পরিত্যক্ত কারখানার বাইরে উদ্ধার হল একটি শিশুর মাথা

গত ২৪ জুলাই রাতে ঝাড়খণ্ডের টাটানগর স্টেশনের প্ল্যাটফর্মে ঘুমন্ত মায়ের পাশ থেকে অপহরণ করা হয় বছর তিনেকের শিশুকন্যাকে।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

পুরুলিয়া শেষ আপডেট: ১১ অগস্ট ২০১৯ ০১:২৮
Share:

প্রতীকী ছবি।

ঝাড়খণ্ডের রামাধীনবাগান এলাকায় পরিত্যক্ত কারখানার সামনের ঝোপ থেকে শুক্রবার বিকেলে উদ্ধার হল একটি শিশুর মাথা। পুরুলিয়ার ঝালদা থানা এলাকার বছর তিনেকের এক শিশুকন্যাকে টাটানগর স্টেশন থেকে অপহরণ করে নির্যাতনের পরে খুন করা হয়েছিল। রেল পুলিশের এসপি (জামশেদপুর) এহেতেশাম ওয়াকারিব জানান, প্রাথমিক তদন্তে মনে করা হচ্ছে মাথাটি ওই শিশুর হতে পারে। সেটি ফরেন্সিক পরীক্ষার জন্য পাঠানো হয়েছে। তিনি বলেন, ‘‘ওই খুনের ঘটনায় আমরা দ্রুত চার্জশিট জমা করার চেষ্টা করছি।’’

Advertisement

গত ২৪ জুলাই রাতে ঝাড়খণ্ডের টাটানগর স্টেশনের প্ল্যাটফর্মে ঘুমন্ত মায়ের পাশ থেকে অপহরণ করা হয় বছর তিনেকের শিশুকন্যাকে। ক্লোজ়ড সার্কিট ক্যামেরার ফুটেজ দেখে রাতেই রেল পুলিশ গ্রেফতার করে টেলকো থানার রামাধীনবাগানের রিঙ্কু শাহ ও কাশিডির কৈলাস কুমারকে। বিয়ের প্রতিশ্রুতি দিয়ে ঝালদার বাড়ি থেকে ওই যুবতীকে মেয়ে-সহ টাটানগরে নিয়ে গিয়েছিল সাহেবগঞ্জের মনু মণ্ডল। অভিযোগের ভিত্তিতে তাকেও গ্রেফতার করা হয়।

রেল পুলিশের দাবি, অপহরণের পরে রামাধীনবাগানের একটি পরিত্যক্ত কারখানায় নিয়ে গিয়ে শিশুটিকে ধর্ষণ করে রিঙ্কু। তার পরে মাথা কেটে খুন করে। ২৯ জুলাই কারখানার পাঁচিলের বাইরে রিঙ্কুর দেখানো ঝোপ থেকে প্লাস্টিকে মোড়া শিশুর ধড় উদ্ধার হয়। কিন্তু প্রশিক্ষিত কুকুর নিয়ে তল্লাশি চালিয়েও মাথার সন্ধান মিলছিল না। দেহের পরিচয় জানতে ডিএনএ পরীক্ষায় উদ্যোগী হয় রেল পুলিশ। রেল পুলিশের এসপি (জামশেদপুর) জানান, সেই পরীক্ষার রিপোর্টের জন্য অপেক্ষা করা হচ্ছে।

Advertisement

রেল পুলিশের একটি সূত্রে জানা গিয়েছে, শুক্রবার বিকেলে ওই পরিত্যক্ত কারখানার বাইরে খেলতে গিয়ে কিছু বালক কয়েকটি কুকুরকে শিশুর মাথা নিয়ে টানাটানি করতে দেখে। তাদের থেকে খবর পেয়ে এলাকার লোকজন ছুটে যান। কিন্তু কুকুরগুলি মাথাটি নিয়ে ঝোপের ভিতর দিয়ে পালায়। রেল পুলিশ গিয়ে তল্লাশি চালিয়ে ওই এলাকা থেকেই শিশুর মাথা উদ্ধার করে।

ওই ঘটনায় মূল অভিযুক্ত রিঙ্কু শাহ আগেও অপহরণ ও নাবালিকার উপরে যৌন নির্যাতনের ঘটনায় অভিযুক্ত। মাস ছয়েক আগে জামিনে জেল থেকে ছাড়া পায় সে। রেল পুলিশের দাবি, কৈলাসও শিশুপাচার চক্রের সঙ্গে জড়িত। টাটানগর স্টেশন থেকে ওই শিশুটিকে অপহরণ করার জন্য রিঙ্কুর সঙ্গে তার পাঁচ হাজার টাকার চুক্তি হয়। কিন্তু নির্যাতনের পরে শিশুটির কান্না থামাতে না পেরে গলা কেটে খুন করে ফেলে রিঙ্কু।

তবে মনুর সঙ্গে কৈলাস ও রিঙ্কুর আগে থেকে যোগসাজশ ছিল কি না, তা এখনও স্পষ্ট নয়। শনিবারও রেল পুলিশের এসপি (জামশেদপুর) বলেন, ‘‘বিষয়টি তদন্তের মধ্যে রয়েছে। আমরা খতিয়ে দেখছি।’’ পরিবার সূত্রে জানা গিয়েছে, শুক্রবার ওই শিশুর মা রেল পুলিশের থেকে ডাক পেয়ে ঝাড়খণ্ডে গিয়েছিলেন। ফিরে আসার পরে আবার একটি ফোনে তিনি মাথা উদ্ধারের খবর পান।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন