অভিযুক্ত মানস। নিজস্ব চিত্র।
নিয়ম মানতে বলাই যেন অপরাধ। বিনা হেলমেটে মোটরবাইক চালানো কেন— সেই প্রশ্ন করায় এক এনভিএফ কর্মীকে মারধরের অভিযোগ উঠল এক তৃণমূল কর্মীর বিরুদ্ধে। মানস ঘোষ নামে ওই কর্মীকে ইতিমধ্যেই গ্রেফতার করেছে পুলিশ। শনিবার সিউড়ির সিজেএম আদালতে হাজির করানো হলে ১৪ দিনের জেল হাজতের নির্দেশ হয়।
পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে, বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় শহরের বেণীমাধব মোড়ে ওসি ট্রাফিক প্রশান্ত শিকদারের নেতৃত্বে ট্রাফিক নিয়ন্ত্রণের দায়িত্বে সামলাচ্ছিলেন এনভিএফ কর্মী মহম্মদ ইসমাইল। বিনা হেলমেটে মোটরবাইক চালিয়ে সিউড়ির লম্বোদরপুর ফেরার পথে ওই তৃণমূল কর্মীর পথ আটকান পুলিশ কর্মীরা। পুলিশের দাবি, এতেই চটে গিয়ে এনভিএফ কর্মীকে চড়- থাপ্পড়, লাথি মেরে নিগ্রহ করেন মানস। ঘটনার পরপরই ড্রাইভিং লাইসেন্স দেখে অভিযুক্তের পরিচয় জেনে সিউড়ি থানায় লিখিত অভিযোগ করেন ঘটনাস্থলে থাকা ওসি ট্রাফিক প্রশান্তবাবু। শুক্রবার রাতে মানসকে গ্রেফতার করে পুলিশ। শনিবার অভিযুক্তকে আদালতে তোলা হয়। এপিপি কেশব দেওয়াসী জানান, ভারপ্রাপ্ত মুখ্য বিচার-বিভাগীয় ম্যাজিষ্ট্রেট অলিভিয়া রায় ধৃতকে ১৯ তারিখ ফের আদালতে হাজির করানোর নির্দেশ দিয়েছেন।
অভিযুক্ত তৃণমূল কর্মীর জন্য শনিবার আদালতে চত্বরে উপস্থিত ছিলেন সিউড়ি ১-এর তৃণমূল ব্লক সভাপতি স্বর্ণময় সিংহ। মানসের পাশে থাকতেই কি আদালতে আসা? স্বর্ণময়বাবুর জবাব, ‘‘পাশে থাকার প্রশ্নই নেই। আইন সকলের জন্যই সমান। আদালতে অন্য কাজ ছিল।’’
পথচলার নিয়ম শেখাতে গিয়ে ট্রাফিক পুলিশের দায়িত্বে থাকা এনভিএফ ও এএসআই পদমর্যাদার কর্মীদের আক্রান্ত হওয়ার ঘটনা আগেও একাধিকবার ঘটেছে। ২০১৫ সালের জানুয়ারি ও ডিসেম্বরে সিউড়িতেই আক্রান্ত হয়েছিলেন দু’জন এনভিএফ কর্মী। হেলমেটহীন দুই মোটরবাইক আরোহীকে থামিয়ে কাগজ দেখতে চাওয়ায় সিউড়ি প্রশাসনিক ভবনের সামনেই তুষার মণ্ডল নামে এক এনভিএফ কর্মীকে মারধর করে মোটরবাইক আরোহী যুবকেরা। শহরের বাসস্ট্যান্ডে যান নিয়ন্ত্রণের দায়িত্ব সামলাতে গিয়ে টোটো চালকের হাতে আক্রান্ত হয়েছিলেন শেখ রৌশন নামে আর এক এনভিএফ কর্মী। প্রতিটি ঘটনাতেই অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে অভিযোগ দায়ের হয়। গ্রেফতারও করা হয়।