ফাইল চিত্র।
তারাপীঠ থানার নিজস্ব ভবন তৈরির জন্য জমি খুঁজতে সময় লাগছে কেন, সেই প্রশ্নে ক্ষোভ জানালেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। বুধবার বোলপুরের প্রশাসনিক বৈঠকে মুখ্যমন্ত্রী বলেন, ‘‘জমি খুঁজতে এত সময় নেওয়ার দরকার নেই। জেলাশাসককে বললেই ল্যান্ড-ব্যাঙ্ক থেকে জমি পাওয়া যাবে।’’
এলাকায় চুরি-ছিনতাইয়ের বাড়বাড়ন্ত ঠেকাতে তারাপীঠকে ফাঁড়ি থেকে থানায় উন্নীত করার দাবি ছিল দীর্ঘ দিনের। সেই মতো ২০১৫ সালের ৩০ অক্টোবর মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বাঁকুড়ার খাতড়ার প্রশাসনিক বৈঠকে তারাপীঠ ফাঁড়িকে থানায় উন্নীত করার কথা ঘোষণা করেন। তার পরে এত দিনেও তারাপীঠ থানার সেই ভবন নির্মাণ হয়নি। সেই সূত্রেই মুখ্যমন্ত্রীর প্রশ্নের উত্তরে জেলার পুলিশ সুপার নীলকান্তম সুধীর কুমার বলেন, ‘‘তারাপীঠ বাসস্ট্যান্ড এলাকায় একটা জায়গা দেখা হয়েছিল। সেখানে একটা বাধা আসে।’’ কীসের বাধা তা জেনে দ্রুত সিদ্ধান্ত কার্যকর করার নির্দেশ দেন মুখ্যমন্ত্রী। প্রশাসনিক বৈঠকে জেলা পুলিশ সুপারকে বোলপুর পুলিশ লাইন এবং হ্যালিপ্যাড তৈরির নির্দেশও দেন।
তারাপীঠ থানার পরিকাঠামোর উন্নতি করার দাবি দীর্ঘ দিনের। থানার উদ্বোধনের সময়ে তখনকার জেলা পুলিশ সুপার মুকেশ কুমার জানিয়েছিলেন, তারাপীঠ থানার নতুন ভবন নির্মাণ বা পুলিশ কর্মীদের থাকার বিষয়টি প্রশাসনের বিবেচনার মধ্যে আছে। তবে তারাপীঠকে থানা হিসেবে রূপান্তর করার জন্য রাজ্য সরকারকে ধন্যবাদ জানিয়েছিলেন সকলেই। কিন্তু, পরিকাঠামো নিয়ে প্রশ্নটা ছিলই।
পুলিশ সূত্রেই জানা গিয়েছে, এখনও থানার রেকর্ড রাখার জন্য মালখানা ঘর তৈরি হয়নি। সঙ্কীর্ণ অফিসে বসে কাজের তেমন পরিবেশও নেই। এক সময় চেয়ার, টেবিল ঠেলে ঠেলে কাজ করতে হত। তারাপীঠের মতো জায়গা, যেখানে দিন-রাত পর্যটকের আনাগোনা লেগে রয়েছে, এমন গুরুত্বপূর্ণ এলাকার থানার এমন হাল নিয়ে প্রশ্ন ছিল অনেক মহলেই। পুলিশ কর্মীরাও একান্তে মানছেন, অভিযোগ জানাতে গেলে ভিতরে একটা বেঞ্চে চার জনের বেশি বসার জায়গা হয় না। এ দিকে আবার রামপুরহাট ২ ব্লকের সাহাপুর এবং বুধিগ্রাম গ্রাম পঞ্চায়েতের ৪৭টি গ্রামকে তারাপীঠ থানায় মধ্যে আনা হয়েছে। ফলে থানার এলাকাও বেড়েছে। কিন্তু, পরিকাঠামো সেই সাবেক। সে দিক থেকে মুখ্যমন্ত্রীর অসন্তোষ স্বাভাবিক বলেই মনে হয়েছে অনেকের।
এখন তারাপীঠ থানায় রয়েছেন চার জন এসআই। তার মধ্যে এক জন মহিলা। পাঁচ জন এএসআই। তার মধ্যে দু’জন মহিলা। আর আছেন ২৬ জন কনস্টেবল। তিন জন মহিলা পুলিশ কর্মী। সকলেরই আশা, এ বার কাজের কাজ কিছু একটা হবেই।