Coronavirus

পথচলতি নমুনা নিতে শহরে কিয়স্ক

জেলা প্রশাসন ও স্বাস্থ্য দফতর সূত্রে বলা হচ্ছে, আক্রান্তের সংখ্যা বাড়ছে ঠিকই। তবে, পরিযায়ী শ্রমিকদের জেলায় ফিরে আসার সংখ্যা কমতেই করোনা সংক্রমণের গতিতে লাগাম পড়েছে।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

সিউড়ি শেষ আপডেট: ০৪ জুলাই ২০২০ ০৫:০১
Share:

প্রতীকী ছবি।

অনেক ক্ষেত্রেই কারও করোনার সংক্রমণের উৎস খুঁজে পাওয়া যাচ্ছে না। ফলে, গোষ্ঠী সংক্রমণ হয়েছে কিনা যাচাই করতে বীরভূমের ব্লকে ব্লকে বাসিন্দাদের লালারসের ‘র‌্যান্ডম স্যাম্পলিং’ শুরু হয়েছে। এ বার পুর-এলাকার বিভিন্ন স্থানে কিয়স্ক বসিয়ে পথচলতি ইচ্ছুক মানুষেরও লালারসের নমুনা সংগ্রহের ভাবনা নিয়েছে জেলা প্রশাসন। শুক্রবার নতুন করে আরও পাঁচ জনের শরীরে কোভিড-১৯ সংক্রমণ পাওয়া গিয়েছে। আক্রান্তদের মধ্যে দু’জন বীরভূম এবং তিন জন রামপুরহাট স্বাস্থ্য জেলার।

Advertisement

জেলা প্রশাসন ও স্বাস্থ্য দফতর সূত্রে বলা হচ্ছে, আক্রান্তের সংখ্যা বাড়ছে ঠিকই। তবে, পরিযায়ী শ্রমিকদের জেলায় ফিরে আসার সংখ্যা কমতেই করোনা সংক্রমণের গতিতে লাগাম পড়েছে। সুস্থতার হারও যথেষ্ট ভাল এই জেলায়। এখনও পর্যন্ত জেলায় মোট আক্রান্তের সংখ্যা ২৯০ জন। তার মধ্যে রামপুরহাট স্বাস্থ্য জেলায় আক্রান্তের সংখ্যা ১৭৬ এবং বীরভূমে ১১৪ জন। যদিও বোলপুর ও রামপুরহাটের দুই কোভিড হাসপাতালে ভর্তি রয়েছেন মাত্র ১৪ জন। এটা যেমন স্বাস্থ্যকর্তাদের কাছে স্বস্তির, তেমনই উদ্বেগের বিষয় হল আক্রান্তদের প্রায় সকলেই উপসর্গহীন। এই অবস্থায় অজান্তে কেউ আক্রান্ত হয়ে সেরে উঠছেন কিনা বা সংক্রমণ নীরবে ছড়িয়ে পড়ছে কিনা, সেটা খতিয়ে দেখতেই গ্রামীণ এলাকার পাশাপাশি শহরে লালারসের ‘র‌্যান্ডম সাম্পলিং’ শুরু হচ্ছে।

জেলার করোনা পরিস্থিতি, রেশন বণ্টন, আগামী মরসুমে চাষ-সহ নানা বিষয় নিয়ে শুক্রবার জেলা পরিষদে একটি প্রশাসনিক বৈঠক ছিল। জেলাশাসক মৌমিতা গোদারা বসু, জেলা পুলিশ সুপার শ্যাম সিংহ , জেলা পরিষদের মেন্টর, অভিজিৎ সিংহ, বীরভূম ও রামপুরহাট স্বাস্থ্য জেলার সিএমওএইচ, জেলা খাদ্য মিয়ামক এবং প্রশাসনের কর্তারা বৈঠকে উপস্থিত ছিলেন। সেখানেই এই সিদ্ধান্ত গৃহীত হয়েছে বলে জানিয়েছে প্রশাসন। জেলা প্রশাসনের কর্তারা বলছেন, জেলায় করোনা সংক্রমণের গতি অনেকটাই স্থিতিশীল। করোনা পরিস্থিতিও নিয়ন্ত্রণে। তাই বলে সতর্কতা নিয়ে কোনও আপস নয়। বৈঠক শেষে অভিজিৎবাবু বলেন, ‘‘আনলক প্রক্রিয়া শুরু হয়েছে। জেলার বিভিন্ন প্রান্ত ও জেলার বাইরে থেকে লোকজন শহরে আসছেন। তাঁদের মধ্যে কেউ করোনা টেস্ট করাতে চাইলে তিনি সরকারি খরচে টেস্ট করিয়ে নিতে পারবেন।’’

Advertisement

প্রশাসন সূত্রে জানা গিয়েছে, প্রথমে জেলা সদর সিউড়ি শহর দিয়েই শুরু হচ্ছে এই ‘র‌্যান্ডম স্যাম্পলিং’। ধীপে ধাপে জেলার বাকি পাঁচটি পুর-শহরের জনবহুল স্থানে পালা করে কিয়স্ক বসবে। তার আগে মাইকিং হবে পুরসভার পক্ষ থেকে। সেখানেই ইচ্ছুক পথচারীদের লালারসের নমুনা সংগ্রহ করা হবে। জেলার স্বাস্থ্যকর্তারা জানাচ্ছেন, ঠিক হয়েছে মহকুমাশাসকেরা সংশ্লিষ্ট পুরসভাগুলির সঙ্গে বৈঠক করবেন। কোথায় কী ভাবে করোনা পরীক্ষার ব্যবস্থা হবে, সেটা নির্দিষ্ট হলেই নিয়মিত পথচলতি ইচ্ছুকদের লালারসের নমুনা সংগ্রহ করে পরীক্ষা করা হবে। এখন করোনা নির্ণায়ক আরটিপিসিআর টেস্ট করায় জেলা স্বনির্ভর হয়েছে। সিউড়ি জেলা হাসপাতালে বীরভূম ও রামপুরহাট স্বাস্থ্য জেলা থেকে আসা প্রতিদিন গড়ে সাড়ে তিনশো স্যাম্পল পরীক্ষা হচ্ছে। এ বার ‘র‌্যান্ডম স্যাম্পলিং’ শুরু হলে সংক্রমণে আরও লাগাম পরানো যাবে বলে মনে করছে প্রশাসন ও স্বাস্থ্য দফতর।

এ সবের মধ্যেই জেলা ও রাজ্য স্বাস্থ্য দফতরের দেওয়া করোনা চিত্রের মধ্যে গরমিল থেকে যাওয়া নিয়ে অস্বস্তি তৈরি হয়েছে। দু’টি স্বাস্থ্য জেলা যেখানে দাবি করছে,
শুক্রবার বিকেল পর্যন্ত আক্রান্তের সংখ্যা মোট ২৯০ জন। সেখানে রাজ্য স্বাস্থ্য দফতরের বুলেটিন অনুযায়ী, জেলায় করোনা আক্রান্তের সংখ্যা তিনশো পেরিয়ে গিয়েছে। বিভ্রান্তি মেটাতে রাজ্য স্বাস্থ্য দফতরে যোগোযাগ করে ত্রুটি শুধরে নেওয়ার আর্জি জানানো হয়েছে বলে জানাচ্ছেন জেলার স্বাস্থ্যকর্তারা।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন