হাসপাতালে মজুত রক্তের পরিমাণ জানাতে হোয়াটসঅ্যাপ গ্রুপ চালু করল বোলপুর মহকুমা হাসপাতাল। শুক্রবার বোলপুর পুরসভার উৎসর্গ মঞ্চে বিষয়টির আনুষ্ঠানিক সূচনা করেন বীরভূম জেলা পরিষদের সভাধিপতি বিকাশ রায়চৌধুরী। মূলত বোলপুর মহকুমা হাসপাতালের সুপার অমিত মজুমদার এবং বোলপুরের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার অম্লানকুসুম ঘোষের উদ্যোগেই এই গ্রুপ তৈরি বলে জানা গিয়েছে। বোলপুর মহকুমায় যে সমস্ত সংস্থা রক্তদান শিবিরের আয়োজন করে, তাদের সামিল করা হবে এই উদ্যোগে।
কেন এই সিদ্ধান্ত?
মহকুমা হাসপাতাল সূত্রে জানা গিয়েছে, রক্ত দেওয়ার ক্ষেত্রে হাসপাতাল চত্বরে একটি দালালচক্র কাজ করছে এমন অভিযোগ এসেছে। যাঁরা বিভিন্ন সময় টাকার বিনিময়ে রোগীর পরিবারকে রক্তের জোগান দিচ্ছেন। সমস্যা তৈরি হয়েছে অন্য জায়গায়। অনেকের দাবি, এ ভাবে রক্ত দেওয়াই কিছু লোকের পেশা হয়ে দাঁড়িয়েছে। এঁদের কেউ কেউ সংক্রামক রোগে ভুগছেন বলেও একটি সূত্রের দাবি। হাসপাতাল সূত্রের খবর, এমন রক্ত রোগীর শরীরে গেলে তাঁরও সংক্রমণের আশঙ্কা থেকে যায়। তাই হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ চাইছে, ব্লাড ব্যাঙ্কেই রক্ত থাকুক। যাতে ‘ইন হাউস ব্লাড কালেকশন’ অর্থাৎ জরুরি পরিস্থিতিতে পরিবারের লোক ছাড়া অচেনা কারোর থেকে রক্ত নিতে না হয়।
বোলপুর মহকুমা হাসপাতালের সুপার অমিত মজুমদার জানান, জানুয়ারি মাসে শিবির থেকে পাওয়া রক্তের পরিমাণ ছিল ২৭৩ ইউনিট। ইন হাউস রক্তের পরিমাণ ছিল ১২৩ ইউনিট। অন্য দিকে, জুলাই মাসে শিবির থেকে পাওয়া রক্তের পরিমাণ বেড়ে ২৭৮ ইউনিট হয়েছে। অনেকটা কমে ইন হাউস রক্তের পরিমাণ হয়েছে ৭৮ ইউনিট। এ ভাবেই হাসপাতালে দালালচক্রও বন্ধ করা সম্ভব হবে বলে আশাবাদী সুপার।
এ দিন রক্তদান শিবিরের উদ্যোক্তাদের বোঝানো হয়, সাধারণ মানুষকে কী ভাবে রক্তদান করতে উৎসাহিত করতে হবে। যাতে হাসপাতালে রক্তের সঙ্কট বন্ধ করা যায়। রক্তদান শিবিরে রক্তদানকারীর বিনামূল্যে প্রেসার, সুগার পরীক্ষা করার ব্যবস্থা গ্রহণ করতেও উপদেশ দেওয়া হয়। জানা গিয়েছে, হোয়াটসঅ্যাপ গ্রুপে সকল স্তরের মানুষকে রাখা হবে। হাসপাতালে কোন গ্রুপের কত ইউনিট রক্ত আছে তা জানানো হবে। এই উদ্যোগকে সাধুবাদ জানিয়েছেন সভাধিপতি বিকাশ রায়চৌধুরী সহ অন্য হাসপাতালের অন্য কর্তারা। হাসপাতালে রক্ত না থাকার জন্য সাধারণ মানুষকেও অনেকসময় সমস্যায় পড়তে হত। সেই দিনও আর আসবে না বলেই আশাবাদী সাধারণ মানুষ।