জিন বাধা পেরিয়ে সাইকেলে

পুরুলিয়ার ঝালদার গুড়িডি গ্রামের আকাশ মাহাতো ‘মাসকুলার ডিসট্রফি’ রোগে আক্রান্ত। এই রোগ বাড়লে হাঁটাচলার ক্ষমতা চলে যায়।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

পুরুলিয়া শেষ আপডেট: ০৪ জানুয়ারি ২০১৮ ০৪:৫৫
Share:

আকাশ। ছবি: সুজিত মাহাতো

উঠোনে আছাড় খেয়েছিল বছর বারোর ছেলে। গুরুত্ব দেননি বড়রা। হাঁটুতে ব্যথা বললে দৌড়ঝাঁপেই ও সব হচ্ছে, ভাবতেন সবাই। কিন্তু ছেলেটিকে দেওয়াল ধরে সিঁড়ি ভাঙতে দেখে খটকা লাগে। চিকিৎসা শুরু হলেও উপকার হয়নি।

Advertisement

পরে জানা যায়, পুরুলিয়ার ঝালদার গুড়িডি গ্রামের আকাশ মাহাতো ‘মাসকুলার ডিসট্রফি’ রোগে আক্রান্ত। এই রোগ বাড়লে হাঁটাচলার ক্ষমতা চলে যায়। সেই ছেলে তাঁদের কাছে এক বছরের কম সময়ে সুস্থ হয়ে উঠেছে বলে বুধবার পুরুলিয়ায় সাংবাদিক বৈঠকে দাবি করলেন মুম্বইয়ের একটি বেসরকারি স্নায়ু ও মস্তিষ্কের হাসপাতালের চিকিৎসক তথা মেডিক্যাল সার্ভিস বিভাগের প্রধান নন্দিনী গোকুলচন্দ্রন। তাঁর দাবি, প্রতি তিন হাজারে এক জন এই রোগে অসুস্থ।

চিকিৎসার জন্য বোকারো, রাঁচীর হাসপাতাল থেকে শুরু করে, দিল্লির এইমসেও আকাশকে নিয়ে যায় পরিবার। ইন্টারনেটে তারা জানতে পারে, নভি মুম্বইয়ের এক বেসরকারি হাসপাতালে এর চিকিৎসা হয়। প্রথমে ওই হাসপাতালের কলকাতার শিবিরে আকাশকে নিয়ে যাওয়া হয়। তার পরে মুম্বইয়ে নিয়ে গিয়ে ‘স্টেম সেল থেরাপি’ হয়। সঙ্গে ব্যায়াম। নন্দিনী বলেন, ‘‘মাসকুলার ডিসট্রফি আক্রান্তের পেশির কর্মক্ষমতা ক্রমশ হ্রাস পায়। অপুষ্টিজনিত কারণে বা বংশগত কারণে এই রোগ থাবা বসায়।’’ প্রচার না থাকায় অনেকে ‘পোলিও’ বলে ভুল করেন।

Advertisement

কী ভাবে হয়েছে চিকিৎসা? হাসপাতালের ওয়েবসাইট বলছে, রোগীর কোমর থেকে মজ্জা (‌বোন ম্যারো) নিয়ে তা দিয়ে ‘স্টেম সেল’ তৈরি করা হয়। পরে তা ইঞ্জেকশনের মাধ্যমে রোগীর পেশিতে দেওয়া হয়। কলকাতার ‘ইনস্টিটিউট অব চাইল্ড হেলথ’-এর শিশুরোগ চিকিৎসক খেয়া ঘোষ উত্তম বলেন, ‘‘এই রোগ সম্পর্কে মানুষ তত সচেতন নয়। চিকিৎসায় অনেক সময় মায়ের কোমর থেকেও স্টেম সেল নিয়ে সন্তানের দেহে প্রতিস্থাপন করা হয়।’’ নন্দিনীদেবী জানান, চিকিৎসার খরচ প্রায় দু’লক্ষ টাকা। তবে গরিবদের জন্য সরকারি সহায়তা আছে। কলকাতায় ২০ জানুয়ারি শিবির করার কথা তাঁদের।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন