৯ বছর আগের সেই ঘটনা এখনও অনেকের মনে টাটকা। দুর্গাপ্রতিমার বিসর্জনের শোভাযাত্রায় বহিরাগতদের নাচকে কেন্দ্র করে রামপুরহাট শহরে রাতভোর বিশৃঙ্খলা হয়েছিল। তার পরে গঠিত হয়েছিল শহর দুর্গাপুজা সমন্বয় কমিটি। রবিবার শহরের ৭৯টি পুজো কমিটিকে নিয়ে বৈঠক করল সেই কমিটি। বৈঠক থেকে একাধিক বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেওয়ার পাশাপাশি পুজো মণ্ডপে রুচিশীল সঙ্গীত বাজানোর অনুরোধ রাখা হয়েছে। তা না মানলে রয়েছে শাস্তির হুঁশিয়ারিও।
শহরের প্রতিটি পুজো কমিটিকে একছাতার তলায় আনতেও উদ্যোগী হয়েছে। সমন্বয় কমিটির দাবি, শহরের প্রতিটি পুজো মণ্ডপের পাশে দাঁড়িয়ে শারদ উৎসবে শান্তি শৃঙ্খলা ও সুস্থ পরিবেশ বজায় রাখার চেষ্টা করেন তারা। এ দিনের বৈঠক হয় শহরের প্রাচীন দুর্গামণ্ডপ মণ্ডল বাড়ির ঠাকুর দালানে। সেখানে প্রতিটি পুজো কমিটিকে পুলিশ, প্রশাসনের নির্দেশ মেনে সহযোগিতা করার আর্জি রাখা হয়েছে।
সমন্বয় কমিটির সভাপতি রাজকুমার দাসের কথায়, ‘‘পুজো মণ্ডপে অনেক সময় কুরুচিকর গান বাজানো হয়। শহরের বাসিন্দাদের অনেকেই আমাদের কাছে এ নিয়ে দীর্ঘ দিন ধরে অভিযোগ জানিয়ে এসেছেন। আমরাও চাই এ বারে প্রতিটি মণ্ডপে পুজোর ক’টা দিন রুচিশীল গান বাজানো হোক। এ ব্যাপারে সমস্ত পুজো কমিটিকে আর্জি জানানো হয়েছে।’’ পুজো কমিটির সদস্যরা যেন কোনও কিছুতেই আইন নিজের হাতে তুলে না নিয়ে প্রশাসন এবং সমন্বয় কমিটির কাছে বিষয়টি আগাম জানায়, সে কথাও রবিবারের বৈঠকে জানিয়ে দেওয়া হয়েছে বলে সমন্বয় কমিটির দাবি। কমিটির সম্পাদক নিরঞ্জন বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, ‘‘আমরা শুনেছি রামপুরহাটে বর্তমানে ৩২টি পুজোর সরকারি অনুমোদন আছে। অথচ এ বছরে ৭৯টি পুজো হবে। প্রতিটি পুজোর সরকারি অনুমোদন যেন জেলা প্রশাসন থেকে ব্যবস্থা করা হয়, সে ব্যাপারে জেলাশাসকের কাছে আবেদন জানানো হয়েছে।’’
কমিটির কার্যকরী সভাপতি দেবব্রত দাস জানান, পুজোর দিনগুলিতে রাস্তাঘাট পরিস্কার-পরিচ্ছন্ন রাখা, দোলাভরার ঘাট এবং প্রতিমা নিরঞ্জনের ঘাটগুলি পরিস্কার রাখার জন্য পুরসভার কাছে আবেদন জানানো হয়েছে। এ ছাড়া বিদ্যুৎ দফতরকে রাস্তার উপরে এবং প্রতিমা নিরঞ্জনের ঘাটে ঝুলে থাকা বৈদ্যুতিন তার উঁচু করে দেওয়ার জন্য আবেদন জানানো হয়েছে। একইসঙ্গে দিনে-রাতে রাস্তাঘাটে অপ্রকৃতিস্থ অবস্থায় ঘোরাঘুরি করা এবং অশালীন আচরণের বিষয়ে পুলিশ, প্রশাসন এবং আবগারি দফতরকে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিতে বলা হয়েছে। মনে করানো হয়েছে ট্রাফিক আইন মেনে চলার ব্যাপারও। এ ব্যাপারে রাস্তায় নেমে নজর রাখবে সিভিক ভলান্টিয়ার থেকে পুলিশও।