লিখন: শুধু প্রার্থীর নাম ঘোষণার অপেক্ষা। দেওয়ালে লোকসভা ভোটের প্রচার শুরু তৃণমূলের। শনিবার হেতমপুরে। ছবি: দয়াল সেনগুপ্ত
এখনও লোকসভা নির্বাচনের দিন ঘোষণা হয়নি। স্বাভাবিক ভাবেই প্রকাশ্যে আসেনি রাজনৈতিক দলগুলির প্রার্থীদের নামও।
কিন্তু মনোনীত প্রার্থীদের নাম বাদ রেখেই ভোট প্রচারে দেওয়াল লিখন শুরু করে দিয়েছে শাসকদল। দুবরাজপুরের হেতমপুরে রাস্তায় দু’দিকের দেওয়ালে অন্তত এমন ২০টি দেওয়াল লিখন নজরে পড়বে এখনই। তৃণমূলের জেলা সহ-সভাপতি অভিজিৎ সিংহ বলেন, ‘‘প্রচার তো করতেই হবে। তাই শুধু দুবরাজপুর নয়, গোটা জেলা জুড়েই প্রার্থীর নাম বাদ রেখে দেওয়াল লেখা শুরু হয়ে গিয়েছে। যাতে নির্বাচনের দিনক্ষণ ঘোষণার আগেই কাজ অনেকটা এগিয়ে রাখা যায়।’’
দেওয়াল লিখনের এই তৎপরতা অবশ্য শাসক দলেরই। বিরোধীরা এখনও এসবে উদ্যোগ নেননি। বরং বিরোধীদের দাবি, নির্বাচন এলেই বিপক্ষ দলগুলো যাতে নির্বাচনী প্রচারের জন্য দেওয়াল খালি না পায়, বরাবরের মতো সেই চেষ্টাই করছে শাসকদল। ‘‘বিজেপির জেলা সভাপতি রামকৃষ্ণ রায় বলেন, কী আর করা যাবে, এটাই তো দস্তুর। আমাদের দলের কর্মী সমর্থকদের বাড়ির দেওয়ালেই যতটা সম্ভব প্রচার করব। তাও না পেলে প্রচারের অন্য উপায় বের করতে হবে। তবে একটা কথা বলব, প্রচারের জন্য দেওয়াল দখল করলেই কিন্তু ভোট দখল করা সম্ভব নয়।’’
অন্যদিকে, সিপিএমের জেলা সম্পাদক মনসা হাঁসদা বলেন, ‘‘বিরোধীদের ভোটে দাঁড়াতে দেব না, মিটিং মিছিল করতে দেব না, প্রচার করতে দেব না এটা শাসকদলের পুরনো কৌশল। কিন্তু কোনও পুরনো কৌশল-ই এবার আর কাজে লাগবে না।’’ তৃণমূলের জেলা সহ-সভাপতি বলেন, ‘‘অনুব্রতের জেলায় বিরোধীরা কোথায়? সব বিষয়েই তো বিরাধীদের থেকে অনেক এগিয়ে আমরা। দলের পক্ষ থেকে অনেক আগেই ব্লকে ব্লকে জনসভা হয়েছে। এখন উচ্চমাধ্যমিক পরীক্ষার সময় চারদিক ঘিরে ব্লক ভিত্তিক কর্মী সম্মেলেন চলছে। নির্বাচন ঘোষণা হয়ে গেলে দলের কর্মীদের নানা কর্মসূচি দেওয়া হবে। এই সময়টায় একটু ফাঁকা আছেন কর্মীরা। তাই দেওয়াল লিখনের কাজ এগিয়ে রাখা হচ্ছে। প্রার্থীর নাম ঘোষণা হলে দেওয়াল লেখায় কম সময় দিতে হবে। এখানে বিরোধীদের সুযোগ দেওয়া না দেওয়ার প্রশ্ন আসছে কোথায়?’’
বিরোধী শিবিরের দাবি, হতে পারে দেওয়াল দখলের ক্ষেত্রে কিছুটা এগিয়ে থাকবে শাসকদল। কিন্তু মানুষের সঙ্গে নিয়মিত যোগাযোগ রাখার কাজ কাজে তাঁরা এগিয়ে থাকবেন। সিপিএম শুক্রবারই তিনটি মহকুমার কর্মীদের নিয়ে বীরভূমের রামপুরহাট ও সিউড়ি ইন্ডোর স্টেডিয়ামে কর্মিসভা করেছে। সিপিএম নেতারা বলছেন, তবে এবার সোশ্যাল মিডিয়াকে কাজে লাগিয়ে দলের কর্মী সমর্থকদের তো বটেই ভিন্ন রাজনৈতিক দলের সমর্থকদের কাছেও পৌঁছাতে চান তাঁরা। এই কাজটি করবেন দলের কর্মীরাই। শনিবারই দুর্গাপুরে ভোট প্রচারের এই মাধ্যমটি নিয়ে একটি বৈঠকও হয়েছে। জেলার বিজেপি নেতারা জানান, আগামী ১৫ ও ১৬ তারিখে তাঁরাও দুটি কর্মিসভা করবেন। মানুষের সঙ্গে নিবিড় সম্পর্ক গড়ে তোলার কাজ শুরু হয়েছে আগেই। তা নিয়ে পর্যালোচনা হবে। শাসক দলের মতো ঢাকঢোল পিটিয়ে নয়, নিঃশব্দ প্রচারে গুরুত্ব দেওয়া হচ্ছে বলে বিজেপি নেতাদের দাবি।