Khatra

দুর্নীতির নালিশ তুলে বিক্ষোভ খাতড়ায়

রাজনৈতিক প্রভাব খাটিয়ে কংসাবতী ক্যানাল বিভাগ (২)-এর দফতরে নিজের আত্মীয়দের নামে একচেটিয়া ভাবে ঠিকাদারি পাইয়ে দেওয়ার মৌখিক অভিযোগ তুললেন অন্য ঠিকাদারেরা।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা 

খাতড়া শেষ আপডেট: ০১ জানুয়ারি ২০২১ ০২:৪৫
Share:

বিক্ষোভ চলছে। নিজস্ব চিত্র।

তিনি বিজেপিতে যোগ দিয়েছেন বলে গুঞ্জন শোনা গেলেও নিজে থেকে তা স্পষ্ট করেননি। খাতড়ার পঞ্চায়েত সমিতির সভাপতি সেই জয়ন্ত মিত্রের বিরুদ্ধে এ বার রাজনৈতিক প্রভাব খাটিয়ে কংসাবতী ক্যানাল বিভাগ (২)-এর দফতরে নিজের আত্মীয়দের নামে একচেটিয়া ভাবে ঠিকাদারি পাইয়ে দেওয়ার মৌখিক অভিযোগ তুললেন অন্য ঠিকাদারেরা। এ নিয়ে ওই দফতরের কিছু আধিকারিকের বিরুদ্ধে যোগসাজসের অভিযোগ তুলে বৃহস্পতিবার কংসাবতী ক্যানাল বিভাগ (২)-এর দফতরে বিক্ষোভ দেখালেন প্রায় ৫০ জন ঠিকাদার।

Advertisement

যদিও জয়ন্তবাবুর দাবি, তিনি গত পাঁচ বছর ধরে খাতড়া মহকুমায় ঠিকাদারি কাজ করেননি। অভিযোগও তিনি মানতে চাননি। কংসাবতী ক্যানাল বিভাগ (২)-এর এগজ়িকিউটিভ ইঞ্জিনিয়ার অসিত দত্তকে বারবার ফোন করেও তাঁর জবাব মেলেনি। উত্তর আসেনি মেসেজের।

পরে ঠিকাদারেরা এসডিও-র (খাতড়া) কাছে এ নিয়ে স্মারকলিপি দেন। এসডিও (খাতড়া) রবি রঞ্জন বলেন, ‘‘ঠিকাদারদের কাছ থেকে একটি অভিযোগ পেয়েছি। পুরো বিষয়টি তদন্ত করে দেখা হচ্ছে।’’

Advertisement

এক সময়ে কংগ্রেস থেকে তৃণমূলে আসা জয়ন্তবাবু তৃণমূলের জেলা কমিটিতে রয়েছেন। সম্প্রতি মেদিনীপুরে অমিত শাহের সভায় তিনি বিজেপিতে যোগ দিয়েছেন বলে ঘোষণা করা হয়। যদিও সে দিনই জয়ন্তবাবু দাবি করেন, তিনি বিজেপিতে যাননি। তবে গুঞ্জন রটে যায়, তিনি বিজেপিতেই গিয়েছেন। তবে জয়ন্তবাবুকে এ দিন এ নিয়ে জানতে চাওয়া হলে, তিনি ফোন কেটে দেন।

এই পরিস্থিতিতে এ দিন দুপুর ১২টা নাগাদ কয়েকশো ঠিকাদার কংসাবতীর ওই অফিসে গিয়ে বিক্ষোভ দেখানো শুরু করেন। তাঁদের মধ্যে শুভেন্দু বন্দ্যোপাধ্যায়, নির্মল বন্দ্যোপাধ্যায়, পিন্টু দাসেরা অভিযোগ করেন, ‘‘বর্তমান শাসকদল ক্ষমতায় আসার পর থেকে কংসাবতী বিভাগের কোনও কাজ আমরা ঠিকাদারেরা পাচ্ছি না। যাঁরা তিন-চার বছর আগে অল্প কিছু কাজ পেয়েছেন, তাঁরা এখনও টাকা পাননি। অথচ, কাজের খোঁজে ওই অফিস গেলে, বলা হচ্ছে, কাজ নেই।’’

তাঁদের দাবি, এ দিন প্রায় ৫০ জন ঠিকাদার ওই অফিসে গিয়ে দেখেন, দুই কর্মী চলতি ডিসেম্বর মাসের জন্য প্রায় সাড়ে ১৭ কোটি টাকার কাজ হয়েছে বলে বিল করছেন। ঠিকাদারদের অভিযোগ, ২০১৯-’২০ অর্থবর্ষে প্রায় ২৭ কোটি টাকার কাজ হয়েছে বেআইনি ভাবে। সাধারণ ঠিকাদারেরা কাজ না পেলেও জয়ন্ত মিত্র ও তাঁর একাধিক আত্মীয়ের নামে কাজ দেওয়া হয়েছে। তবে এসডিও-র কাছে জমা করা অভিযোগপত্রে তাঁরা জয়ন্তবাবুর নাম উল্লেখ করেননি।

জয়ন্ত মিত্রের দাবি, ‘‘সরকারি কাজ নিয়ম মেনেই হয়। কাগজপত্র দেখলেই তা বোঝা যাবে। তা ছাড়া, গত পাঁচ বছর খাতড়া মহকুমায় আমি নিজে কোনও কাজ করিনি। অভিযোগ ঠিক নয়। খাতড়ার অনেক ঠিকাদারই কাজ পাচ্ছেন বলেই জানি।’’

জেলা তৃণমূল সভাপতি তথা রাজ্যের প্রতিমন্ত্রী শ্যামল সাঁতরা বলেন, ‘‘টেন্ডারে দুর্নীতি হয়েছে কি না, তা নিয়ে কংসাবতী দফতরের সঙ্গে কথা বলব। আমরা দলতন্ত্র করি না। তবে কোথাও কোনও সমস্যা হয়ে থাকলে, পদক্ষেপ করা হবে।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন