চালু হবে নয়া মহকুমা: মন্ত্রী

মুখ্যমন্ত্রীর সফর ঘিরে প্রত্যাশা

মুখ্যমন্ত্রীর আসন্ন জেলা সফরকে ঘিরে হঠাৎ করেই মানবাজার ও ঝালদায় প্রশাসনে তৎপরতা শুরু হয়েছে। এতদিন ধরে পড়ে থাকা জীর্ণপ্রায় অফিসের খসে পড়া পলেস্তরা সারিয়ে রঙের পোচ পড়ছে। বিদ্যুৎ সংযোগও ঠিক কি না, তাও পরীক্ষা করে দেখা হচ্ছে।

Advertisement

সমীর দত্ত

মানবাজার শেষ আপডেট: ০২ এপ্রিল ২০১৭ ০১:০৬
Share:

মমতা: আসছেন। নিজস্ব চিত্র

মুখ্যমন্ত্রীর আসন্ন জেলা সফরকে ঘিরে হঠাৎ করেই মানবাজার ও ঝালদায় প্রশাসনে তৎপরতা শুরু হয়েছে। এতদিন ধরে পড়ে থাকা জীর্ণপ্রায় অফিসের খসে পড়া পলেস্তরা সারিয়ে রঙের পোচ পড়ছে। বিদ্যুৎ সংযোগও ঠিক কি না, তাও পরীক্ষা করে দেখা হচ্ছে। এ সব দেখে প্রশ্ন উঠছিল, তবে কী বহু প্রতীক্ষিত মানবাজার ও ঝালদায় মহকুমা চালু হতে যাচ্ছে? শনিবার বিকেলে জেলার বাসিন্দা তথা রাজ্যের পশ্চিমাঞ্চল উন্নয়ন পর্ষদ মন্ত্রী শান্তিরাম মাহাতো দাবি করলেন, ‘‘এ বারের সফরেই মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় নতুন দু’টি মহকুমা চালুর করার কথা ঘোষণা করতে চলেছেন। একই দিন নোটিফিকেশনও জারি হবে। ইতিমধ্যে নতুন দুই মহকুমাশাসকের নামও ঠিক করা হয়ে গিয়েছে। এ ছাড়া মহকুমার অন্যান্য বিষয় সংক্রান্ত প্রয়োজনীয় নির্দেশিকাও মুখ্যমন্ত্রী এখান থেকেই দেবেন।’’ জেলাশাসক অলোকেশ প্রসাদ রায়ও বলেন, ‘‘মুখ্যমন্ত্রী এই সফরেই নতুন দু’টি মহকুমার নোটিফিকেশন করতে যাচ্ছেন।’’

Advertisement

মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের বৃহস্পতিবার দুপুর আড়াইটে নাগাদ পুরুলিয়ার রবীন্দ্রভবনে প্রশাসনিক বৈঠক করার কথা। ওই দিন বিকেল সাড়ে চারটায় তাঁর পুরুলিয়া মফস্‌সল থানার বেলকুড়িতে প্রশাসনিক সভা করার কথা। সব কিছু ঠিকঠাক থাকলে সেখানেই ওই দুই মহকুমা চালুর কথা ঘোষণা হতে পারে বলে প্রশাসন সূত্রে জানা যাচ্ছে।

দীর্ঘদিন ধরেই ঝালদা ও মানবাজারকে পৃথক মহকুমা করার দাবি উঠছিল বিভিন্নস্তরের মানুষের কাছ থেকে। বামফ্রন্ট আমলে মুখ্যমন্ত্রী বুদ্ধদেব ভট্টাচার্য ২০০৬ সালে জেলা সফরে এসে পুরুলিয়ার মানবাজার এবং ঝালদাকে মহকুমা করা হবে বলে জানিয়ে গিয়েছিলেন। কিন্তু আরও পাঁচ বছর বামফ্রন্ট ক্ষমতায় থাকলেও পুরুলিয়াবাসীর ইচ্ছেপূরণ হয়নি।

Advertisement

আরও পড়ুন: হামলার নিন্দায় মিছিলে সংগঠন

জেলার এক শীর্ষ পুলিশ কর্তা বলেন, ‘‘দু’জায়গাতেই মহকুমা পুলিশ আধিকারিকের অফিসের জন্য জায়গা বাছাই হয়ে গিয়েছে। মানবাজারে বিসরি পঞ্চায়েত অফিসের পুরনো ভবনে এবং ঝালদায় পুরনো থানা ভবনে ওই অফিস আপাতত হবে। পরে নতুন ভবন নির্মাণ হয়ে গেলে, সেখানে অফিস স্থানান্তরিত করা হবে।’’ ওই দু’টি ভবনেই ঝাড়পোঁছ, রং লাগানো হয়েছে। এক পুলিশ কর্তা বলেন, ‘‘মুখ্যমন্ত্রী ঘোষণা করলেই অফিস চালু হয়ে যাবে। তাই টেবিল, চেয়ার, পাখা ইত্যাদি দেখে রাখা হয়েছে। যে কোনওদিন অফিস সাজানো যেতে পারে।’’

প্রশাসন সূত্রের খবর, মহকুমাশাসক ও মহকুমা পুলিশ অফিসার-সহ ছোট বড় মিলিয়ে প্রশাসনের প্রায় তিরিশটি বিভাগ থাকার কথা। মহকুমা চালু হয়ে গেলে ধাপে ধাপে সে সব এখানে তৈরি করা হবে।

বিডিও ঝালদা (১) পূর্ণদেব মালাকার বলেন, ‘‘মহকুমা ঘোষণা হয়ে গেলে যাতে অফিস চালু করতে দেরি না হয়, সে প্রস্তুতি আমরা নিয়ে রেখেছি।’’ তিনি জানান, ঝালদা কলেজের কাছে আপাতত মহকুমা অফিসের জন্য ভবন তৈরি আছে। চকবাজারের সামনে সমস্ত অফিসের জন্য স্থায়ী নির্মাণ করা হবে।’’ জানা গিয়েছে, ঝালদা মহকুমার মধ্যে ঝালদা১, ঝালদা ২, কোটশিলা, জয়পুর, আড়শা ও বাঘমুণ্ডি ব্লক থাকার প্রস্তাব রয়েছে।

বিডিও মানবাজার (১) সত্যজিৎ বিশ্বাস বলেন, ‘‘কিষাণ মান্ডি লাগোয়া সরকারি জমি রয়েছে। সেখানে একই চত্বরে সমস্ত অফিস নির্মাণ করা হবে। মুখ্যমন্ত্রীর ঘোষণার সাথে সাথে যাতে অফিস চালু করা যায়, সে জন্য ভবন দেখা আছে।’’ জানা দিয়েছে, মানবাজার মহকুমার মধ্যে মানবাজার ১, মানবাজার ২, পুঞ্চা, বোরো, বান্দোয়ান ও বরাবাজার ব্লক থাকার প্রস্তাব রয়েছে।

আপাতত জেলাবাসী মুখ্যমন্ত্রীর ঘোষণার অপেক্ষায় রয়েছেন।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন