বাঁকুড়ার সতীঘাটে এখানেই তৃণমূলের সভা হওয়ার কথা। —নিজস্ব চিত্র।
নদীর চরে তৃণমূল নেত্রী তথা মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সভা আয়োজনের ভাবনাকে কেন্দ্র করে ফের বিতর্ক বাধল বাঁকুড়ায়। সভাস্থল বদলের দাবি তুলে সোমবার বাঁকুড়ার জেলাশাসকের দফতরে স্মারকলিপি জমা দিয়েছে ‘পশ্চিমবঙ্গ বিজ্ঞান মঞ্চ’। সংগঠনের বাঁকুড়া জেলা সম্পাদক জয়দেব চন্দ্রের দাবি, ‘‘বছর দু’য়েক আগে, গন্ধেশ্বরীর চরে মুখ্যমন্ত্রী সভা করেছিলেন। আমরা আপত্তি তুলেছিলাম। সে বার সভা বন্ধ না করা হলেও, পরবর্তীতে নদীর চরে আর সভা করা হবে না বলে প্রশাসন আমাদের আশ্বাস দিয়েছিল। কিন্তু ফের দেখছি, একই জায়গায় সভার আয়োজন করা হচ্ছে। নদীর পরিবেশের স্বার্থে আমরা এর বিরোধিতা করছি।’’ তৃণমূলের অবশ্য দাবি, ব্যক্তিগত জমিতে সভার আয়োজন করা হচ্ছে।
১ জুন বাঁকুড়ায় দলের কর্মিসভা করার কথা তৃণমূল নেত্রীর। সতীঘাট বাইপাসের গন্ধেশ্বরীর চরে ওই সভার আয়োজন শুরু হয়েছে। তা নিয়েই আপত্তি তুলেছে বিজ্ঞান মঞ্চ। বছর দু’য়েক আগে, বাঁকুড়ার লোকপুর-রাজগ্রাম এলাকায় দ্বারকেশ্বরের চরে একটি ধর্মীয় সংগঠন সমাবেশের আয়োজন করে। তার প্রতিবাদে, বাঁকুড়ার ১৮টি পরিবেশপ্রেমী সংগঠন জাতীয় পরিবেশ আদালতের দ্বারস্থ হয়। পরিবেশ আদালতের নির্দেশে, বিভিন্ন বিধি-নিষেধ আরোপ করা হয়েছিল ওই সমাবেশে। তবে ওই ঘটনার পরে মুখ্যমন্ত্রী গন্ধেশ্বরীর চরে দলীয় সভা করেন। তার প্রতিবাদে প্রশাসনের দ্বারস্থ হয় পরিবেশপ্রেমী সংগঠনগুলি। জয়দেবের দাবি, রাজ্যের সেচ ও জলপথ দফতরের তরফে নদীবান্ধব প্রকল্প রূপায়ণ ও আগামী দিনে নদীর চরে সভা না করার আশ্বাস দেওয়া হয়েছিল। তার পরেও প্রশাসন কেন ফের এই সভার অনুমতি দিচ্ছে, সে নিয়েই প্রশ্ন তুলেছেন তাঁরা।
বিষয়টি নিয়ে অবশ্য মুখ খুলতে চাননি প্রশাসনের কর্তারা। জেলা প্রশাসনের এক কর্তা শুধু বলেন, “ওই সংগঠনের দাবি খতিয়ে দেখা হবে।’’ তৃণমূলের বাঁকুড়া সাংগঠিক জেলা চেয়ারম্যান শ্যামল সাঁতরার দাবি, “নদীর জমিতে সভার আয়োজন করা হচ্ছে না। এটি একেবারেই ভুল ধারণা। নদীর চর লাগোয়া একটি ব্যক্তিগত মালিকানাধীন জমিতে ওই সভা হচ্ছে। সেখানে খেলার মাঠও রয়েছে। মুখ্যমন্ত্রীর সভার প্যান্ডেল থেকে যাবতীয় আয়োজন ওই ব্যক্তিগত জমিতেই হচ্ছে।’’ তবে সভায় আসা জনতার একাংশ যে নদীর চরে দাঁড়াতে পারেন, সে কথা মানছেন শ্যামলবাবু। তাঁর আশ্বাস, “সভা শেষ হওয়ার পরেই, দ্রুত সভাস্থল ও লাগোয়া এলাকার আবর্জনা সাফ করে দেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছি আমরা।’’