Murder

Murder: সুচ ফুটিয়ে শিশুকন্যাকে খুনের মামলা: ওঝার সঙ্গে দোষী সাব্যস্ত মা-ও, সাজা ঘোষণা সোমবার

চার বছর আগের ওই খুনের ঘটনায় অভিযুক্ত ওই দু’জনের বিরুদ্ধে শুক্রবার এই রায় দেয় পুরুলিয়া জেলা আদালত।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

পুরুলিয়া শেষ আপডেট: ১৭ সেপ্টেম্বর ২০২১ ২১:০৯
Share:

শিশুকন্যার মা মঙ্গলা গোস্বামী। —নিজস্ব চিত্র।

সাড়ে তিন বছরের নাবালিকার দেহে সুচ ফুটিয়ে খুনে দোষী সাব্যস্ত হল শিশুটির মা-সহ এক বৃদ্ধ ওঝা। ২০১৭ সালে পুরুলিয়ায় ওই খুনের ঘটনায় শুক্রবার পুরুলিয়া জেলা আদালতের বিচারক রমেশকুমার প্রধানের এজলাসে দোষী সাব্যস্ত হয় শিশুকন্যার মা মঙ্গলা গোস্বামী এবং ওঝা সনাতন গোস্বামী (ঠাকুর)। আগামী সোমবার দোষীদের সাজা ঘোষণা করা হবে।

পুরুলিয়ার মফস্‌সল থানার ভুল সতেরো গ্রামে শিশুকন্যাকে নিয়ে বাপের বাড়িতে থাকত স্বামী পরিত্যাক্তা মঙ্গলা। ২০১৭ সালে দোল উৎসবে মেয়েকে সঙ্গে নিয়ে ওই থানার নদিয়াড়া গ্রামে পারিবারিক বন্ধু সনাতনের বাড়িতে যায় সে। হোমগার্ডের চাকরি থেকে অবসরের পর ঝাড়ফুঁক ও তুকতাকে হাত পাকিয়েছিল এলাকায় ওঝা বলে পরিচিত বছর বাষট্টির সনাতন। ২০১৬ সালে স্ত্রী-র মৃত্যুর পরের বছর দোলের সময় থেকে মঙ্গলার সঙ্গে থাকতে শুরু করে সে। তবে দিন কয়েক যেতে না যেতেই মঙ্গলার মেয়ে অসুস্থ হয়ে পড়ে। অভিযোগ, প্রবল জ্বর-সর্দিকাশি সত্ত্বেও শিশুটিকে চিকিৎসকের কাছে নিয়ে যেতে রাজি ছিল না মঙ্গলা। শেষ পর্যন্ত প্রতিবেশীরা শিশুটিকে চিকিৎসাকেন্দ্রে নিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করলে গন্ডগোল বাধে। খবর পেয়ে মফস্‌সল থানার পুলিশ শিশুটিকে হাসপাতালে নিয়ে গেলেও তাকে বাঁচানো যায়নি।

Advertisement

২০১৭ সালের ১১ জুলাই সনাতনের বাড়ি থেকে অসুস্থ শিশুটিকে উদ্ধার করে পুলিশ। জেলার দেবেন মাহাতো সদর হাসপাতালে এক্সরে-তে দেখা যায়, শিশুটির শরীরের বিভিন্ন অঙ্গে সাতটি সুচ ফুটে রয়েছে। তড়িঘড়ি তাকে প্রথমে বাঁকুড়া সম্মিলনী মেডিক্যাল কলেজে ও পরে কলকাতার এসএসকেএম হাসপাতালে স্থানান্তরিত করা হয়। ১৮ জুলাই এসএসকেএমে শিশুটির অস্ত্রোপচার করেও শেষরক্ষা হয়নি। ২০ জুলাই মারা যায় সে।

ময়নাতদন্তে জানা যায়, শিশুটির পাঁজরে, তলপেটে ও যৌনাঙ্গে সুচ ফোটানো হয়েছিল। এর পরেই নড়েচড়ে বসে পুলিশ। ঘটনায় জড়িত অভিযোগে ২২ জুলাই মঙ্গলাকে গ্রেফতার করে পুলিশ। মূল অভিযুক্ত তথা পলাতক সনাতনকে গ্রেফতারে শুরু হয় তৎপরতা। সনাতনের খোঁজে বিশেষ তদন্তকারী দল গঠন করে দিল্লি এবং উত্তরপ্রদেশে হানা দেয় পুরুলিয়া জেলা পুলিশ। ঘটনার এক সপ্তাহের মাথায় উত্তরপ্রদেশের সোনভদ্র জেলায় এক আত্মীয়ের বাড়ি থেকে গ্রেফতার করা হয় তাকে।

Advertisement

সনাতন এবং মঙ্গলার বিরুদ্ধে প্রোটেকশন অব চিলড্রেন ফ্রম সেক্সুয়াল অফেন্সেস (পকসো)-সহ ভারতীয় দণ্ডবিধির একাধিক ধারায় মামলা শুরু করে পুলিশ। ঘটনার ৫৭ দিনের মাথায় ২০১৭ সালের ১২ সেপ্টেম্বর চার্জশিট পেশ করা হয়। এর পর পুলিশের পেশ করা তথ্যপ্রমাণ ও সাক্ষীদের বয়ানের ভিত্তিতে এই রায় দেয় আদালত।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন