চিঠি পদ ছাড়তে চেয়ে, অস্বস্তি

তৃণমূল সূত্রে খবর, সোমবার ওই চার জন বিডিওর কাছে পদত্যাগ করতে চেয়ে আবেদন করেন। দলীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, বড়জোড়া পঞ্চায়েতের বিভিন্ন সরকারি কাজের টেন্ডার ডাকার পদ্ধতি-সহ পঞ্চায়েতের কাজকর্ম নিয়ে অভিযোগ তুলেছেন তাঁরা।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

বড়জোড়া শেষ আপডেট: ২৭ সেপ্টেম্বর ২০১৯ ০১:১৭
Share:

প্রতীকী ছবি

পঞ্চায়েতের কাজ নিয়ে প্রশ্ন তুলে পদত্যাগপত্র জমা দিলেন পঞ্চায়েতের চার সদস্য। বিডিও (বড়জোড়া) ভাস্কর রায় বলেন, “বড়জোড়া পঞ্চায়েতের চার জন সদস্য পদত্যাগ করতে চেয়ে আবেদন করেছেন। বিষয়টি ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে জানিয়েছি।” এই ঘটনায় জল্পনা দানা বেধেছে জেলার রাজনৈতিক মহলে। তবে বিষয়টি নিয়ে প্রকাশ্যে মুখ খুলতে নারাজ বড়জোড়া পঞ্চায়েতের ওই সদস্যেরা। তৃণমূলের বিষ্ণুপুর সংসদীয় জেলা সভাপতি শ্যামল সাঁতরা বলেন, “ওই সদস্যেরা যাতে সিদ্ধান্ত বদল করেন তা নিয়ে আমরা আলোচনা চালাচ্ছি।”

Advertisement

তৃণমূল সূত্রে খবর, সোমবার ওই চার জন বিডিওর কাছে পদত্যাগ করতে চেয়ে আবেদন করেন। দলীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, বড়জোড়া পঞ্চায়েতের বিভিন্ন সরকারি কাজের টেন্ডার ডাকার পদ্ধতি-সহ পঞ্চায়েতের কাজকর্ম নিয়ে অভিযোগ তুলেছেন তাঁরা। বড়জোড়া ব্লক তৃণমূলের এক নেতা বলেন, “সঠিক পদ্ধতি মেনে পঞ্চায়েতের বিভিন্ন সরকারি কাজের টেন্ডার ডাকা হচ্ছে না। পঞ্চায়েতের বিভিন্ন বৈঠকে ওই সদস্যদের ডাকা হচ্ছে না বলে ক্ষোভ প্রকাশ করছেন তাঁরা।”

যদিও এই অভিযোগ অস্বীকার করেছেন বড়জোড়া পঞ্চায়েতের প্রধান সরস্বতী ধীবর। তিনি বলেন, “পঞ্চায়েতের সমস্ত কাজকর্ম নিয়ম মেনে করা হয়। উন্নয়নমূলক কাজের সিদ্ধান্তের সময়ে সমস্ত সদস্যদের নিয়ে বৈঠক হয়। যাঁরা পদত্যাগ করতে চেয়েছেন তাঁদের মূল অভিযোগটা কী, তা আমার জানা নেই।”

Advertisement

গত বিধানসভা নির্বাচন থেকেই বড়জোড়ায় বারবার ধাক্কা খেতে দেখা গিয়েছে তৃণমূলকে। ২০১৬ সালের বিধানসভা ভোটে তৃণমূলের তারকা প্রার্থী সোহম চক্রবর্তী পরাজিত হন সিপিএমের সুজিত চক্রবর্তীর কাছে। বড়জোড়া ব্লকের মধ্যে শুধু মালিয়াড়া পঞ্চায়েতের একটি আসন ও পঞ্চায়েত সমিতির একটি আসন ছাড়া ত্রিস্তরীয় পঞ্চায়েতের আর কোনও আসনে বিরোধী প্রার্থী ছিলেন না। সব ক’টি পঞ্চায়েত ও পঞ্চায়েত সমিতিই তৃণমূলের দখলে যায়।

সদ্য শেষ হওয়া লোকসভা নির্বাচনে ফের বড়জোড়া বিধানসভায় ভোটপ্রাপ্তির নিরিখে তৃণমূলকে টেক্কা দিয়ে এগিয়ে গিয়েছে বিজেপি।

এই পরিস্থিতিতে আসন্ন বিধানসভা ভোটের আগে নিজেদের জমি শক্ত করতে উঠেপড়ে লেগেছে তৃণমূল। তবে বড়জোড়া পঞ্চায়েতের এই ঘটনায় অস্বস্তি দানা বেধেছে দলের অন্দরে। ঘটনাটি নিয়ে মুখে কুলুপ এঁটেছেন ব্লক তৃণমূল নেতৃত্ব। বড়জোড়া ব্লক তৃণমূল সভাপতি অলক মুখোপাধ্যায় ও বাঁকুড়া জেলা পরিষদের কর্মাধ্যক্ষ তথা বড়জোড়ার তৃণমূল নেতা সুখেন বিদ বলেন, “যা বলার জেলা সভাপতি বলবেন।”

শ্যামলবাবু বলেন, “পঞ্চায়েতের কাজকর্ম নিয়ে ওই সদস্যদের কোনও অভিযোগ থাকলে আমরা তা মেটাতে তৎপর। এটা সামান্য ভুল বোঝাবুঝি ছাড়া আর কিছুই নয়।”

সিপিএমের বড়জোড়া এরিয়া কমিটির সম্পাদক সুজয় চৌধুরীর অবশ্য কটাক্ষ, “এই ঘটনা জনসাধারণের সামনে প্রমাণ করল বিরোধীশূন্য পঞ্চায়েতে কী হারে দুর্নীতি করছে তৃণমূল।”

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন