Pull Car

রান্নার গ্যাসে চলছিল পুলকার, ধরল পুলিশ

মঙ্গলবার রামপুরহাট মহকুমাশাসকের উপস্থিতিতে অভিযানের পরে এমন আটটি পুলকার বাজেয়াপ্ত করল মহকুমা পরিবহণ দফতর।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

রামপুরহাট  ও সিউড়ি শেষ আপডেট: ২৬ ফেব্রুয়ারি ২০২০ ০৩:০৭
Share:

পুলকার চলছে রান্নার গ্যাসে। ধরলেন মহকুমাশাসক, পরিবহণ আধিকারিকেরা (উপরে)। সিউড়ির হুসনাবাদ সংলগ্ন স্কুলে। নিজস্ব চিত্র

রান্নার গ্যাস সিলিন্ডার ব্যবহার করেই দিব্য চলছে পুলকার। মঙ্গলবার রামপুরহাট মহকুমাশাসকের উপস্থিতিতে অভিযানের পরে এমন আটটি পুলকার বাজেয়াপ্ত করল মহকুমা পরিবহণ দফতর। অভিযান হয়েছে সিউড়ি ১ ব্লকের অন্তর্গত একটি বেসরকারি ইংরেজি মাধ্যম স্কুলেও।

Advertisement

রামপুরহাট মহকুমা পরিবহণ আধিকারিক দেবাশিস ঘোষ জানান, এ দিন সকালে রামপুরহাটের বনহাট পঞ্চায়েত এলাকার একটি বেসরকারি ইংরেজি মাধ্যম এবং খরুণ পঞ্চায়েত এলাকার আর একটি বেসরকারি ইংরেজি মাধ্যম স্কুল সহ পুরসভার ভিতরে একটি ইংরেজি মাধ্যম স্কুলে অভিযান চালানো হয়। ওই অভিযানে ৮টি গাড়ি, যেগুলি রান্নার গ্যাসে চলছিল সেগুলিকে বাজেয়াপ্ত করা হয়েছে। তার মধ্যে বনহাট গ্রাম পঞ্চায়েত এলাকার বেসরকারি ইংরেজি মাধ্যমের পড়ুয়াদের ছটি গাড়ি আছে। একটি গাড়ি খরুণ পঞ্চায়েত এলাকার বেসরকারি স্কুলের। অন্য একটি গাড়ি রামপুরহাট পুর এলাকার একটি বেসরকারি স্কুলের পড়ুয়াদের নিয়ে যাতায়াত করে।

রামপুরহাট মহকুমাশাসক শ্বেতা আগরওয়াল বলেন, ‘‘যে সমস্ত গাড়িগুলি আটক করা হয়েছে সেই গাড়িতে আট, দশ জন করে পড়ুয়া যাতায়াত করে। গাড়িগুলি বিপজ্জনক ভাবে রান্না করা সিলিন্ডার গ্যাস ব্যবহার করে চলছিল। এর ফলে যে কোনও সময় বড় দুর্ঘটনা ঘটার সম্ভাবনা ছিল।’’ রামপুরহাট থানার বনহাট এলাকার বেসরকারি ইংরেজি মাধ্যম অধ্যক্ষ দাবি করেছেন, ‘‘স্কুলের নিজস্ব গাড়িগুলি ঠিক আছে। অন্য যে সমস্ত গাড়ি স্কুলের পড়ুয়াদের নিয়ে যাতায়াত করে সেই সমস্ত গাড়ির চালকদের গাড়িতে রান্নার গ্যাস সিলিন্ডার ব্যবহার না করার জন্য অনেক আগেই বলা হয়েছিল। প্রশাসনের নির্দেশ মেনে গাড়ি চালকদের সতর্ক করে দেওয়া হবে।’’

Advertisement

পোলবার দুর্ঘটনার পরেই জেলা জুড়ে স্কুল গাড়ির স্বাস্থ্য পরীক্ষায় নেমেছে জেলা পরিবহণ দফতর। দিন আটেক আগেই নগরী পঞ্চায়েতের এক বেসরকারি ইংরেজি মাধ্যম স্কুলে গাড়ির স্বাস্থ্য পরীক্ষা করে পুলিশ ও পরিবহণ দফতর। এ দিন সিউড়ি ১ ব্লকের আরও একটি বেসরকারি ইংরেজি মাধ্যম স্কুলে গাড়ির স্বাস্থ্য পরীক্ষা করেন পরিবহণ এবং ট্রাফিক পুলিশের কর্তারা। যদিও পোলবার ঘটনার প্রেক্ষিতে এই তৎপরতা তা মানতে নারাজ পরিবহণ দফতরের কর্তারা। তাঁদের দাবি, পড়ুয়াদের নিরাপত্তার স্বার্থে আগেই গাড়িগুলির স্বাস্থ্য পরীক্ষার নির্দেশ দেন জেলাশাসক। সেই মর্মেই এই উদ্যোগ। পরিবহণ আধিকারিক মৃন্ময় মজুমদার বলেন, ‘‘এ দিন ওই স্কুলে মোট ৬টি গাড়ির স্বাস্থ্য পরীক্ষা করা হয়েছে। রামপুরহাটেও স্কুলে স্কুলে গিয়ে গাড়ির স্বাস্থ্য পরীক্ষার কাজ চলছে।’’

জেলা পরিবহণ দফতর সূত্রে জানা গিয়েছে, এ দিন বেলা সাড়ে ১২টা নাগাদ পরিবহণ দফতরের দু’জন আধিকারিক এবং ট্রাফিক পুলিশের কর্মীরা ওই স্কুলে পৌঁছন। স্কুলের প্রায় ছ’টি গাড়ির স্বাস্থ্য পরীক্ষা করেন। গাড়ির স্পিড লিমিট মেশিন আছে কিনা, ইঞ্জিন ঠিক আছে কিনা, গাড়ির সামনের কাচের কী অবস্থা সহ গাড়ির স্বাস্থ্যের সমস্ত দিক খতিয়ে দেখেন। পরিবহণ দফতর সূত্রে জানা গিয়েছে, ছ’টি গাড়ির মধ্যে দু’টির ফিটনেস সার্টিফিকেটের মেয়াদ ফুরিয়েছে। তাই স্কুলগুলিকে আজ, বুধবার পরিবহণ দফতরের কাছে গাড়ির ফিটনেস সংক্রান্ত রিপোর্ট জমা দেওয়ার জন্য নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।

পোলবার ঘটনার ঠিক পরেই জেলার মুরারইয়ে একটি বেসরকারি স্কুল বাসের পাটাতন খুলে এক ছাত্রীর নীচে পড়ে যাওয়ার ঘটনার পরেই স্কুলগাড়িগুলির স্বাস্থ্য নিয়ে নানা প্রশ্ন উঠতে শুরু করে। এই অবস্থায় পরিবহণ দফতরের এই উদ্যোগে পড়ুয়াদের নিরাপত্তা কিছুটা হলেও নিশ্চিত হবে বলে মত অভিভাবকদের একাংশের। এ দিন গাড়ির স্বাস্থ্য পরীক্ষার পাশাপাশি সিউড়ি ট্রাফিক পুলিশের পক্ষ থেকে প্রতিটি গাড়িতে ‘সেভ ড্রাইভ, সেফ লাইফ’-এর স্টিকার লাগানো হয় এবং চালকদের পথ নিরাপত্তা সম্পর্কে সচেতন করা হয়।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন