কথা: নিহত শিক্ষকের বাড়িতে পুলিশ। নিজস্ব চিত্র
শিক্ষককে গুলি করে খুনের ঘটনার পরে দু’দিন পার হয়ে গিয়েছে। এখনও গ্রেফতার হয়নি কেউ। কেন খুন, সেই প্রশ্নের উত্তরও স্পষ্ট নয় পুলিশের কাছে। রবিবার এসডিপিও (রঘুনাথপুর) সত্যব্রত চক্রবর্তী বলেন, ‘‘মৃত শিক্ষকের পরিবারের সঙ্গে কথা বলে, সমস্ত দিক খতিয়ে দেখে তদন্ত চলছে।”
শুক্রবার রাতে বাড়ির অদূরে অজ্ঞাতপরিচয় আততায়ীর গুলিতে খুন হন রঘুনাথপুর শহরের ১৩ নম্বর ওয়ার্ডের বাসিন্দা, শহরেরই একটি প্রাথমিক স্কুলের শিক্ষক বছর আঠাশের চিন্ময় মণ্ডল। ক্রীড়া প্রতিযোগিতার কাজকর্ম সেরে রঘুনাথপুর মহকুমা স্টেডিয়াম থেকে ফিরছিলেন তিনি। রঘুনাথপুর-চেলিয়ামা রাস্তার পাশে, বারিকবাঁধের অদূরে ফাঁকা এলাকায় খুব কাছ থেকে দুষ্কৃতীরা তাঁকে পরপর গুলি করে।
রবিবারও পুলিশ থানায় ডেকে জিজ্ঞাসাবাদ করেছে চিন্ময়ের মা মমতাদেবী ও স্ত্রী পাপিয়াকে। পুলিশ সূত্রের খবর, খুনের কারণ সম্পর্কে নির্দিষ্ট তথ্য পেতেই পরিবারের লোকজনের সঙ্গে কথা বলা হচ্ছে। ভাড়াটে খুনি আনা হয়েছিল কি না, সেটাও খতিয়ে দেখছে পুলিশ। শনিবারই পুরুলিয়ার পুলিশ সুপার আকাশ মাঘারিয়া জানিয়েছিলেন, প্রাথমিক তদন্তে মনে করা হচ্ছে খুনের পিছনে ব্যক্তিগত আক্রোশ থাকতে পারে। কিন্তু কী ধরনের আক্রোশ, তদন্তের স্বার্থে সেটা আর খোলসা করতে চাননি তিনি। শনিবার রাতে তদন্তের অগ্রগতি খতিয়ে দেখতে পুলিশ সুপার রঘুনাথপুরে গিয়েছিলেন। সূত্রের খবর, চিন্ময় এবং আরও কয়েক জনের মোবাইলে শুক্রবার রাতের ফোনের খতিয়ান পরীক্ষা করে দেখছে পুলিশ। তবে এখনও উল্লেখযোগ্য কিছু মেলেনি বলে দাবি করেছে পুলিশ।
শনিবার সকালে রঘুনাথপুর সুপার স্পেশালিটি হাসপাতাল থেকে চিন্ময়ের দেহ পুরুলিয়া সদর হাসপাতালে ময়না তদন্তের জন্য পাঠিয়েছিল পুলিশ। রাতে দেহ ফেরে বারিকবাঁধ পাড়ার বাড়িতে। রাত ১০টার পরে চেলিয়ামা রাস্তার পাশে শ্মশানে সৎকার হয়। সেখানে ছিলেন চিন্ময়ের সহকর্মী ও বন্ধুরা। রবিবার চিন্ময়ের বাড়িতে গিয়ে দেখা যায়, থমথমে পরিবেশ। পরিজনেরা জানান, রঘুনাথপুর থানা থেকে এক পুলিশকর্মী এসে গাড়ি করে মমতাদেবীকে থানায় নিয়ে গিয়েছিলেন। কিছু পরে থানায় ডেকে নিয়ে যাওয়া হয় পাপিয়াকে।
গুলি করে খুনের ঘটনা রঘুনাথপুর পুরশহরে সচরাচর শোনা যায় না। শনিবারই চিন্ময়-খুনের তদন্ত দ্রুত মেটানোর দাবি তুলেছিলেন অন্য শিক্ষকেরা। রবিবার দুপুরে এসইউসি-র কর্মী সমর্থকেরা থানায় গিয়ে বিক্ষোভ দেখিয়ে স্মারলকিপি দেন। দলের জেলা কমিটির সদস্য লক্ষ্মীনারায়ণ সিংহ বলেন, ‘‘আমরা ঘটনায় জড়িতদের চিহ্নিত করে দ্রুত গ্রেফতারের দাবি জানিয়েছি।”