স্বাধীনতা দিবসে ‘মাওবাদী’ পোস্টার উদ্ধার

বলরামপুর, বাঘমুণ্ডি থেকে ধৃত ৬

স্বাধীনতা দিবসের সকালে বলরামপুর ও বাঘমুণ্ডির কিছু গ্রামে দেখা গিয়েছিল সাদা কাগজে লাল কালিতে লেখা কিছু পোস্টার। তার বেশ কয়েকটিতে শাসকদলের উদ্দেশে হুঁশিয়ারি—মাওবাদীরা বাংলার বুকে ফিরে এসেছে!

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

পুরুলিয়া শেষ আপডেট: ১৮ অগস্ট ২০১৫ ০১:২৯
Share:

ধৃতদের হাজির করানো হচ্ছে আদালতে। সোমবার। —নিজস্ব চিত্র।

স্বাধীনতা দিবসের সকালে বলরামপুর ও বাঘমুণ্ডির কিছু গ্রামে দেখা গিয়েছিল সাদা কাগজে লাল কালিতে লেখা কিছু পোস্টার। তার বেশ কয়েকটিতে শাসকদলের উদ্দেশে হুঁশিয়ারি—মাওবাদীরা বাংলার বুকে ফিরে এসেছে! সেই পোস্টার সাঁটানো কাণ্ডে জড়িত সন্দেহে ছ’জনকে গ্রেফতার করল পুলিশ।

Advertisement

পুলিশ জানিয়েছে, রবিবার বিকেল থেকে রাত অবধি বাঘমুণ্ডি ও বলরামপুর থানা এলাকার বিভিন্ন গ্রাম থেকে এই ছ’জনকে ধরা হয়েছে। ধৃতদের নাম অশোক মাহাতো, দিলীপ হাঁসদা, রাজেশ রায়, লক্ষ্মণ মাঝি, দিলীপ মিশ্র ও বিজয় মুর্মু। অশোক বাঘমুণ্ডির চিরুগোড়া গ্রামের বাসিন্দা। দিলীপের বাড়ি বাঁশিটাঁড় গ্রামে। রাজেশ ও লক্ষ্মণ বাঘমুণ্ডিরই পারডি গ্রামের বাসিন্দা। দিলীপ বলরামপুর সদরে থাকেন। তাঁর একটি ছাপাখানা আছে। আর বিজয়ের বাড়ি বলরামপুরের গেঁড়ুয়া পঞ্চায়েতের ডুংরিডি গ্রামে।

শনিবার সকালে ওই দুই থানার সীমানা এলাকার গড়গা, ডাভা, দেউলি, কাশিডি, বাঁশিটাঁড়, ভুচুংডি, বান্দু প্রভৃতি গ্রামে মাওবাদী নামাঙ্কিত একাধিক পোস্টার দেখা যায়। গড়গা প্রাথমিক স্কুলের বেদিতে একটি বাঁশে কালো পতাকা লাগানো ছিল। স্বাধীনতা দিবসে বা তার আগে ও পরে মাওবাদীরা জঙ্গলমহলে নাশকতার ছক কষছে, কেন্দ্রীয় গোয়েন্দা দফতর সূত্রে এই মর্মে খবর আসার পরে নিরাপত্তা আঁটোসাঁটো করেছিল পুরুলিয়া জেলা পুলিশ। জঙ্গলমহল জুড়ে তল্লাশি শুরু করে যৌথবাহিনী। তার মধ্যেই বিভিন্ন গ্রামে পোস্টার পড়ার ঘটনা উদ্বেগ বাড়িয়েছে পুলিশের। জেলার পুলিশ সুপার রূপেশ কুমারের দাবি, ‘‘যে ছ’জনকে গ্রেফতার করা হয়েছে, তারা শনিবার উদ্ধার হওয়া পোস্টারগুলি লিখেছিল ও লাগিয়েছিল। এদের সঙ্গে বলরামপুরের একটি ছাপাখানার মালিকও রয়েছেন। মাওবাদী নামাঙ্কিত যে প্রচারপত্র পাওয়া গিয়েছিল, সেটি এই ছাপাখানা থেকেই ছাপানো হয়েছিল বলে আমরা জেনেছি।’’ ধৃতদের এ দিন পুরুলিয়া আদালতে তোলা হলে তাঁদের ৭ দিনের পুলিশি হেফাজতের নির্দেশ হয়।

Advertisement

ধৃতদের অন্যতম দিলীপ মিশ্র বলরামপুর বাসস্ট্যান্ড এলাকায় একটি ছাপাখানা চালান। পুলিশ সুপার অবশ্য এ-ও জানিয়েছেন, প্রাথমিক তদন্তে মাওবাদীদের সঙ্গে ধৃতদের সরাসরি কোনও যোগাযোগ পাওয়া যায়নি। তা হলে কেন এঁদের গ্রেফতার করা হল? পুলিশ সুপার বলেন, ‘‘মাওবাদী নামাঙ্কিত পোস্টার দিয়ে আতঙ্কের পরিবেশ সৃষ্টি করাই এদের উদ্দেশ্যে ছিল।’’ গত ২৮ জুলাই মাওবাদীদের শহিদ সপ্তাহ শুরুর দিনে বাঘমুণ্ডির ভুচুংডি-সহ আশপাশের এলাকায় মাওবাদী নামাঙ্কিত একাধিক পোস্টার মিলেছিল। সেই পোস্টারগুলিও ধৃতেরাই লাগিয়েছিলেন বলে এসপি দাবি করেছেন। উল্লেখ্য, ধৃত অশোক মাহাতো-সহ এলাকার বাসিন্দারা চিরুগোড়ায় শাঁকা নদীর উপর কাঠের একটি সাঁকো গড়েছিলেন। যদিও বৃষ্টিতে সেই সাঁকো ভেসে যায়।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন