ছাত্রীর হাতে হেলমেট তুলে দিচ্ছেন পুলিশ সুপার। —নিজস্ব চিত্র
পথ-দুর্ঘটনায় মৃতদের অধিকাংশই কম বয়সী। এই তথ্যকে সামনে রেখে এ বার পুরুলিয়ার নিস্তারিণী মহিলা মহাবিদ্যালয়ের ছাত্রীদের পথ-নিরাপত্তা নিয়ে সতর্ক করল জেলা পুলিশ। বৃহস্পতিবার ওই কলেজে এক আলোচনাসভায় জেলা পুলিশ সুপার রূপেশ কুমার ছাত্রীদের উদ্দেশে বলেন, ‘‘তোমাদেরও সতর্ক হয়ে পথ চলতে হবে। মনে রাখবে সতর্কতার কোনও বিকল্প নেই। দুর্ঘটনায় মৃত্যু যেমন হয়, তেমনই পঙ্গু হয়ে অনেককে আজীবন যন্ত্রণা ভোগ করতে হয়। এ কথা মাথায় রেখে সতর্কতা জরুরি।’’
তিনি জানান, ২০১৪ সালে এই জেলায় পথ-দুর্ঘটনায় মারা গিয়েছেন ১৩৫ জন। ২০১৫ সালে একই ভাবে দুর্ঘটনার শিকার হয়ে মারা যান ১৩১ জন। আর চলতি বছরে জুন মাস পর্যন্ত ইতিমধ্যে ৬৫ জন মারা গিয়েছেন। এই পরিসংখ্যান দিয়ে পুলিশ সুপার বলেন, ‘‘দুর্ঘটনায় মৃতদের মধ্যে সিংহ ভাগেরই বয়স ২০ থেকে ৫০-র মধ্যে। এঁদের অনেকেই পরিবারের রোজগেরে মানুষ। সভার পরে এই কলেজের যে সব ছাত্রী মোটরবাইক চালান, তাঁদের মধ্যে ১৫ জন ছাত্রীর হাতে পুলিশের তরফে হেলমেট তুলে দেওয়া হয়।
কলেজের ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ ছবি নায়েক বলেন, ‘‘অনেক সময়েই দেখতে পাই রাস্তায় বেশ কয়েকজন ছাত্রী বা ছাত্র পাশাপাশি সাইকেল চালিয়ে যাচ্ছে। এ ভাবে পথচলা উচিত নয়। আশাকরি পুলিশের এই সভায় সব শুনে ছাত্রীরা উপকৃত হবেন।’’ আলোচনাচক্রে উপস্থিত জেলার অতিরিক্ত পুলিশ সুপার পারিজাত বিশ্বাস বলেন, ‘‘পুরুলিয়ার রাস্তাঘাট চওড়া হচ্ছে। স্বাভাবিক ভাবেই যানের গতিও বাড়ছে। তাই পরিবর্তিত পরিস্থিতিতে পথ চলতে আমাদের সকলেরই কিছু সতর্কতা মেনে চলা প্রয়োজন।’’ এ কথা জানিয়ে তিনি রাস্তায় ট্রাফিক সিগন্যাল ও রাস্তার পাশে যে সমস্ত চিহ্নগুলি থাকে তা পর্দায় দেখিয়ে কী রকম সতর্কতা অবলম্বন করা প্রয়োজন, তা ব্যাখ্যা করেন। জেলা পুলিশ সুপার বলেন, ‘‘এই সচেতনতার বার্তা ছাত্রীরা নিজেদের পরিচিতদের মধ্যে পৌঁছে দেবে বলে আশা করছি।’’
হেলমেট হাতে পেয়ে ছাত্রী নেহা মাহাতো, শ্রাবণী গড়াইদের বক্তব্য, ‘‘আমরা আগে থেকেই হেলমেট ব্যবহার করতাম। কিন্তু এ বার নিয়মিত হেলমেট ব্যবহার করব।’’ মেঘা বিশ্বাস, সাইমা খাতুন, বনানী মাহাতো, দোয়েল পান্ডে, প্রিয়াঙ্কা মুখোপাধ্যায়ের মত ছাত্রীরা জানিয়েছেন, নিজেদের পরিচিতদের হেলমেট ব্যবহার করতে বলবেন। পাশাপাশি পথ চলার অন্য নিয়মকানুনের কথাও তাঁরা সবাইকে জানাবেন।