অল্প বয়সে বিয়ে দেওয়া উচিত নয়। পুলিশ প্রশাসনের তরফ থেকে মেয়ে ও ছেলের পরিবারকে বোঝানো হচ্ছে। কিন্তু তাতেও রাজি নন দুই পরিবারের লোকজন। এই অবস্থায় প্রশাসনও হাল ছাড়তে রাজি নয়। নাবালিকা বিয়ে বন্ধের জন্য চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছেন প্রশাসনিক কর্তারা। সাঁইথিয়া শহরের ঘটনা। বিডিও অতনু ঝুরি বলেন, ‘‘বুধবার ওই নাবালিকা মেয়েটির বিয়ের খবর পাওয়ার সঙ্গে সঙ্গে ব্লক থেকে লোকজন ছেলে ও মেয়ের বাড়ি যায়। উভয় পক্ষকে বোঝানোর চেষ্টা চলছে। যে ভাবেই হোক বুঝিয়ে বিয়েটা আটকাতে হবে। না হলে মেয়েটার ক্ষতি হয়ে যাবে।’’
পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, আজ বৃহস্পতিবার ওই নাবালিকা মেয়ের বিয়ের ঠিক হয় একই থানার এলাকার বাসিন্দা এক তরুণের সঙ্গে। সেই খবর জানতে পেরে বুধবার সকালে সঙ্গে সঙ্গে মেয়ের বাড়িতে মহিলা পুলিশ কর্মীদের নিয়ে ওসি দেবব্রত সিংহ হাজির হন। পুলিশ মেয়ের মা-বাবা ও পরিবারের সকলকে নানাভাবে বোঝানোর চেষ্টা করেন যে, ১৮ বছরের আগে কোনওভাবেই মেয়ের বিয়ে দেওয়া উচিৎ নয়। কিন্তু বিয়েতে পুলিশ বা প্রশাসনের আপত্তি কিছুতেই মানতে চাইছেন না মেয়ের মা-বাবা। পুলিশ জানায়, বিষয়টি সাঁইথিয়ার বিডিওকেও জানানো হয়েছে। ওসি বলেন, ‘‘সামাজের স্বার্থে ও মেয়েটির ভালর জন্য যে ভাবেই হোক বুঝিয়ে এই বিয়ে আটকাতেই হবে। মেয়ের বাড়ির পাশাপাশি ছেলের বাড়িতেও বোঝানোর চেষ্টা চলছে। কারণ, ছেলেটির বয়সও ১৮।’’ বিডিও বলেন, ‘‘এ দিন ওই নাবালিকা মেয়েটির বিয়ের খবর পাওয়ার সঙ্গে সঙ্গে ব্লক থেকে লোকজন ছেলে ও মেয়ের বাড়ি যায়। উভয় পক্ষকে বোঝানোর চেষ্টা চলছে। যে ভাবেই হোক বুঝিয়ে বিয়েটা আটকাতে হবে।’’
মেয়ের মা-বাবার কথায়, ‘‘আমরা দিনমজুর। বহু কষ্টে মেয়ের বিয়ে দিচ্ছি। নিমন্ত্রণ থেকে শুরু করে সমস্ত কিছু জোগাড় হয়ে গিয়েছে। এখন আর কোনওভাবেই পিছিয়ে আশা সম্ভব নয়। তাই পুলিশ ও প্রশাসনের কাছে অনুরোধ করেছি যাতে এই বিয়েতে বাধা না দেয়। কিন্তু পুলিশ বা প্রশাসনের লোকজন মানতে চাইছেন না। তাই এখন ভেবে কুল পাচ্ছি না কী করব।’’ অন্য দিকে, ছেলের বাবার কথায়, ‘‘ছেলে পাঁচামি এলাকায় পাথর খাদানে কাজ করে। বয়স ১৮-১৯ হবে। আমাদের সমাজে ছেলে মেয়েদের অল্প বয়সে বিয়ে দেওয়ার রেওয়াজ আছে। আমরা অতআইন কানুন জানি না। তাই বিয়ের ঠিক করেছিলাম। পুলিশের ও ব্লকের লোকজন এসে বলছে, কোনওমতেই এই বিয়ে দেওয়া যাবে না। এখন কী করব ভেবে পাচ্ছি না।’’