ঘমুণ্ডির হুড়ুমদা গ্রামে বম্ব ডিসপোজ়াল স্কোয়াড। —নিজস্ব চিত্র
বাড়িতে বিস্ফোরণে এক শিশুর গুরুতর আহত হওয়ার ঘটনাকে ঘিরে রহস্য ঘনিয়েছে বাঘমুণ্ডির হুড়ুমদা গ্রামে। বিস্ফোরণের পর থেকেই সেই বাড়িতে তালা ঝুলিয়ে বছর ছয়েকের আহত নাতিকে নিয়ে বেপাত্তা হয়ে গিয়েছেন মহরম মোমিন। পুলিশ ও বম্ব ডিসপোজ়াল স্কোয়াড সোমবার রাতে ঘটনার পরে এবং মঙ্গলবার সকালে দু’দফায় ওই বাড়িতে তল্লাশি চালিয়েছে। তবে বিস্ফোরণের কারণ নিয়ে ধোঁয়াশা কাটেনি বলেই জানাচ্ছেন পুলিশ কর্তারা। সেই শিশুটি কী অবস্থায় রয়েছে, কোথায় তার চিকিৎসা চলছে মঙ্গলবার সন্ধ্যা পর্যন্ত সে ব্যাপারে অন্ধকারে জেলা পুলিশ। তবে, বাড়িতে বিস্ফোরক মজুত রাখা-সহ খুনের চেষ্টার মামলা রুজু করেছে পুলিশ
পুরুলিয়ার পুলিশ সুপার আকাশ মাঘারিয়া এ দিন বলেন, ‘‘বিস্ফোরণে আহত শিশুটির শারীরিক অবস্থা সম্পর্কে পুলিশের কাছে কোনও খবর নেই। ঘটনার পরে পুলিশ ওই বাড়িতে তল্লাশি চালিয়েছে। কোনও বিস্ফোরক পাওয়া যায়নি। মামলা করে তদন্ত শুরু হয়েছে। পরিবারটির খোঁজও চলছে।’’
লোকসভা ভোটের ঠিক পরের দিন সোমবার বিকেলের ওই ঘটনাকে ঘিরে রাজনৈতিক রং-ও লেগেছে। স্থানীয় বিজেপি নেতৃত্ব দাবি করেছেন, যে ব্যক্তির বাড়িতে বিস্ফোরণের ঘটনা ঘটেছে, তিনি তৃণমূলের সমর্থক। বিজেপির জেলা সভাপতি বিদ্যাসাগর চক্রবর্তীর অভিযোগ, ‘‘ওই ব্যক্তি তৃণমূলের সমর্থক বলেই এলাকা থেকে খবর পেয়েছি। হয়তো ভোটে ব্যবহারের জন্য বোমা মজুত করেছিলেন। তা ব্যবহার করতে পারেননি। বিষয়টি পুলিশ দেখুক।’’ তৃণমূলের বাঘমুণ্ডি ব্লকের আহ্বায়ক আশুতোষ মাহাতো অবশ্য দাবি করেছেন, ‘‘ওই ব্যক্তির সঙ্গে আমাদের দলের কোনও যোগ নেই। দলের সাধারণ কর্মীও তিনি নন। আর কে কোন দলের সমর্থক সেটা বাইরে থেকে বোঝা যায় না কি? ভিত্তিহীন অভিযোগ।’’
পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, সোমবার বিকেলে হুড়ুমদা গ্রামের একটি বাড়ি থেকে শব্দ শুনতে পান পড়শিরা। ওই বাড়ির কর্তা মহরম মোমিন এলাকায় তালা-চাবি ও টর্চলাইট ইত্যদি মেরামত করেন বলে প্রাথমিক তদন্তে জেনেছে পুলিশ।
খবর পেয়ে পুলিশ সেই রাতেই গ্রামে তদন্তে যায়। পুলিশের একটি সূত্রে জানা গিয়েছে, গ্রামের এক বাসিন্দা তাঁদের কাছে মৌখিক ভাবে জানিয়েছেন, ওই বাড়ি থেকে বিস্ফোরণের শব্দ তাঁরা শুনতে পেয়েছিলেন। কিছু পরে কাপড়ে মুড়ে ওই গৃহকর্তার নাতিকে আহত অবস্থায় গাড়িতে তুলে চিকিৎসা করাতে নিয়ে যাওয়া হয়। কাছেই ঝাড়খণ্ড সীমানা। বাসিন্দাদের অনুমান, সেখানেই সম্ভবত ওই শিশুকে চিকিৎসা করাতে নিয়ে যাওয়া হয়েছে।