নিজস্ব চিত্র
তিলাবনি পাহাড় বাঁচাতে ফের পথে নামলেন গ্রামের মানুষজন। তিলাবনি পাহাড় কেটে গ্রানাইট উত্তোলনের প্রকল্প অবিলম্বে বাতিল করতে হবে, এই দাবি-সহ মোট ছ’দফা দাবিতে সোমবার হুড়া ব্লক প্রশাসনকে স্মারকলিপি দিল ‘তিলাবনি পাহাড় বাঁচাও কমিটি’।
হুড়ার তিলাবনি পাহাড় ও লাগোয়া এলাকা থে্কে প্রাকৃতিক সম্পদ সংগ্রহের জন্য সরকারি অনুমতি পেয়েছে এক বেসরকারি সংস্থা। এর পরেই লাগোয়া লেদাবনা, পড়াশিবনা, মাধবপুর ও তিলাবনি গ্রামের মানুষজন আন্দোলনের জন্য ওই কমিটি গড়েছেন। ইতিমধ্যে পাহাড় কাটার প্রতিবাদ জানিয়ে প্রশাসনের বিভিন্ন স্তরে চিঠি দেওয়া হয়েছে বলে কমিটির দাবি। বাসিন্দাদের জীবিকার স্বার্থে কেন পাহাড়টি রক্ষা করা প্রয়োজন, তা নিয়ে এলাকায় একাধিক সভাও হয়েছে বলে জানান বাসিন্দারা।
কমিটির দাবি, প্রশাসনের বিভিন্ন স্তরে লিখিত ভাবে প্রকল্প বাতিলের আবেদন জানানো হলেও, এলাকার মানুষজন কিছু দিন আগে দেখেছেন, বেসরকারি সংস্থার লোকজন যন্ত্র নিয়ে পাহাড় কাটার কাজ শুরু করতে হাজির হয়েছেন। প্রতিবাদ জানালে তাঁরা ফিরে যান। শান্তিপূর্ণ ভাবে প্রতিবাদ করা সত্ত্বেও পুলিশ আট জনের বিরুদ্ধে মামলা করেছে বলে অভিযোগ তাঁদের।
এই পরিস্থিতিতেই এ দিন ব্লক প্রশাসনের কাছে স্মারকলিপি কর্মসূচি নেওয়া হয় বলে জানান বাসিন্দারা। হুড়া নিমতলা মোড় থেকে মিছিল করে তাঁরা ব্লক অফিসে পৌঁছন। কমিটির বক্তব্য, এই পাহাড় আবহমান কাল ধরে এলাকার মানুষজনের সামাজিক ও সাংস্কৃতিক জীবনের অঙ্গ। তাদের অভিযোগ, সরকারি মদতে মুনাফার স্বার্থে পাহাড় আর থাকবে কি না, তা আজ প্রশ্নের মুখে। পাহাড় কেটে এলাকার প্রাকৃতিক ভারসাম্য ও সৌন্দর্য নষ্ট করা যাবে না, কর্মসংস্থানের লক্ষ্যে পাহাড় ঘিরে পর্যটন কেন্দ্র গড়তে হবে এবং পাহাড় রক্ষার স্বার্থে শান্তিপূর্ণ আন্দোলনকারীদের উপরে পুলিশি হস্তক্ষেপ চলবে না বলে দাবি জানিয়েছে কমিটি।
হুড়ার বিডিও ধ্রুবাঙ্কুর ঠাকুর বলেন, ‘‘এ দিন এলাকা থেকে ‘পাহাড় বাঁচাও কমিটি’র তরফে আমার কাছে কয়েক দফা দাবিতে স্মারকলিপি দেওয়া হয়েছে। দাবিসনদ ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের কাছে পাঠানো হবে।’’ জেলা পরিষদের সভাধিপতি সুজয় বন্দ্যোপাধ্যায়ের দাবি, ‘‘পাহাড় কাটা হবে বলে যে প্রচার চলছে, তা অপপ্রচার। পাহাড় লাগোয়া যে এলাকা রয়েছে, সেখানে গ্রানাইট আছে। তা উত্তোলনের জন্য একটি সংস্থা লিজ় পেয়েছে। শিল্প হলে কর্মসংস্থানও হবে।’’ তাঁর অভিযোগ, ‘‘বহিরাগত কিছু মানুষ এলাকাবাসীকে ভুল বোঝাচ্ছেন। বাসিন্দাদের মতামত অগ্রাহ্য করে জোর করে কোনও সিদ্ধান্ত চাপিয়ে দেওয়ার পক্ষে আমরা নই।’’