সন্ধ্যারানি টুডুর প্রচারে জেলা সভাধিপতি সৃষ্টিধর মাহাতো, সাংসদ মৃগাঙ্ক মাহাতো। মঙ্গলবারের নিজস্ব চিত্র।
হাতজোড় করে মিছিলের সামনে প্রার্থী হেঁটে চলেছেন। তাঁকে ঘিরে ব্লক এলাকার বড়, মেজো, ছোট নেতারা। মিছিলের বিভিন্ন অংশে পেশাদার বাদ্যকাররা বাজনা বাজিয়ে চলেছেন। দলীয় পতাকায় ছয়লাপ। মঙ্গলবার মানবাজারের তৃণমূল প্রার্থী সন্ধ্যারানি টুডুর এই মিছিল দেখে মনে হতে পারে, নির্বাচনে বুঝিবা তিনি জিতেই গিয়েছেন। কিন্তু নির্বাচনের আগে দলের প্রার্থীর এই মিছিল দেখে পোড় খাওয়া তৃণমূল কর্মীরাই মানছেন, বিষয়টা এত সরল নয়।
দলের কর্মীদের অনেকেই রাখঢাক না করে মানছেন, গত বিধানসভা ভোটে এই কেন্দ্র জেতার পর থেকে দলের নেকাদের কেউ কেউ ক্ষমতার ভাগ বাটোয়ারাতে সময় কাটিয়েছেন। তাতে পরস্পরের মধ্যে বিবাদ বেড়েছে, সে তুলনায় সংগঠন তেমন ভাবে গড়ে তোলা যায়নি। তাই এখন নির্বাচনের মুখে দলীয় ঐক্যের ছবি সামনে আনতে অনেক নেতাকেই এ দিন উঠেপড়ে নামতে দেখা গিয়েছে বলে কর্মীদের অনেকেই জানাচ্ছেন।
মানবাজার বিধানসভা এলাকায় ২৫টি গ্রাম পঞ্চায়েত রয়েছে। মোট ভোটার ২ লক্ষ ২৯ হাজার। বুথের সংখ্যা ২৮৮টি। ২০১১-র বিধানসভা নির্বাচনে তৃণমূল প্রার্থী সন্ধ্যারানি টুডু ৫,১৬৬ ভোটের ব্যবধানে জেতেন। বিধায়কের সর্বক্ষণের সঙ্গী ছিলেন মানবাজারের ব্লক সভাপতি দেবেন্দ্রনাথ মাহাতো। দল সূত্রে খবর, ২০১৩ সালে দেবেন্দ্রনাথবাবুর স্ত্রী কবিতা মাহাতো পঞ্চায়েত সমিতির সভাপতি হওয়ার পর থেকে দু’জনের মধ্যে ব্যবধান বাড়তে থাকে। এক বছর আগে ব্লক সভাপতির পদ থেকে দেবেন্দ্রনাথবাবুকে সরিয়ে দল সন্ধ্যারানির হাতে ব্লক সভাপতির দায়িত্ব দেয়। কার্যকরী সভাপতি হন দিলীপ পাত্র এবং নীলকমল মাহাতো।
অঞ্চলের নেতাদের মধ্যেও ক্ষমতার ভাগ নিয়ে দলীয় কোন্দল চরমে ওঠে। বিসরি অঞ্চলে দিলীপ পাত্র বনাম অঞ্চল সভাপতি দিলীপ বাউরির লড়াই প্রকাশ্যে আসে। দুই গোষ্ঠী নিজেদের সংগঠন দেখাতে রাস্তায় নামেন। খবরের শিরোনামেও তাঁরা আসেন। এই পরিস্থিতিতে প্রার্থী সন্ধ্যারানিদেবী এবং তাঁর শিক্ষক স্বামী গুরুপদ টুডু বুঝেছেন, নির্বাচনের আগে স্থানীয় নেতাদের কোন্দল মেটাতে হবে। গুরুপদবাবু বলেন, ‘‘ব্লকস্তরের সব নেতাই এখন দল বেঁধে প্রচারে নেমেছেন। কোথাও দ্বন্দ্ব নেই।’’