অবরোধ আর মিছিলে দিনভর উত্তপ্ত জেলা

পুরুলিয়ার বিরোধী বিধায়ক কংগ্রেসের সুদীপ মুখোপাধ্যায়ের গ্রেফতারি ঘিরে রাজনৈতিক তরজা শুরু হয়ে গিয়েছে জেলায়। এ দিন বিধায়ক সুদীপ মুখোপাধ্যায়কে আদালতে তোলার আগে তিনি বলেন, ‘‘দুর্নীতির প্রতিবাদ করেছি বলেই আমাকে গ্রেফতার করে জেলে পাঠানো হল।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

পুরুলিয়া শেষ আপডেট: ২২ জানুয়ারি ২০১৭ ০১:০৩
Share:

বিধায়ককে গ্রেফতারের প্রতিবাদে জাতীয় সড়ক অবরোধ। পুরুলিয়ার হুটমুড়ায় তোলা নিজস্ব চিত্র।

পুরুলিয়ার বিরোধী বিধায়ক কংগ্রেসের সুদীপ মুখোপাধ্যায়ের গ্রেফতারি ঘিরে রাজনৈতিক তরজা শুরু হয়ে গিয়েছে জেলায়। এ দিন বিধায়ক সুদীপ মুখোপাধ্যায়কে আদালতে তোলার আগে তিনি বলেন, ‘‘দুর্নীতির প্রতিবাদ করেছি বলেই আমাকে গ্রেফতার করে জেলে পাঠানো হল। তবে আমার মুখ বন্ধ করা যাবে না। পুরসভার দুর্নীতির বিষয়গুলি আমি প্রকাশ্যে আনবই। জনগনের টাকা যে ভাবে ভুয়ো বিল করে লুট করা হচ্ছে তা বন্ধ করাতে লড়াই চলবে।’’

Advertisement

বিধায়কের অভিযোগ অবশ্য উড়িয়ে দিয়েছেন পুরপ্রধান কে পি সিংহ দেও। তিনি বলেন, ‘‘উনি কোনও বিষয়ে আপত্তি বা প্রতিবাদ করতেই পারেন। কিন্তু সেটার তো একটা পদ্ধতি থাকবে। তথ্য জানার আইনের সাহায্য নিতে পারতেন।’’ পুরপ্রধানের দাবি, তাঁর অসুস্থতার কারণে ইদানীং বোর্ড মিটিং খানিকটা অনিয়মিত হয়ে পড়লেও বেশির ভাগ কাউন্সিলরদের নিয়ে বৈঠক হচ্ছে।

গ্রেফতারের পরেই কংগ্রেস ও সিপিএমের পক্ষ থেকে বিষয়টিকে প্রতিহিংসার রাজনীতি বলে দাবি করে আসা হয়েছে। জেলা কংগ্রেস সভাপতি নেপাল মাহাতো বলেন, ‘‘দুর্নীতি নিয়ে প্রতিবাদে সরব হয়েছিল বলেই সুদীপকে গ্রেফতার করা হয়েছে। পুরসভার বিরোধী দলনেতা হিসেবে ও একাধিকবার প্রশাসনিক স্তরে, পুর ও নগরোন্নয়ন মন্ত্রীর কাছে এবং ওই দফতরের সচিবের কাছে দুর্নীতি নিয়ে অভিযোগ করেছে। কেউই সাড়া দেয়নি। দুর্নীতির বিষয়টি নজরে আনতেই ও পুরসভায় গিয়ে জানতে চেয়েছিল। সেই প্রতিবাদের জন্য ওকে ফাঁসানো হয়েছে।’’ নেপালবাবুর দাবি, এই গ্রেফতার নিয়ে কংগ্রেস বিচলিত নয়। কংগ্রেস এই নিয়ে আন্দোলন তীব্র করবে। ২৫ জানুয়ারী শহরে প্রতিবাদ মিছিলের ডাক দেওয়া হয়েছে বলে তিনি জানান। তবে বিধায়ক কেন চেকবই ও নথি তুলে নিয়ে গিয়েছিলেন তা নিয়ে কোনও উত্তর দেননি নেপালবাবু।

Advertisement

তবে সিপিএমের জেলা সম্পাদকমণ্ডলীর সদস্য তথা প্রাক্তন পুরপ্রধান কৃষ্ণপদ বিশ্বাস এই গ্রেফতারি প্রসঙ্গে পুরসভার সাম্প্রতিক একটি ঘটনার প্রসঙ্গ টেনে এনেছেন। তিনি বলেন, ‘‘কয়েক মাস আগে এই পুরসভাতেই রেজোলিউশন খাতার পাতা ছিঁড়ে দেওয়ার অভিযোগ উঠেছে। সবাই জানত কে ওই কাজ করেছে। কিন্তু শাসক দল নিজেদের আড়াল করতেই অজ্ঞাত পরিচয়ের বিরুদ্ধে অভিযোগ দায়ের করে। পুলিশও নামেই তদন্ত করে ছেড়ে দেয়। কিন্তু এ বারে অভিযোগ পাওয়া মাত্রই সটান রেলের অনুষ্ঠান থেকে এক বিধায়ককে আটক করে নিয়ে আসা হল।’’ তাঁরও অভিযোগ, দুর্নীতির প্রতিবাদের জন্যই বিধায়ককে ফাঁসানো হয়েছে।

তৃণমূলের জেলা সভাপতি শান্তিরাম মাহাতো এ দিন বলেন, ‘‘এটা মোটেই প্রতিহিংসার রাজনীতি নয়। পুরসভার চেকবই ও কাগজপত্র নিয়ে গিয়েছিলেন বিধায়ক। এটা নিছক আইনের বিষয়।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন