প্রাথমিক স্বাস্থ্যকেন্দ্রের বেহাল দশা। চিকিৎসক নেই। তাই নলহাটি ২ ব্লকের শীতলগ্রামের রোগীদের চিকিৎসা করছেন ফার্মাসিস্ট ও জিএনএম ‘দিদি’।
১৪টি গ্রামের মানুষ এই প্রাথমিক স্বাস্থ্যকেন্দ্রের উপর নির্ভরশীল। স্থানীয় সূত্রে জানানো হয়েছে, সঠিক পরিষেবা পেতে এলাকার রোগীদের তিরিশ কিলোমিটার দূরে রামপুরহাট সুপার স্পেশালিটি হাসপাতালে যেতে হয়। এলাকাবাসীর দাবি, লোহাপুর গ্রামীণ স্বাস্থ্যকেন্দ্রেও ভাল পরিষেবা পাওয়া যায় না। শীতল গ্রাম স্বাস্থ্যকেন্দ্রের ভবন নিয়ে উঠেছে প্রশ্ন, প্রায় দুই বিঘা জমির উপর অবস্থিত এই চিকিৎসাকেন্দ্রটি। রক্ষণাবেক্ষণের অভাবে জরাজীর্ণ অবস্থা স্বাস্থ্যকেন্দ্রের ভবনের। চারদিক আগাছায় ভর্তি। দরজা, জানলা ভাঙা। কংক্রিটের ছাদ থেকে ঝুলছে সিমেন্টের চাঙর। যত্রতত্র পড়ে রয়েছে মদের বোতল। সূর্যাস্তের পর দুষ্কৃতীদের মুক্তাঞ্চল হয়ে ওঠে ওই চত্বর। ভবনের ভিতর নোংরা আবর্জনায় ভর্তি। সুস্থ মানুষই চিকিৎসাকেন্দ্রে ঢুকতে পারেন না। স্বাস্থ্যকেন্দ্রের মধ্যে একটি নতুন ভবন তৈরি হয়েছে বর্তমানে সেখানে চিকিৎসা চলছে। লোহাপুর পঞ্চায়েত সমিতির সদস্য নারায়ণচন্দ্র সাহা বলেন, ‘‘আঠারো বছর আগে শীতল গ্রামে চিকিৎসা পরিষেবা উন্নত ছিল। স্বাস্থ্যকেন্দ্রে রোগী শয্যাও ছিল। চিকিৎসকের অভাবে এখন এই দশা। চিকিৎসাকেন্দ্রে কোনও রকম জীবনদায়ী ওষুধ পাওয়া যায় না। ককুরে, সাপ কামড়ানোর কোন ইঞ্জেকশনও মেলে না। বাধ্য হয়ে রামপুরহাট হাসপাতালে যেতে হয়।’’
গ্রামবাসীরা বলেন, ‘‘আমাদের এলাকায় খেটে খাওয়া মানুষের সংখ্যা বেশি। অবস্থা গুরুতর হলে রোগীরা গাড়ি ভাড়া করে রামপুরহাট হাসপাতালে যান। অনেক সময় তা-ও যেতে পারেন না।’’ প্রাথমিক স্বাস্থ্যকেন্দ্রর ফার্মাসিস্ট ভক্ত দাস বলেন, ‘‘চিকিৎসক না থাকায় বাধ্য হয়ে চিকিৎসা করতে হচ্ছে। সর্দি, জ্বর, পেটে ব্যাথার চিকিৎসা করি। জটিল রোগীদের লোহাপুর গ্রামীণ স্বাস্থ্যকেন্দ্রে যেতে পরামর্শ দিই।’’
লোহাপুর গ্রামীণ স্বাস্থ্যকেন্দ্রের চিকিৎসক মধুসূদন মাইতি বলেন, ‘‘কেন চিকিৎসক নেই আমার চেয়ে জেলা স্বাস্থ্য আধিকারিক ভাল বলতে পারবেন। আমার হাসপাতাল তিরিশ শয্যার, চিকিৎসক মাত্র তিন। গ্রামীণ স্বাস্থ্যকেন্দ্রেই চিকিৎসক নেই, প্রাথমিক স্বাস্থ্যকেন্দ্রে কেমন করে চলবে।’’