জমি খালি করার নির্দেশ। —নিজস্ব চিত্র।
বঙ্গ বিদ্যালয়েরর জমি থেকে অবৈধ নির্মাণ সরিয়ে নেওয়ার জন্য সময়সীমা নির্দিষ্ট করে বিজ্ঞপ্তি জারি করলেন মহকুমাশাসক। বৃহস্পতিবারই ওই নির্দেশিকা জারি করে সাত দিনের মধ্যে স্কুলের জায়গায় তোলা ঘরবাড়ি ও দোকান নির্মাণকারীদেরই ভেঙে ফেলার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। স্কুলের জমিতে গজিয়ে ওঠা অবৈধ নির্মাণ এবং নাকের ডগায় নেশার আসর বসা নিয়ে সম্প্রতি বাঁকুড়া সদর মহকুমা শাসকের দফতরে বাঁকুড়া বঙ্গবিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ এই অভিযোগ জানিয়েছিল। যার প্রেক্ষিতে নড়েচড়ে বসল প্রশাসন।
তবে বাঁকুড়ার অন্যতম প্রাচীন স্কুল বঙ্গ বিদ্যালয়ের জমি বেদখল হওয়ার অভিযোগ অনেক দিনের। স্কুলের সামনের মাঠেও অবাধে চলে আবর্জনা ফেলা, শৌচকর্ম। প্রধান শিক্ষক অনিমেষ চৌধুরীর অভিযোগ, স্কুলের মাঠে জটলা করে থাকে বহিরাগতরা। ছাত্রীরা স্কুলে ঢোকার সময় ইভটিজিং করে বহিরাগতদের অনেকে। স্কুলের মাঠে তো বটেই, কর্তৃপক্ষের নজর এড়িয়ে স্কুলের ভিতরেও নেশার ঠেক বসানো হচ্ছে। আবর্জনার জন্য মাঠটি স্কুল নিজের প্রয়োজনেই ব্যবহার করতে পারে না। অবিলম্বে স্কুলের পরিবেশ রক্ষার জন্য প্রশাসনিক পদক্ষেপের দাবি তুলেছিলেন প্রধান শিক্ষক। তাঁর কথায়, “এই সমস্ত কিছুর জন্য শিক্ষার বাতাবরণ নষ্ট হচ্ছে। ছাত্রছাত্রীরা অসুবিধার মধ্যে পড়ছে। অভিভাবকেরাও আমাদের কাছে নালিশ জানাচ্ছেন।”
স্কুল কর্তৃপক্ষের কাছ থেকে অভিযোগ পাওয়ার পরেই মহকুমাশাসক (বাঁকুড়া সদর) অসীমকুমার বালা পরিদর্শনে যান। সরেজমিন দেখে স্কুল চত্বর দখলমুক্ত করার সিদ্ধান্ত নেন তিনি। মহকুমাশাসক বলেন, “অভিযোগের সত্যতা রয়েছে। স্কুলের স্বার্থে ওই এলাকায় বেআইনি দখলদারি হটানোর সিদ্ধান্ত নিয়েছি।” বঙ্গ বিদ্যালয়ে ঢোকার মুখেই বেশ কিছু দোকান ও গুমটি রয়েছে। দীর্ঘদিন ধরেই ওই এলাকায় ব্যবসা করে রুজিরুটি উপার্জন করেন অনেকে। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক তাঁদেরই এক জন বলেন, ‘‘বিকল্প কোনও আয়ের রাস্তা আমাদের নেই। অবৈধ নির্মাণ ভাঙা হলে আমাদের পুনর্বাসনের দিকটাও প্রশাসনের ভাবা দরকার।”
প্রশাসনের তরফে এই ব্যাপারে এখনও কোনও আশ্বাস পাওয়া যায়নি। তবে ব্যবসায়ীদের দাবি খতিয়ে দেখার আশ্বাস দিয়েছেন জেলা সভাধিপতি অরূপ চক্রবর্তী। মহকুমাশাসক জানান, বৃহস্পতিবারের পরেই স্কুল চত্বরের অবৈধ নির্মাণ ভাঙতে অভিযানে নামবে প্রশাসন।