ভেঙেছে কাচ। নিজস্ব চিত্র।
রোগীকে কেন পর্যবেক্ষণে রাখা হবে এই প্রশ্ন তুলে হাসপাতালে চড়াও হওয়ার অভিযোগ উঠল রোগীর আত্মীয়দের বিরুদ্ধে। পর্যবেক্ষণ কক্ষের কাচ ভাঙারও অভিযোগ ওঠে।
বুধবার গভীর রাতে সিউড়ি সুপার স্পেশালিটি হাসপাতালের এই ঘটনার পরে সিউড়ি থানায় লিখিত অভিযোগ করেছেন হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ। তবে ঘটনায় এখনও কাউকে গ্রেফতার করা হয়নি। ঘটনার পরে চিকিৎসক ও স্বাস্থ্যকর্মীদের মধ্যে আতঙ্ক ছড়িয়েছে। বৃহস্পতিবার সকালে হাসপাতালে যান সিউড়ি থানার আইসি। কে বা কারা এই ঘটনার সঙ্গে যুক্ত তার তদন্ত শুরু করেছে পুলিশ।
হাসপাতাল সূত্রে জানা গিয়েছে, বুধবার গভীর রাতে সিউড়ি লাভপুর রাস্তায় আমোদপুরের কাছে একটি মোটরবাইক দুর্ঘটনায় পড়ে। ঘটনাস্থলেই মৃত্যু হয় রোহন ঘোষ (১৯) নামে এক যুবকের। গুরুতর আহত হন সিউড়ির ভাট্টাচার্যপাড়ার বাসিন্দা, বছর উনিশের আরেক যুবক। স্থানীয়রা দু’জনকে উদ্ধার করে সিউড়ি সুপার স্পেশালিটি হাসপাতালে ভর্তি করেন। হাসপাতাল সূত্রে জানা গিয়েছে, আহত যুবককে পর্যবেক্ষণ ওয়ার্ডে রেখে চিকিৎসা করা হচ্ছিল। বিশেষজ্ঞ চিকিৎসক এসে তাঁকে দেখার পর প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ করার কথা ছিল। কিন্তু রোগীকে কেন পর্যবেক্ষণে রাখা হয়েছে সেই প্রশ্ন তুলে আহতের আত্মীয়রা চড়াও হন বলে অভিযোগ। চিকিৎসদের পাল্টা দাবি, কেউ গুরুতর আহত অবস্থায় হাসপাতালে এলে তাঁকে পর্যবেক্ষণ ওয়ার্ডে রেখে সাময়িক চিকিৎসার পরই প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়।
চিকিৎসক ও স্বাস্থ্যকর্মীদের অভিযোগ, উত্তেজিত জনতা প্রথমে হাসপাতালের পর্যবেক্ষণ বিভাগের সামনে টেবিল, চেয়ার উল্টে ফেলে দেয়। কর্মরত স্বাস্থ্যকর্মী এবং চিকিৎসকদের হুমকিও দেওয়া হয়। তাছাড়া এমারজেন্সি ঘরের আসবাবপত্র লন্ডভন্ড করে দেওয়া হয়। পর্যবেক্ষণ ওয়ার্ডের জানলার কাচ ভেঙে দেওয়া হয়। হাসপাতালের সুপার শোভন দে বলেন, ‘‘গভীর রাতে রোগীর পরিজনরা হাসপাতালে হামলা চালান। তাঁরা সংখ্যায় প্রায় ৪০ জন ছিলেন। নিরাপত্তারক্ষীরা ওঁদের প্রতিহত করতে পারেননি। ওঁরা হাসপাতালের জিনিস নষ্ট করেছেন এবং হুমকিও দিয়েছেন। ঘটনার কথা লিখিতভাবে থানাকে জানানো হয়েছে।’’
আহত যুবক এখনও সিউড়ি সুপার স্পেশালিটি হাসপাতালে চিকিৎসাধীন। মৃত রোহন ঘোষের দাদা রানা ঘোষ বলেন, ‘‘আমি ভাঙচুরের বিষয়ে কিছু জানি না। আমাদের কাছে ভাইয়ের দুর্ঘটনার খবর আসে। আমরা রাতেই হাসপাতাল গিয়ে মৃতদেহ সনাক্ত করে আসি।’’