প্রতিবাদ: বিষ্ণুপুর জেলা হাসপাতালে। নিজস্ব চিত্র
প্রয়োজনের তোয়াক্কা না করে ইচ্ছেমতো বিষ্ণুপুর জেলা হাসপাতালে লোক নিয়োগের অভিযোগ উঠছিল। এ বারে শাসক দলের তিনটি সংগঠন একই অভিযোগে সরব হল। সোমবার সকাল ১১টা থেকে টানা ৩ ঘণ্টা বিষ্ণুপুর জেলা হাসপাতালের সুপার পৃথ্বীশ আকুলিকে ঘিরে বিক্ষোভ চলে। বিষ্ণুপুর শহর তৃণমূলের শ্রমিক সংগঠন, শহর তৃনমূল মহিলা সংগঠন এবং শহর যুব তূণমূলের নেতৃত্বে ওই বিক্ষোভ হয়।
বিষ্ণুপুর শহর তৃণমূল শ্রমিক সংগঠনের সভাপতি গণেশ মুখোপাধ্যায় বলেন, ‘‘জেলা হাসপাতালে প্রত্যেক দিন ঝাঁকে ঝাঁকে লোক নিয়োগ চলছিল। অসাধু আমলারা ঘুষ নিয়ে অযোগ্য লোক নিয়োগ করছিল। সরকারের বদনাম হচ্ছিল এ ফলে।’’ শহর তৃণমূল মহিলা সংগঠনের সভাপতি রাখি গড়াই বলেন, ‘‘এই হাসপাতাল রোগীদের প্রচুর অভিযোগ রয়েছে। মুখ্যমন্ত্রী আপ্রাণ চেষ্টা করছেন সব স্তরের মানুষের কাছে পরিষেবা পৌঁছে দিতে। আর এখানে অনেকেই মানুষের সেবা না করে সরকরি বেতন নিয়ে নিজেদের চেম্বার সামলাতে ব্যস্ত থাকেন।’’ তাঁর অভিযোগ হাসাপালের নিরাপত্তারক্ষীদের আচরণ নিয়েও। শহর তৃনমূলের যুব সভাপতি তথা রোগী কল্যাণ সমিতির সদস্য বিষ্ণুপুরের কাউন্সিলর দিব্যেন্দু বন্দ্যোপাধায় বলেন, ‘‘প্রয়োজনে আমরা মুখ্যমন্ত্রীর কাছে যাব।’’
বিক্ষোভ চলাকালীন এক গ্রামবাসী সুপারের কাছে গিয়ে পরিষেবা নিয়ে অভিযোগ করেন। তালড্যাংরা থানার রাজপুরের বাসিন্দা, পেশায় দিনমজুর ওই ব্যক্তি জানান, মেয়ের ৯ নভেম্বর ওই হাসপাতালে সন্তান প্রসব হয়। ১৩ তারিখে বাড়ি নিয়ে যাওয়া পর্যন্ত আয়া থেকে শুরু করে ট্রলি ঠেলা পর্যন্ত সমস্ত ক্ষেত্রে টাকার জুলুম হয়েছে। এমনকী মাতৃযানও পাননি তাঁরা। বেশ কিছুক্ষণ বিক্ষোভ চলার পরে বিষ্ণুপুর থানার আধিকারিকেরা হাসপাতালে যান। সুপার নিয়োগ সংক্রান্ত্র সমস্ত তথ্য প্রকাশ করবেন বলে জানালে বিক্ষোভ ওঠে।
বিষ্ণুপুর জেলা হাসপাতালের সুপার পৃথ্বীশ আকুলিও মেনে নিয়েছে, হাসপাতালে কিছু সমস্যা রয়েছে। তিনি বলেন, ‘‘মত্ত লোকের অত্যাচার তো এখন সামাজিক সমস্যা। হাসপাতাল কি তার থেকে বাদ যাবে?’’ তাঁর বক্তব্য, নিয়োগ তিনি করেননি। পরিষেবা দেওয়ার যথাসাধ্য চেষ্টা করেছেন। সুপার বলেন, ‘‘তারপরও কেন এত অভিযোগ বুঝতে পারছি না।’’
বিষ্ণুপুর স্বাস্থ্য জেলার মুখ্য স্বাস্থ্য আধিকারিক রমেন্দ্রনাথ প্রামাণিক বলেন, ‘‘বিষ্ণুপুর জেলা হাসপাতালে মাতৃযান যথেষ্ট রয়েছে। তার পরেও কেন এ রকমের অভিযোগ উঠছে খতিয়ে দেখব।’’
তিনি জানান, ডাক্তাররা সময় মতো হাসপাতালে আসছেন না বলে অনেকেই অভিযোগ তুলেছেন। সুপারের কাছে উপস্থিতির রোস্টার চেয়ে পাঠিয়েও মেলেনি বলে রমেন্দ্রনাথবাবুর দাবি।