কাজ শুরুর প্রথম দিনে বিষ্ণুপুরে হয়রান যাত্রীরা

বলা হয়েছিল, এক বছরের মধ্যে সংস্কার হয়ে যাবে। আদপে কাজ শুরু হতেই কাবার তিন ভাগের এক ভাগ সময়। আর শুক্রবার, কাজ শুরুর প্রথম দিনেই তুর্কি আশ্রমের মাঠে স্থানান্তরিত বাসস্ট্যান্ডে ভোগান্তির একসা হল যাত্রীদের।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

বিষ্ণুপুর শেষ আপডেট: ০৭ অক্টোবর ২০১৭ ০৬:৩০
Share:

অপেক্ষা: তুর্কি আশ্রমের মাঠে অস্থায়ী বাসস্ট্যান্ডে। নিজস্ব চিত্র

জুনের প্রথম দিন বিষ্ণুপুর বাসস্ট্যান্ড সংস্কার-কাজের উদ্বোধন করেছিলেন পরিবহণ মন্ত্রী শুভেন্দু অধিকারী। বলা হয়েছিল, এক বছরের মধ্যে সংস্কার হয়ে যাবে। আদপে কাজ শুরু হতেই কাবার তিন ভাগের এক ভাগ সময়। আর শুক্রবার, কাজ শুরুর প্রথম দিনেই তুর্কি আশ্রমের মাঠে স্থানান্তরিত বাসস্ট্যান্ডে ভোগান্তির একসা হল যাত্রীদের।

Advertisement

বিষ্ণুপরের রসিকগঞ্জে ২.৭৮ একর জমিতে প্রথম পর্যায়ের ৭.৩৫ কোটির বরাদ্দ নিয়ে শুরু হয়েছে বাসস্ট্যান্ড সংস্কার। কাজ শুরু হবে বলে পুজোর আগেই শহর জুড়ে নোটিস দিয়েছিলেন মহকুমাশাসক। জানানো হয়েছিল, ৬ তারিখ থেকে রসিকগঞ্জ বাসস্ট্যান্ডে কোনও বাস ঢুকতে পারবে না। এই কাজের জন্য শহরের উত্তরে ১৮ নম্বার ওয়ার্ডে তুর্কি আশ্রমের মাঠে অস্থায়ী ভাবে বাসস্ট্যান্ড করা হয়েছে।

ঘোষণা মতোই এ দিন সকাল থেকেই প্রশাসন কোনও বাস রসিকগঞ্জে ঢুকতে দেয়নি। হুগলি, জয়রামবাটি, কোতুলপুর, জয়পুর, সোনামুখী, দুর্গাপুর, বর্ধমান প্রভৃতি জায়গা থেকে আসা সমস্ত বাস সরাসরি চলে গিয়েছে তুর্কির মাঠে। মেদিনীপুর এবং খড়্গপুর থেকে আসা বাসগুলি জাতীয় সড়ক ৬০ ছেড়ে লাইট হাউস মোড় হয়ে গিয়েছে সেখানে। আর পুরো ব্যাপারটাই হয়েছে লাগামছাড়া ভাবে। এ দিন বিষ্ণুপুরের ঝাপড় মোড়ে দেখাগেল রাস্তা জুড়ে শুধু মোটরবাইক, টোট, বাস, ছোট গাড়ি। নড়চড় প্রায় নেই। ট্রাফিক নিয়ন্ত্রণের দায়িত্বে থাকা লোকজন যানজটের মধ্যে কার্যত অসহায় হয়ে দাঁড়িয়ে রয়েছেন।

Advertisement

অভিযোগ উঠেছে অস্থায়ী বাসস্ট্যান্ডে ন্যূনতম পরিকাঠামো নেই বলেও। তুর্কি আশ্রমের মাঠে বাসের জন্য অপেক্ষা করছিলেন গড়বেতার দীপক দে, কোতুলপুরের সুমনা সাহারা। তাঁদের প্রশ্ন, ‘‘শহর জুড়ে মহাকুমা প্রসাশন এতো নোটিস টাঙাতে পারল, আর বাসস্ট্যান্ডটাকে কাজ চালানোর মতো করতে পারল না?’’ যাত্রীদের অভিযোগ, অস্থায়ী বাসস্ট্যান্ডে না আছে একটা ছাউনি, না আছে আলো, না শৌচালয়। খাবার জলেরও কোনও বন্দোবস্ত নেই। বিষ্ণুপুর পৌরসভার পৌর প্রধান শ্যাম মুখোপাধ্যায় অবশ্য জানিয়েছেন, পাইপ এসে গিয়েছে। খোঁড়াখুঁড়ি চলছে। খুব তাড়াতাড়ি দু’টি সাব মার্সিবল পাম্প বসিয়ে পানীয় জলের কল চালু করা হবে। অস্থায়ী বাসস্ট্যান্ডে ৬০ ফুটের একটি যাত্রী প্রতীক্ষালয়ও তৈরি করা হবে বলে আশ্বাস দিয়েছেন তিনি। শ্যামবাবু বলেন, ‘‘আসলে ৬ তারিখের নোটিশটা যে ছ’তারিখেই মানতে হবে সেটা আমরা বুঝতে পারিনি। ভেবেছিলাম আরও কয়েকটা দিন হাতে সময় পাব। তবে যুদ্ধকালীন পরিস্থিতিতে কাজ শুরু করা হয়ছে। দু’দিনের মধ্যেই সব রকমের যাত্রী স্বাচ্ছন্দ্যের বন্দোবস্ত করে দেব।’’

যানজট? বিষ্ণুপুর থানার আইসি আস্তিক মুখোপাধ্যায় বলেন, ‘‘প্রথম দিনটা আসলে বুঝতেই সময় চলে গিয়েছে। আর যানজট হবে না। রাস্তায় অতিরিক্ত পুলিশ থাকবে।’’ তিনি জানান, অস্থায়ী বাসস্ট্যান্ডে পুলিশ ক্যাম্প থাকবে। রাতেও সেখানে পুলিশি বন্দোবস্ত থাকবে। প্রশাসন সূত্রে জানা গিয়েছে, তুর্কি আশ্রমের মাঠ থেকে বেরনোর সময়ে হুগলি, বর্ধমান, দুর্গাপুর, বাঁকুড়ার বাসগুলি যাতে ঝাপড় মোড় এবং স্টেশন মোড় হয়ে বাইপাস দিয়ে বের করানো যায়, সেই ব্যাপারে আলোচনা চলছে। তবে সে ক্ষেত্রে খরচ এবং যাত্রী পাওয়া নিয়ে আশঙ্কা করছেন কিছু বাসকর্মী। বাঁকুড়া বাস ওনার্স ওয়েলফেয়ার অ্যাসোসিয়েশনের সম্পাদক অঞ্জন মিত্র অবশ্য বলেন, ‘‘প্রথমে একটু অসুবিধা হবেই। পুরসভা চেষ্টা করছে। একটা ঝাঁ-চকচকে আধুনিক বাসস্ট্যান্ডের জন্য আমরা এই পরিস্থিতির সঙ্গে মানিয়ে নেব।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন