দৈবাৎ রক্ষা পেয়ে পুলিশের আতিথ্য

খালপাড়ে হাওয়া খেতে বেরিয়ে লম্বকর্ণকে পেয়েছিলেন রায়বাহাদুর বংশলোচনবাবু। আরপিএফের ওসি নারায়ণ দত্তের ক্ষেত্রে ব্যাপারটা রাজশেখর বসুর গল্পের মতো শৌখিন ছিল না। রেল লাইন থেকে তিনি যখন ছাগলটিকে উদ্ধার করলেন, তার উপর দিয়ে চলে গিয়েছে মালগাড়ির সবক’টি কামরা।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

পুরুলিয়া শেষ আপডেট: ২৬ নভেম্বর ২০১৬ ০১:২৬
Share:

থানার টেবিলে। —নিজস্ব চিত্র।

খালপাড়ে হাওয়া খেতে বেরিয়ে লম্বকর্ণকে পেয়েছিলেন রায়বাহাদুর বংশলোচনবাবু। আরপিএফের ওসি নারায়ণ দত্তের ক্ষেত্রে ব্যাপারটা রাজশেখর বসুর গল্পের মতো শৌখিন ছিল না। রেল লাইন থেকে তিনি যখন ছাগলটিকে উদ্ধার করলেন, তার উপর দিয়ে চলে গিয়েছে মালগাড়ির সবক’টি কামরা। দৈবাৎ প্রাণে রক্ষা পাওয়া অবোলা প্রাণীটিকে সুস্থ করে তোলার জন্য তারপর থেকে ছোটাছুটি করে চলেছেন জাঁদরেল পুলিশ আধিকারিক।

Advertisement

শুক্রবার দুপুর। পুরুলিয়া স্টেশনের আরপিএফ থানার ওসি নারায়ণ দত্ত রুটিন টহলে বেরিয়েছিলেন। আদ্রার দিকে একটি মালগাড়ি যাচ্ছিল। লাইন বদল করার জন্য সেটির গতি বেশ কিছুটা কম ছিল। হঠাৎ নারায়ণবাবুর চোখে পড়ল, চলন্ত মালগাড়ির নীচে আটকে রয়েছে একটি ছাগল। গাড়ির তলায় থাকা লোহালক্কড়ের ধাক্কা খেয়ে ছটফট করছে।

তিনি বলেন, ‘‘ছাগলটা লাইন থেকে বেরিয়ে আসার জন্য ছটফট করছিল। ধাক্কা খেতে খেতে একটা সময়ে ঝুপ করে লাইনের উপরে পড়ে গেল।’’ মালগাড়ি পার হয়ে যাওয়ার পরে দেখা যায় প্রায় নির্জীব হয়ে পড়ে রয়েছে ছাগলটি। লেজ, কান ও পা থেকে গলগল করে রক্ত বেরোচ্ছে। কিন্তু দেহে তখনও প্রাণ রয়েছে।

Advertisement

ওসি জানান, ছাগলটিকে উদ্ধার করে প্রথমে তিন নম্বর প্ল্যাটফর্মে থানায় নিয়ে আসা হয়। রেলের মেডিক্যাল ইউনিটের কর্মীরা এসে প্রাথমিক চিকিৎসা করেন। আরপিএফের সাব ইন্সপেক্টর গৌতমকুমার দত্ত ও অন্য কর্মীরা নিজেরাই উদ্যোগী হয়ে রিক্সায় চাপিয়ে ছাগলটিকে নিয়ে যান শহরের দেশবন্ধু রোডের প্রাণিচিকিৎসা কেন্দ্রে। নিজেই খরচ করে নারায়ণবাবু বাইরের দোকান থেকে কিনে আনেন চিকিৎসকের লিখে দেওয়া ইঞ্জেকশন। ওই কেন্দ্রের পশুচিকিৎসক স্বরূপ দে বলেন, ‘‘ছাগলটির কানের কিছুটা অংশ আর লেজ কাটা পড়েছে। আপাতত ওষুধ দেওয়া হয়েছে।’’

ছাগল কার এখনও জানা যায়নি। আপাতত সেটিকে থানাতেই এনে রেখেছেন আরপিএফ-এর কর্মী এবং আধিকারিকেরা। বন্দুক আর লাঠি ধরে শক্ত হয়ে যাওয়া হাত নতুন অতিথির গায়ে মমতায় বুলিয়ে দিতে দিতে এক আরপিএফ কর্মী জানান, আপাতত তাঁদের চিন্তা প্রাণীটিকে চটপট সুস্থ করে তোলা আর সুন্দর দেখে একটা নাম দেওয়া।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন