অবরোধ: নদীর ঘাটে যাওয়ার পথে সার দিয়ে দাঁড়িয়ে বালি-ভর্তি গাড়ি। মঙ্গলবার। নিজস্ব চিত্র
অবৈধ বালি পাচারের প্রতিবাদে সরব হয়ে এলাকার বাসিন্দারা পথ অবরোধ করলেন বৈধরা ব্যারাজের কাছে উদয়নগর মোড়ে। দীর্ঘক্ষণ পথ অবরোধের ফলে নলহাটির জয়পুরের বালিঘাট থেকে বালি ভর্তি গাড়ি লক্ষ্মীনারায়ণপুর থেকে জয়পুর রাস্তায় দাঁড়িয়ে পড়ে।
পরিস্থিতি সামাল দিতে এলাকায় পুলিশ পৌঁছয়। ঠিক হয়, যে সমস্ত বালি ভর্তি গাড়ি এলাকায় দাঁড়িয়ে আছে তাদেরকে ছেড়ে দেওয়া হবে। পরে আলোচনায় বসে ঘটনার পর্যালোচনা করা হবে। কেন পথ অবরোধ হয়েছে খোঁজ নেওয়ার আশ্বাস দিয়েছেন নলহাটি ১ ব্লকের বিডিও জগদীশ চন্দ্র বাউড়ি। নলহাটি ১ ব্লকের বিএলআরও কৃষ্ণেন্দু বিশ্বাস বলেন, ‘‘শুনেছি গ্রামের লোক জাল কাগজ পেয়েছেন। কিন্তু এলাকা থেকে আমাদের চেকপোস্ট আট কিলোমিটার দূরে। চেকপোস্ট যদি পাওয়া যেত তাহলে পরীক্ষা করে দেখা যেত। এছাড়াও এ ব্যাপারে আমার কাছে কেউ অভিযোগও করেনি।’’
ঠিক কী হয়েছিল এ দিন নলহাটির উদয়নগর মোড়ে? মঙ্গলবার সকালে পথ অবরোধে সামিল নলহাটি থানার জয়পুর, লক্ষ্মীনারায়ণপুর, কয়ার বিল-সহ এলাকার আট দশটি গ্রামের বাসিন্দাদের অভিযোগ, ‘‘এলাকায় ব্রাহ্মনী নদী পাড়ে জমে থাকা বালি তোলার জন্য একটি সংস্থার নামে একজন মাত্র বালি ব্যবসায়ীকে বালি তোলার অনুমতি দেওয়া হয়েছে। অথচ অনেকে বেনামে জাল অনুমতিপত্র দেখিয়ে যথেচ্ছ বালি তুলছে।’’
তাঁদের দাবি, জয়পুর এলাকায় অবৈধভাবে ৯টি ঘাট থেকে যন্ত্রের মাধ্যমে যথেচ্ছ ভাবে বালি তোলা হচ্ছে। এবং সেক্ষেত্রে রাজস্ব বাবদ কারও কাছ থেকে ট্রাক্টর পিছু ১২০০ টাকা, কারও কাছ থেকে ২০০০ টাকার বেশি টাকা নেওয়া হয়েছে। এলাকার বাসিন্দারা জানান, সোমবার রাত থেকে মঙ্গলবার সকাল আটটা পর্যন্ত ওই সমস্ত জাল রসিদ কেটে এলাকায় বালি পাচার করা হয়েছে। পরে এলাকাবাসীর প্রতিবাদে সকাল নটা থেকে রাজস্ব-রসিদ কাটা বন্ধ হয়। বাসিন্দারা জানান, জয়পুর ঘাটে বালি পাচার রোধে পুলিশ প্রশাসন থেকে মাস দুয়েক আগে ওয়াচটাওয়ার বসানো হয়েছিল। কিন্তু দিন কুড়ি আগে দুষ্কৃতীকারীরা ওয়াচটাওয়ারের কেবিল কেটে দিয়েছে।
রামপুরহাটের মহকুমা পুলিশ আধিকারিক জানান, বালি বিষয়ে পুলিশ প্রশাসন থেকে স্থানীয় বিডিও, লোকাল থানার আধিকারিক এবং সংশ্লিষ্ট বিএলআরও-দের নিয়ে তিন জনের কমিটি গঠন করা হয়েছে। তারা বালিঘাট সম্পর্কে দৈনন্দিন পর্যবেক্ষণ রিপোর্ট জেলা প্রশাসনের কাছে সরাসরি পাঠিয়ে দিচ্ছেন। তিন জনের কমিটি সব দেখছে। মহকুমাশাসক সুপ্রিয় দাসও একই কথা বলেন।