগঠনিক জেলা সভাপতি বিবেকানন্দ পাত্রের মতে, ‘‘অনেকে সাত-পাঁচ না ভেবেই নোটায় ভোট দেন। অনেকে নিজের দলের প্রার্থীকে মেনে নিতে না পারায় অন্য কোনও দলকে ভোট না দিয়ে নোটায় দেন।’’ বিষ্ণুপুরের তৃণমূল সভাপতি শ্যামল সাঁতরা বলছেন, ‘‘প্রচারে ভোটারদের আমরা বলি ঠিক প্রার্থীকে ভোট দিতে। নোটা চালু হওয়ায় সেখানে কেউ ভোট দিতেই পারেন। তবে নোটায় কেন এত ভোট পড়ছে, তা নিয়েও পর্যালোচনা দরকার।’’

সিপিএমের বাঁকুড়া জেলা সম্পাদক অজিত পতির ব্যাখ্যা, ‘‘বর্তমান রাজনীতিতে শুধুই কাদা ছোড়াছুড়ি আর ধর্মীয় মেরুকরণ হচ্ছে। এতে আর্থসামাজিক বিষয়গুলি সে ভাবে জোরদার হতে পারছে না। সেই জন্য অনেকেই বিরক্ত হয়ে নোটায় ভোট দিচ্ছেন।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন