জাতীয় পরিবেশ আদালতের বিধি নিষেধ মেনে, কার্যত এ বার পৌষমেলায় শব্দ দানবকে বাক্স বন্দি করেছেন উদ্যোক্তারা!
এ বার তাই শব্দকে ভয় পেয়ে যাঁরা মেলা এড়িয়ে চলতেন, তাঁদের দেখা যাচ্ছে খুশি মনে পৌষমেলায় ঘুরতে। রামপুরহাটের বাসিন্দা বছর চুয়াত্তরের গোলকনাথ মুখোপাধ্যায়। ষাটের দশক থেকে তিনি মেলায় আসছেন। তিনি বলেন, ‘‘পৌষ উৎসব এবং তাকে ঘিরে মেলার টানে ফি বছর এলেও, নানা দূষণের কারণে মনে একটা কিন্তু ভাব ছিলই। এ বার বেশ ভাল লাগছে, শব্দের কোনও দাপট নেই দেখে।’’ অরিন্দম ঘোষ এসেছেন বর্ধমানের মেমারি থেকে। মেলায় নানা বিধি নিষেধের খবর গত কয়েক দিন ধরে তিনিও শুনেছেন। বেশ খুশিতে সপরিবার ঘুরছেন তিনি। অরিন্দমবাবু বলেন, ‘‘হাতের নাগালে থাকলেও, নানা শব্দের কারণে প্রয়োজনীয়ও কথা বলা দায় ছিল। অন্যান্য বারের তুলনায় বেশ ভাল পরিবেশ এ বার।’’
সত্তর ছুঁইছুঁই বহরমপুরের বাসিন্দা কাশীনাথ জোয়ারদারের অভিজ্ঞতা আবার অন্য। তিনি বলেন, ‘‘ইদানিং কালের এই ডিজের কারণে উৎসব অনুষ্ঠানে বাইরে বের হওয়া দায়। সে দিক থেকে দেখতে গেলে, এ বার উদ্যোক্তা এবং আদালতকে ধন্যবাদ দেব। শব্দ দানবের জেরে, বয়স্ক এবং অসুস্থদের সমস্যার কথা মাথায় রাখায়।’’
এ বার ডিজে কিংবা জেনারেটরের শব্দও উধাও। অন্যদিকে শিশুবান্ধব মেলায় শিশু শ্রম রুখতে উদ্যোগী সংশ্লিষ্ট সব পক্ষ। তাই ভিন রাজ্য থেকে মেলায় খেলা দেখাতে আসা শিশুদের আটক করে অভিভাবকদের নিয়ে চলছে পরামর্শ। উল্লেখ্য, রাজ্যে এই প্রথম কোনও মেলায় শিশুবান্ধব পরিকল্পনা নিয়েছেন সংশ্লিষ্ট সর্বপক্ষ। এ দিন রাজ্যের শিশু অধিকার সুরক্ষা আয়োগের চেয়ারপার্সন অনন্যা চক্রবর্তীর নেতৃত্বে একটি দল নজরদারি চালান মেলায়। ছত্তিসগড়ের বিলাসপুর থেকে মেলায় খেলা দেখাতে হাজির এক পরিবার। মাঠে শিশুদের এমন খেলা বন্ধ করেন ওই প্রতিনিধিরা।
অন্যদিকে বিশ্বভারতীর রীতি মেনে সকালে বিদ্যালয় স্তর পাঠভবন ও শিক্ষাসত্রের মাধ্যমিক ও উচ্চ মাধ্যমিক উত্তীর্ণদের নিদর্শন পত্র প্রদানের অনুষ্ঠান হয়েছে আম্রকুঞ্জেও। পৌষ উৎসবের দ্বিতীয় দিনে ভিড়ে ঠাসা ছিল ভুবনডাঙার মাঠ।