দু’পক্ষের বৈঠকে কাটলই না জট

সিউড়ির রড কারখানা খোলার ব্যাপারে মঙ্গলবারও সমাধান সূত্র পাওয়া গেল না। ফলে এ দিনও কারখানায় উৎপাদন শুরু করা যায়নি। স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, মজুরি বৃদ্ধির দাবিতে গত শুক্রবার থেকে সিউড়ির অমৃতপুরের রড কারখানার উৎপাদন বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে। ওই কারখানার ঠিকা শ্রমিকদের দাবি, কারখানা মালিক শ্রমিকদের দাবি মানতে চাইছেন না।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

সিউড়ি শেষ আপডেট: ১৭ জুন ২০১৫ ০১:২৩
Share:

সিউড়ির রড কারখানা খোলার ব্যাপারে মঙ্গলবারও সমাধান সূত্র পাওয়া গেল না। ফলে এ দিনও কারখানায় উৎপাদন শুরু করা যায়নি।

Advertisement

স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, মজুরি বৃদ্ধির দাবিতে গত শুক্রবার থেকে সিউড়ির অমৃতপুরের রড কারখানার উৎপাদন বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে। ওই কারখানার ঠিকা শ্রমিকদের দাবি, কারখানা মালিক শ্রমিকদের দাবি মানতে চাইছেন না। তিনি শুধু কারখানার স্বার্থ দেখছেন। এই কারখানার নিয়ম অনুযায়ী, তিন বছরের জন্য দৈনিক মজুরির হার ঠিক করা হয়। বর্তমানে ১৪৯ টাকা, ১৬০ টাকা ও ১৭০ টাকা দৈনিক মজুরি তিন রকমের ঠিকা শ্রমিকদের দেওয়া হয়। কিন্তু গত মার্চ মাসে তিন বছরের ওই চুক্তির মেয়াদ শেষ হয়েছে বলে শ্রমিকদের দাবি। তাঁদের অভিযোগ, তারপর থেকে তাঁরা মজুরি বৃদ্ধির দাবি জানিয়ে আসছেন। কিন্তু তা মানা হচ্ছে না বলে ক্ষোভ।

ঠিকা শ্রমিকদের দাবি, সবার ক্ষেত্রেই ১০০ টাকা করে দৈনিক মজুরি বাড়াতে হবে। এই নিয়ে গত শুক্রবার কারখানা কর্তৃপক্ষের সঙ্গে তিনটি শ্রমিক ইউনিয়নের বৈঠক হয়। কর্তৃপক্ষ তাঁদের দাবি মানতে চাননি বলে তাঁদের অভিযোগ। কারখানা মালিক নিখিল অগ্রবাল মাত্র ৩১ টাকা করে মজুরি বৃদ্ধিতে রাজি হন। এতে কর্মীদের একাংশ ক্ষুব্ধ হয়ে উৎপাদন বন্ধ করে দেন।

Advertisement

শ্রমিক সংগঠনগুলি সোমবারও কারখানা কর্তৃপক্ষের সঙ্গে বৈঠকে বসেন। কিন্তু নিখিলবাবু তাঁর ৩১ টাকা বৃদ্ধির অবস্থান থেকে না সরায় সে দিনও কারখানা খোলার ব্যাপারে কোনও সুরাহা হয়নি। ফের মঙ্গলবার কারখানা মালিকের সঙ্গে বৈঠকে বসেন তিনটি শ্রমিক সংগঠনের প্রতিনিধিরা। ঘণ্টাখানেক বৈঠক শেষে আইএনটিটিইউসির রাজু চক্রবর্তী, আইএনটিইউসির ভরত অঙ্কুর ও সিটুর শেখ আমরুলরা জানান, ‘‘কর্তৃপক্ষ বা মালিক কার্যত নিজের অবস্থান থেকে একটুও সরতে নারাজ। তাই এ দিনও কারখানায় উৎপাদন শুরু করা যায়নি। তাঁদের কথায়, ‘‘মালিক এ দিনের বৈঠকে জানিয়েদেন যে তিনি মাসে ১ হাজার টাকা করে প্রতিটি শ্রমিকের মজুরি বাড়াতে পারবেন। অর্থাৎ ২৬ দিনের পারিশ্রমিকের সঙ্গে ওই এক হাজার টাকা যোগ হবে। এবং কোনও অবস্থাতেই একজন শ্রমিককে তিনি ৫২০০ টাকার বেশি মাসে দিতে পারবেন না। আমরা এর প্রেক্ষিতেই শেষ পর্যন্ত মাসে চারদিন ছুটি-সহ ছ’হাজার টাকার দাবি জানিয়েছিলাম। কিন্তু মালিক কোনও কথা মানতে চাইছেন না। তাই শত চেষ্টা করেও এ দিনও কারখানা খোলা গেল না।’’

অন্যদিকে কারখানা মালিক নিখিলবাবু বলেন, ‘‘আমরা সরকারের শিল্প নীতি মেনেই মজুরি বৃদ্ধির প্রস্তাব দিয়েছিলাম। কিন্তু শ্রমিকরা বাড়তি মজুরির দাবিতে কারখানার উৎপাদন বন্ধ করে দিল। এটা তাঁরা ঠিক করলেন না। তাঁদের দাবি মতো পারিশ্রমিক বাড়ালে তিন মাস পর কারখানা বন্ধ করে দিতে হবে। কিন্তু আমরা চাই কারখানা দীর্ঘদিন চলুক। তাতে উভয় পক্ষেরই ভাল। এটা শ্রমিকদেরও বুঝতে হবে।’’

জেলাশাসক পি মোহন গাঁধী বলেন, ‘‘বিষয়টি গুরুত্ব সহকারে দেখা হচ্ছে।’’ জেলা সভাধিপতি বিকাশরঞ্জন রায়চৌধুরী বলেন, ‘‘উভয়পক্ষের সঙ্গে আলোচনা সাপেক্ষে ব্যবস্থা নেওয়া হবে। কারখানার উৎপাদন তাড়াতাড়ি শুরু হোক, আমরাও চাই। আসা করি দু’-এক দিনের মধ্যেই সমস্যার সমাধান হয়ে যাবে।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন