রামপুরহাটের ছোড়া মৌজার সেই জমি। —নিজস্ব চিত্র
বছর সাতেক আগে প্রকল্প স্থির হলেও এখনও তা বাস্তবে পরিণত না হওয়ার জন্য ক্ষুব্ধ এলাকাবাসী। এর ফলে প্রকল্পটির বাস্তব রূপদানের জন্য যে সমস্ত চাষিরা তাঁদের জমি দান করেছিলেন সেই সমস্ত চাষিরা এখন জমির ক্ষতিপূরণ দাবি করছেন। প্রশাসনের দাবি, পরিকল্পনা অনুযায়ী কাজ এগোচ্ছে। খুব শীঘ্রই প্রকল্পটি বাস্তবায়িত হবে।
রামপুরহাট ১ ব্লকের ছোড়া মৌজায় প্রাণিসম্পদ দফতরের উদ্যোগে এলাকার স্বনির্ভর গোষ্ঠীর মাধ্যমে ছাগল চাষ এবং হাঁস মুরগি পালনের জন্য বছর সাতেক আগে প্রাণিসম্পদ বিকাশ ও উন্নয়ন দফতর থেকে ৫ একরের বেশি সরকারি খাস জায়গা পাকা পাঁচিল দিয়ে ঘেরা হয়েছিল। পাঁচিল ঘেরা জায়গার মাধ্যমে একটি হাঁস মুরগি পালনের হ্যাচারি এবং ছাগল পালনের জন্য একটি গোটারি ফার্ম গড়ে তোলা ছাড়া পশু পালনের জন্য স্বনির্ভর গোষ্ঠীর প্রশিক্ষণ কেন্দ্র গড়ে তোলার পরিকল্পনা নেওয়া হয়। প্রকল্পটি বাস্তব রূপ পেলে এলাকার অর্থনৈতিক ব্যবস্থা চাঙা হবে এই আশায় স্থানীয় বাসিন্দারাও প্রাণী সম্পদ দফতরকে সাহায্যের হাত বাড়িয়ে দেন। এলাকার চাষিদের একাংশ প্রাণী সম্পদ দফতরের ওই ফার্মে যাওয়ার হাফ কিলোমিটার রাস্তার জন্য স্বেচ্ছায় জমি দানও করেন।
যাঁরা জমি দিয়েছেন তাঁদের দাবি, বাম আমলে প্রকল্পটি বাস্তব রুপ পায়নি। অন্যদিকে নতুন সরকার ক্ষমতায় আসার পর রাজ্যের তৎকালীন প্রাণী সম্পদ দফতরের মন্ত্রী নুরে আলম চৌধূরী রামপুরহাট ১ ব্লকের ছোড়া মৌজায় ছাগল পালন, হাঁস মুরগি পালনের জন্য পশু খামার এবং স্বনির্ভর গোষ্ঠীর প্রশিক্ষণ কেন্দ্র গড়ে তোলার কাজে উৎসাহ দেখান। এলাকায় বিদ্যুৎ সংযোগের জন্য তিনি উদ্যোগও নেন তিনি। কিন্তু এখনও পর্যন্ত এলাকায় বিদ্যুৎ সংযোগের কাজও হয়নি। এলাকায় গিয়ে দেখা গেল ঘেরা পাঁচিলের একাংশ ভেঙে পড়ে গিয়েছে। গেটের একাংশ চুরি গিয়েছে। তৈরি হওয়া দু’টি ঘরের জানালা দরজা ভাঙা অবস্থায় পড়ে আছে। ঘরগুলি নোংরা আবর্জনায় ভর্তি।
প্রাণীসম্পদ দফতরের রামপুরহাট ১ ব্লকের আধিকারিক অসীম কুমার পাল বলেন, ‘‘প্রকল্পটির বাস্তব রূপদানের জন্য দুটি স্বনির্ভর গোষ্ঠীকে ইতিমধ্যে প্রশিক্ষণ দেওয়া হয়েছে। এলাকায় বিদ্যুৎ সংযোগের জন্য বিদ্যুত দফতরের আবেদন জানান হয়েছে। সম্প্রতি দফতরের উর্দ্ধতম আধিকারিকরা এলাকা ঘুরে এসেছেন।’’
জেলা সভাধিপতি বিকাশ রায়চৌধুরী বলেন, তৎকালীন বামসরকার ভুল জায়গায় প্রকল্পটি গ্রহণ করেছিল। তবুও প্রকল্পের বাস্তব রূপদানের জন্য এলাকায় আমি দু’বার গিয়েছি। এলাকায় গিয়ে দেখেছি অনেক সরকারি সম্পত্তি নষ্ট হয়েছে। গ্রাম পঞ্চায়েত থেকে পঞ্চায়েত সমিতি কেউই প্রকল্পের বাস্তব রুপ দানের জন্য দায়িত্ব নিতে চাইছে না।’’