Lakshmi Bhandar Scheme

Lakshmir Bhandar: পুজোর দিনে লক্ষ্মীর ভাঁড় দিয়ে সম্মান ‘লক্ষ্মী’দের

কোজাগরী পূর্ণিমার দিনের অনুষ্ঠানটির শীর্ষক ছিল ‘ঘরে ঘরে লক্ষ্মী’।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

পুরুলিয়া ও মানবাজার শেষ আপডেট: ২১ অক্টোবর ২০২১ ০৬:৪৮
Share:

অযোধ্যা পাহাড়ে ‘ঘরে ঘরে লক্ষ্মী’ অনুষ্ঠানে। বুধবার। নিজস্ব চিত্র।

কাছাকাছি ব্যাঙ্কের দূরত্ব কম-বেশি ২০ কিলোমিটার। পুরুলিয়ার অযোধ্যা পাহাড়ের বিভিন্ন গ্রামের বাসিন্দাদের এই সমস্যার কথা মাথায় রেখে ‘লক্ষ্মীর ভান্ডার’ প্রকল্পের উপভোক্তাদের হাতে প্রকল্পের আর্থিক সহায়তার পাশাপাশি, লক্ষ্মীর ভাঁড় তুলে দিয়ে সম্মানিত করল পুরুলিয়া জেলা প্রশাসন। কোজাগরী পূর্ণিমার দিনের অনুষ্ঠানটির শীর্ষক ছিল ‘ঘরে ঘরে লক্ষ্মী’।

Advertisement

অনুষ্ঠানে যোগ দিয়ে জেলাশাসক রাহুল মজুমদার বলেন, “রাজ্য সরকারের লক্ষ্মীর ভান্ডার নামের প্রকল্পটি বাংলার লক্ষ্মীদের জন্য। আমরা এখানে এসেছি, তাঁদের সম্মান জানাতে। ‘মা’ শব্দের কোনও জাত নেই। ধর্ম নেই। আছে স্নেহ, মমতা, ভালবাসা। এই প্রকল্পের লক্ষ্য, মায়েদের শক্তি বাড়ানো।”

জেলার কুড়িটি ব্লক ও তিনটি পুর-এলাকাতেও এ দিন কিছু উপভোক্তাকে সম্মানিত করা হয়েছে। তবে জেলার মূল অনুষ্ঠানটি হয়েছে অযোধ্যা পাহাড়ের রাঙা প্রাথমিক স্কুল প্রাঙ্গণে। অযোধ্যা পঞ্চায়েত সূত্রে জানা যায়, এ দিন তিনশো উপভোক্তাকে ‘লক্ষ্মীর ভান্ডার’ প্রকল্পের আর্থিক সহায়তা দেওয়া হয়েছে। ব্যাঙ্কের প্রতিনিধি অনুষ্ঠান প্রাঙ্গণে উপভোক্তাদের টাকা দিয়েছেন। জেলাশাসক বলেন, “উপভোক্তাদের ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্টে প্রকল্পের বরাদ্দ অর্থ পৌঁছবে। কিন্তু সে টাকা তুলতে উপভোক্তাদের পাহাড় থেকে সমতলে নেমে ব্যাঙ্কে যেতে হবে। তা মাথায় রেখে ব্যাঙ্কের প্রতিনিধিকে পাহাড়ে নিয়ে এসে উপভোক্তাদের হাতে অর্থ তুলে
দেওয়া হয়েছে।”

Advertisement

অনুষ্ঠানে যোগ দিয়েছিলেন পশ্চিমাঞ্চল উন্নয়ন পর্ষদমন্ত্রী সন্ধ্যারানি টুডু, জেলা পরিষদের সভাধিপতি সুজয় বন্দ্যোপাধ্যায়, জেলা পরিষদের জনস্বাস্থ্য কর্মাধ্যক্ষ সৌমেন বেলথরিয়া, বাঘমুণ্ডির বিধায়ক সুশান্ত মাহাতো, অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (অপারেশন) চিন্ময় মিত্তাল প্রমুখ। সভাধিপতি বলেন, “রাজ্যে পালাবদলের আগে, পাহাড়ের অনেক এলাকাই ছিল দুর্গম। মানুষকে ভয়ে ভয়ে থাকতে হত। আর আজ কতটা উন্নয়ন হয়েছে, পাহাড়ের বাসিন্দারাই তা উপলব্ধি করছেন।”

সন্ধ্যারানির কথায়, “মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় যা প্রতিশ্রুতি দেন, তা তিনি রক্ষা করেন। ‘লক্ষ্মীর ভান্ডার’ মায়েদের, মেয়েদের পাশে থাকার একটি প্রকল্প।” প্রকল্পে এখনও যাঁদের আবেদন মঞ্জুর হয়নি, তাঁদের পঞ্চায়েতে যোগাযোগ করতে পরামর্শ দেন তিনি। সৌমেনও বলেন, “উপভোক্তাদের দূরে ব্যাঙ্কে গিয়ে টাকা তুলতে যাতে সমস্যায় না পড়তে হয়, সে কথা মাথায় রেখে ব্যাঙ্কের প্রতিনিধিকে এখানে নিয়ে এসে পরিষেবা দেওয়ার ব্যবস্থা করা হয়েছে। সরকার মানুষের পাশে রয়েছে।”

প্রকল্পের টাকা পেয়ে খুশি বাগানডি গ্রামের বাসিন্দা টুহন পাহর, সাহারজুড়ির শান্তিলাল মান্ডি, রাঙা গ্রামের বাসন্তী মুর্মু, হেঁসাডির আকলি কালিন্দীরা বলেন, “লক্ষ্মীর ভান্ডার প্রকল্পে আবেদন করেছিলাম। ব্যাঙ্কে যেতে হয়নি। এ দিন প্রকল্পের টাকা এখানেই পেলাম। কাজে লাগবে।”

মানবাজার ১ ব্লকের সভাগৃহেও এ দিন ব্লকের বিভিন্ন পঞ্চায়েত থেকে আসা ৮০ জনকে ফুল ও মিষ্টি দিয়ে সম্মান জানানো হয়। মানবাজার থানার মানপুর গ্রামের দিনমজুর রিনা বাউরি বলেন, “আগে সংসার চালিয়ে দুই মেয়ের টিউশনের টাকা জোগাড় করতে হিমসিম খেতাম। প্রকল্প থেকে পাওয়া টাকাটা খুব কাজে আসছে।” মানবাজার ১-এর জয়েন্ট বিডিও রাজীব মুর্মু জানান, ব্লকে প্রকল্পের সুবিধা পেতে এ পর্যন্ত ২৮,৩৩১ জন আবেদন জানিয়েছেন। এর মধ্যে ২১,৩১৩ জনের আবেদন মঞ্জুর হয়েছে। বাকিদের আবেদনপত্র খতিয়ে দেখার কাজ চলছে।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন