বাঁকুড়ার নানা এলাকায় এমনই অবস্থা গন্ধেশ্বরী নদীর। নিজস্ব চিত্র।
বন্যা নিয়ন্ত্রণে গন্ধেশ্বরী নদীর নাব্যতা বাড়াতে প্রকল্প হাতে নিয়েছিল সেচ বিভাগ। টেন্ডারও ডাকা হয়েছিল। কিন্তু এখনও কাজ শুরু হয়নি। এই পরিস্থিতিতে, বৃষ্টি হলেই বন্যা পরিস্থিতি তৈরি হওয়ার হাত থেকে কবে রেহাই মিলবে, সে নিয়ে সংশয়ে বাসিন্দারা।
সেচ দফতর সূত্রের খবর, বাঁকুড়া শহর লাগোয়া জুনবেদিয়ায় প্রায় চার কিলোমিটার লম্বা গন্ধেশ্বরীর খাল সংস্কার, শহরের সতীঘাট থেকে গন্ধেশ্বরী সেতু পর্যন্ত নদীর প্রায় ৭০০ মিটার অংশের মাটি তুলে জলধারণ ক্ষমতা বৃদ্ধি ও সতীঘাটের দিকে কয়েকশো মিটার পাড় বাঁধানোর পরিকল্পনা নিয়েছে রাজ্য।
সে অনুযায়ী, প্রায় সাড়ে চার কোটি টাকা বরাদ্দও করা হয়েছে। অথচ, এই প্রকল্প নেওয়ার পরে, প্রায় তিন মাস সময় কেটে গেলেও এখনও টেন্ডার প্রক্রিয়া সম্পূর্ণ করা হয়নি বলে অভিযোগ।
বাঁকুড়া সেচ বিভাগের এক কর্তার দাবি, ‘‘প্রকল্পের জন্য টেন্ডার ডাকা হয়েছে। সেখানে বহু আবেদন জমাও পড়েছে। তবে কিছু সমস্যার জন্য এখনও কাজ শুরু করা যাচ্ছে না।’’ কী সমস্যা, তা তিনি বিশদে জানাতে চাননি।
বর্ষায় ভারী বৃষ্টি হলেই গন্ধেশ্বরীর জল উপচে শহর ও লাগোয়া অঞ্চলের একাংশ প্লাবিত হয়। প্রতি বছর এমন ঘটনায় ক্ষতির মুখে পড়েন বাসিন্দারা। জলবন্দি অবস্থা হয় বাঁকুড়ার জুনবেদিয়া, কেশিয়াকোল, মলডুবকা, সতীঘাট, রামকৃষ্ণপল্লি-সহ নানা এলাকার। অনেক বাড়িতে জল ঢুকে ক্ষয়ক্ষতি হয়। ঘরবাড়ি ভেঙে পড়ার মতো ঘটনাও ঘটে। ভারী বর্ষণে বন্যা পরিস্থিতি তৈরির জন্য গন্ধেশ্বরীর নাব্যতা কমে যাওয়াকেই মূলত দায়ী করেন শহরের মানুষজন। নদীর নাব্যতা বাড়ানো, নানা জায়গা সংস্কার ও দখলমুক্ত করার দাবিতে আন্দোলও হয়েছে।
এই পরিস্থিতিতে, রাজ্যের তরফে নদীর নাব্যতা বাড়ানোর যে প্রকল্প নেওয়া হয়েছে, তা অবিলম্বে বাস্তবায়িত করার দাবি তুলছেন শহরের মানুষজন। বাঁকুড়ার বাসিন্দা বিবেক নন্দী, অমিয় সূত্রধরদের কথায়, “বাঁকুড়া শহরকে বন্যার হাত থেকে বাঁচাতে, অবিলম্বে গন্ধেশ্বরী নদীর সংস্কার প্রয়োজন। বর্ষা এলেই বন্যার ভয় তাড়া করে আমাদের। নদীর নাব্যতা বাড়লে সমস্যা অনেকটাই মিটবে বলে আশা রাখি।’’
জেলা সেচ দফতরের ওই কর্তার আশ্বাস, ‘‘টেন্ডারের প্রক্রিয়া শেষ হলেই দ্রুত কাজ শুরু করা হবে। আগামী বর্ষার আগে কাজ শেষ করার বিষয়ে আমরা আশাবাদী।’’