‘নো সিএবি, নো এনআরসি’

রেল অবরোধ, বিক্ষোভ মিছিল

রেল সূত্রে খবর, মুরারইয়ের বিক্ষোভের জেরে বর্ধমান-তিনপাহাড় প্যাসেঞ্জার ট্রেন এগারো মিনিট দাঁড়িয়ে যায়। ডাউন শতাব্দী এক্সপ্রেসও বাঁশলৈ স্টেশন ছেড়ে কিছু সময় দাঁড়িয়ে ছিল। রেলের নলহাটি আরপিএফ ওসি প্রবীরকুমার গুপ্ত বলেন, ‘‘কিছু সময় অবরোধ হয়েছিল। লাইনের উপরে আগুন জ্বালালে আমরা সেই আগুন নিভিয়ে দিয়েছিলাম। পরে আলোচনা করে অবরোধ তুলে দেওয়া হয়।’’  

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা 

মুরারই ও সিউড়ি শেষ আপডেট: ১৩ ডিসেম্বর ২০১৯ ০১:৪২
Share:

অবরোধ: মুরারইয়ে রেল অবরোধ। ছবি: তন্ময় দত্ত

নাগরিকত্ব সংশোধনী বিল (সিএবি) ও জাতীয় নাগরিক পঞ্জি-র (এনআরসি) প্রতিবাদের ঢেউ এল জেলাতেও। বৃহস্পতিবার সকালে মুরারইয়ে বাইশ মিনিট রেল অবরোধ করেন দুই স্বেচ্ছাসেবী সংস্থার কর্মীরা। লাইনের উপরে টায়ারে আগুন জ্বালিয়ে দেখানো হয় বিক্ষোভও। জমিয়তে-উলামায়ে-হিন্দের তরফে আজ, শুক্রবার সদাইপুর থানা এলাকাতেও বিক্ষোভ-কর্মসূচি রয়েছে।

Advertisement

রেল সূত্রে খবর, মুরারইয়ের বিক্ষোভের জেরে বর্ধমান-তিনপাহাড় প্যাসেঞ্জার ট্রেন এগারো মিনিট দাঁড়িয়ে যায়। ডাউন শতাব্দী এক্সপ্রেসও বাঁশলৈ স্টেশন ছেড়ে কিছু সময় দাঁড়িয়ে ছিল। রেলের নলহাটি আরপিএফ ওসি প্রবীরকুমার গুপ্ত বলেন, ‘‘কিছু সময় অবরোধ হয়েছিল। লাইনের উপরে আগুন জ্বালালে আমরা সেই আগুন নিভিয়ে দিয়েছিলাম। পরে আলোচনা করে অবরোধ তুলে দেওয়া হয়।’’

প্রতিবাদে শামিল স্বেচ্ছাসেবী সংস্থার কর্মীদের দাবি, ক্যাব ও এনআরসি-র মাধ্যমে সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের অধিকার ছিনিয়ে নেওয়ার চেষ্টা করছে কেন্দ্রীয় সরকার। এর প্রতিবাদে মুরারই নতুন বাজার থেকে কয়েক হাজার কর্মীকে নিয়ে মিছিল শুরু হয়। ১০.২০ নাগাদ মুরারই রেলগেটের সামনের রেললাইনে বসে শুরু হয় অবরোধ। মিছিলে এমআইএম-এর নেতা তাসির শেখকেও দেখা গিয়েছে। তাঁর বক্তব্য, ‘‘মিছিলে আমাদের অনেক নেতাকর্মী ছিলেন। কেন্দ্রীয় সরকারের জনবিরোধী নীতির বিরুদ্ধে আমাদের এই আন্দোলন। বিল প্রত্যাহার না-করলে আন্দোলন চলবে।’’ সংস্থার কর্মী মহম্মদ রিপন, মেহবুব হক ও আব্দুল মান্নানরা বলেন, ‘‘আমরা দীর্ঘ দিন এই দেশে রয়েছি। ক্যাব ও এনআরসি প্রত্যাহার করতে হবে। এই বিলে সব সম্প্রদায়ের সুবিধে, অসুবিধের উল্লেখ থাকলেও শুধু একটি সংখ্যালঘু সম্প্রদায়কে বিল থেকে বাতিল করা হয়েছে। অবিলম্বে বিল বাতিল না-করলে আমরা বৃহত্তর আন্দলনে নামব।’’

Advertisement

নাগরিকত্ব সংশোধনী বিলের প্রতিবাদে অগ্নিগর্ভ হয়েছে অসম ও ত্রিপুরা। সংসদে যখন এই বিল পাশ করাতে বিজেপি তথা এনডিএ তখন বিজেপি শাসিত দুই রাজ্যেই একাধিক বাস ও গাড়িতে অগ্নিসংযোগের ঘটনা ঘটেছে। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে ত্রিপুরায় গুলি চালিয়েছে পুলিশ। গুয়াহাটিতে জারি হয়েছে কার্ফু। বহু জায়গায় বন্ধ করে ইন্টারনেট ও মোবাইল পরিষেবা বন্ধ করে দিয়েছে প্রশাসন। দুই রাজ্যেই নেমেছে আধাসেনা।

তৃণমূল বিধায়ক তথা মন্ত্রী সিদ্দিকুল্লা চৌধুরী আগেই বলেছিলেন, ‘‘আমাদের অবদান ছাড়া ভারত স্বাধীন হত না। এই গা-জোয়ারি চলবে না। এর শান্তিপূর্ণ প্রতিবাদ হবে।’’ জমিয়তে-উলামায়ে-হিন্দের এই নেতার নির্দেশে আজ, শুক্রবার সদাইপুর থানা এলাকায় সংগঠনের সদস্যরা সিএবি-র বিরুদ্ধে প্রতিবাদ করবে। সংগঠনের সাহাপুর শাখার সম্পাদক মৌলানা ইজাজুল হক বলেন, ‘‘সিএবি আমরা মানি না। একই দেশে একসঙ্গে মিলেমিশে থাকতে চাই। শুক্রবার সাহাপুর, সেলারপুর কুইঠা পর্যন্ত প্রতিবাদ মিছিল করব। সেখানে থাকবেন হিন্দুরাও।’’

সংগঠনের আর এক সদস্য খিলাফত হোসেন বলছেন, ‘‘ভারত ধর্মনিরপক্ষ দেশ। সংবিধানের ১৪ নম্বর ধারায় সকলকে সেই অধিকার দেওয়া হয়েছে। নাগরিকত্ব সংশোধনী বিল পাস করে সেই ধর্মনিরপক্ষেতার অধিকারকে লঙ্ঘন করা হচ্ছে। সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের মানুষকে আতঙ্কিত করা হচ্ছে। তার বিরুদ্ধে সরব হব আমরা।’’ সংগঠনের দাবি, কয়েক হাজার মানুষের জমায়েত হবে।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন