সিবিআই তদন্তের নির্দেশ দিতেই নাবালিকাকে খুঁজে পেল পুলিশ

অপহরণের অভিযোগ পাওয়ার পরে ছ’মাস কেটে গেলেও নাবালিকাকে খুঁজে পায়নি পুলিশ। ক্ষোভ প্রকাশ করে মামলার তদন্তভার সিবিআইকে দিয়েছিল আদালত। সেই নির্দেশের বারো দিনের মধ্যে সিবিআই কাজ শুরু করার আগেই মেয়েটিকে উদ্ধার করল পুলিশ।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

আসানসোল শেষ আপডেট: ২০ এপ্রিল ২০১৫ ০১:০৯
Share:

অপহরণের অভিযোগ পাওয়ার পরে ছ’মাস কেটে গেলেও নাবালিকাকে খুঁজে পায়নি পুলিশ। ক্ষোভ প্রকাশ করে মামলার তদন্তভার সিবিআইকে দিয়েছিল আদালত। সেই নির্দেশের বারো দিনের মধ্যে সিবিআই কাজ শুরু করার আগেই মেয়েটিকে উদ্ধার করল পুলিশ।

Advertisement

কাঁকরতলার সেই নাবালিকাকে রবিবার দুর্গাপুর থেকে পুলিশ উদ্ধার করে। পুলিশ সূত্রে খবর, জামুড়িয়ার এক যুবক মেয়েটিকে অপহরণ করেছিল। এ দিন বাড়িতে অভিযান চালিয়েও তাকে ধরা যায়নি। আসানসোল-দুর্গাপুরের এডিসিপি (সেন্ট্রাল) বিশ্বজিৎ ঘোষ বলেন, ‘‘নির্দিষ্ট খবরের ভিত্তিতে ওই তরুণীকে উদ্ধার করা হয়েছে। তার সঙ্গে কথা বলা হচ্ছে।’’

কাঁকরতলার হজরতপুর গ্রামের বছর সতেরোর মেয়েটি গত ২৩ সেপ্টেম্বর আসানসোল বাসস্ট্যান্ড থেকে নিখোঁজ হয়ে যায়। তার বাবা আসানসোল দক্ষিণ থানার পুলিশকে জানান, মেয়েকে নিয়ে ডাক্তার দেখাতে এসেছিলেন তিনি। বাসস্ট্যান্ডে মেয়েকে দাঁড় করিয়ে তিনি শৌচাগারে যান। ফিরে দেখেন, মেয়ে নেই। ৫ অক্টোবর ওই থানায় অন্ডালের দু’জন মেয়েকে অপহরণ করেছে বলে অভিযোগ দায়ের করেন তিনি। কিন্তু মাসের পর মাস কেটে গেলেও মেয়ের খোঁজ না মেলায় তদন্তে পুলিশি নিষ্ক্রিয়তা ও গাফিলতির অভিযোগে হাইকোর্টের দ্বারস্থ হন তিনি। গত ৭ এপ্রিল বিচারপতি ইন্দিরা বন্দ্যোপাধ্যায় ও বিচারপতি শহিদুল্লা মুন্সির ডিভিশন বেঞ্চ সিবিআই তদন্তের নির্দেশ দেন।

Advertisement

এ দিন মেয়েটির কাকা দাবি করেন, আদালত সিবিআই তদন্তের নির্দেশ দেওয়ার পরেই পুলিশের তৎপরতা বাড়ে। তার ফলেই তাঁর ভাইঝিকে উদ্ধার করা গেল। তিনি জানান, ১৪ এপ্রিল তাঁর ভাইঝি প্রথম ফোন করে জানায়, সে জামুড়িয়ার বাসিন্দা রাকেশ সিংহের সঙ্গে রয়েছে। বাড়ি ফিরতে চায়। সঙ্গে নিয়ে আসতে চায় রাকেশকেও। সব শোনার পরে বাড়ির লোকেরা কোনও আপত্তি না তুলে দু’জনকেই ফিরিয়ে নিতে রাজি হয়ে যান। ওই তরুণীর কাকা বলেন, ‘‘শনিবার রাতে ফের ভাইঝি ফোনে জানায়, রবিবার সকাল ১০টায় দুর্গাপুর স্টেশনের মেনগেটে সে ও রাকেশ অপেক্ষা করবে। কিন্তু এই কথা যেন কোনও ভাবে পুলিশকে জানানো না হয়। সঙ্গে করেও যেন পুলিশকে না আনা হয়।’’ মেয়েটির পরিবার সূত্রে জানা গিয়েছে, এই ফোন পাওয়ার পরেই তাঁরা আসানসোল-দুর্গাপুর কমিশনারেটের গোয়েন্দা দফতরকে পুরো বিষয়টি জানান।

পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে, পরিকল্পনা মাফিক মেয়েটির পরিবারের লোকজন এ দিন সকালে দুর্গাপুর স্টেশনে যান। আগে থেকেই সেখানে মোতায়েন ছিলেন সাদা পোশাকের পুলিশকর্মীরা। সকাল সাড়ে ১০টা নাগাদ মেয়েটি সেখানে এসে পৌঁছতেই বাড়ির লোকজন তাকে ধরেন। পুলিশ গিয়ে মেয়েটিকে হেফাজতে নেয়। কিন্তু রাকেশকে খুঁজে পাওয়া যায়নি বলে পুলিশ ও মেয়েটির পরিবারের তরফে জানানো হয়েছে।

কোর্ট সিবিআই তদন্তের নির্দেশ দেওয়ার পরে ‘তৎপর’ হয়ে ওঠা প্রসঙ্গে আসানসোল-দুর্গাপুর কমিশনারেটের কর্তারা কোনও মন্তব্য করতে চাননি।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন