ভোটের কথায় বচসা, ঝালদায় মারধর প্রৌঢ়কে

এক চাষিকে পিটিয়ে হাত ভেঙে দেওয়ার অভিযোগ উঠল ঝালদায়। শঙ্কর গরাঁই নামে আহত ব্যক্তিকে পুরুলিয়া সদর হাসপাতালে ভর্তি করানো হয়েছে। তাঁর মাথাতেও চোট রয়েছে। জেলা কংগ্রেস সভাপতি তথা বাঘমুণ্ডির প্রার্থী নেপাল মাহাতো এই ঘটনায় তৃণমূলের দিকে অভিযোগের আঙুল তুলেছেন। অভিযোগ অস্বীকার করেছে তৃণমূল।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

ঝালদা শেষ আপডেট: ২৬ এপ্রিল ২০১৬ ০১:৫২
Share:

হাসপাতালে শঙ্কর গরাই।— নিজস্ব চিত্র

এক চাষিকে পিটিয়ে হাত ভেঙে দেওয়ার অভিযোগ উঠল ঝালদায়। শঙ্কর গরাঁই নামে আহত ব্যক্তিকে পুরুলিয়া সদর হাসপাতালে ভর্তি করানো হয়েছে। তাঁর মাথাতেও চোট রয়েছে। জেলা কংগ্রেস সভাপতি তথা বাঘমুণ্ডির প্রার্থী নেপাল মাহাতো এই ঘটনায় তৃণমূলের দিকে অভিযোগের আঙুল তুলেছেন। অভিযোগ অস্বীকার করেছে তৃণমূল।

Advertisement

ঘটনাটি শুক্রবার রাতের। স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, ঝালদা থানার সারজুমাতু গ্রামে মেলা বসেছিল। রাত এগারোটা নাগাদ মেলায় ছৌনাচ দেখতে যাচ্ছিলেন ইচাগ গ্রামের বাসিন্দা শঙ্করবাবু। তিনি পেশায় প্রান্তিক চাষি। তাঁর ছেলে মানিকচন্দ্র গরাঁই জানান, মেলার অদূরে কয়েক জন শঙ্করবাবুকে ডাকেন। স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, ভোট পেরিয়ে গেলেও এই কেন্দ্রে কে জিতবেন, তৃণমূলের সমীর মাহাতো নাকি কংগ্রেসের নেপাল মাহাতো, এই আলোচনা চলছে নানা আড্ডায়। মেলাতেও একটি জটলায় এমনই আলোচনা চলছিল। মানিকের অভিযোগ, ‘‘বাবা তেমনই একটি আলোচনায় বলেছিল, নেপালবাবু জিতবেন। সঙ্গে সঙ্গে বাবাকে ঘিরে ধরে বেধড়ক মারধর শুরু করে জনা চারেক তৃণমূল সমর্থক। তার পর মরে গিয়েছে ভেবে ফেলে রেখে চলে যায়.। রাতেই গ্রামের লোকজনের কাছ থেকে খবর পেয়ে গিয়ে দেখি, বাবা রক্তাক্ত অবস্থায় পড়ে রয়েছে। সঙ্গে সঙ্গে আমরা তাঁকে প্রথমে ঝালদা নিয়ে যাই। সেখান থেকে পুরুলিয়া।’’

সোমবার হাসপাতালের বেডে শুয়ে শঙ্করবাবু বলেন, ‘‘ওই ছেলেগুলো আমাকে দাদু বলে ডাকে। কয়েক জন তৃণমূলের পরিচিত কর্মী। ভোট নিয়ে কথার মাঝে আমি শুধু বলেছিলাম, নেপাল মাহাতো জিতবে। দশটা ভোটে হলেও জিতবে। আমার অপরাধ ছিল, নেপাল মাহাতো জিন্দাবাদ বলেছিলাম। সেই রাগেই আমাকে বাঁশ-লাঠি দিয়ে মারা হল। কত কাকুতিমনিতি করলাম। কিন্তু ওরা কোন কথাই শুনতে চায়নি।’’ ইচাগ গ্রামেরই বাসিন্দা নেপালবাবুর বক্তব্য, ‘‘কত দিন হল ভোট হয়ে গিয়েছে। এত দিন পরে কাউকে যদি ‘নেপাল মাহাতো জিন্দাবাদ’ বলার জন্য এ ভাবে বেধড়ক মার খেতে হয়, তা হলে বুঝতে হবে এ কোন রাজত্বে বাস করছি আমরা! মাথায় মারা হয়েছে, মেরে হাত ভেঙে দেওয়া হয়েছে। প্রশাসন বলে কি কিছুই নেই?’’ তাঁর দাবি, অভিযুক্তেরা সক্রিয় তৃণমূল কর্মী। পুলিশের কাছে অভিযোগ দায়ের করা হয়েছে চার জনের নামে। তাঁর কথায়, ‘‘দেখি পুলিশ কী ব্যবস্থা নেয়। না হলে আমরা পথে নামতে বাধ্য হব।’’

Advertisement

তৃণমূলের ঝালদা ১ ব্লকের সভাপতি দীনদয়াল মাহাতো অবশ্য জানান, এ রকম কোনও ঘটনার খবর তাঁদের কাছে নেই। ব্লকের কাযর্করী সভাপতি অলোক চট্টোপাধ্যায় ও প্রার্থী সমীর মাহাতো আবার বলেন, ‘‘এই ঘটনার সঙ্গে রাজনৈতিক যোগ নেই। মিথ্যা অভিযোগ তোলা হচ্ছে।’’ জেলা পুলিশ সুপার রূপেশ কুমার বলেন, অভিযোগের ভিত্তিতে মামলা রুজু হয়েছে। পুলিশ ঘটনার তদন্ত করছে।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন