মানবাজার ২ দক্ষিণাঞ্চল ল্যাম্পস-এর পরিচালন সমিতির নির্বাচনে হারল শাসকদল। রবিবার ওই ল্যাম্পস-এর নির্বাচন ছিল। ৭৮টি আসনের মধ্যে তৃণমূল পেয়েছে ১৬টি। বিরোধী প্রার্থীদের দখলে গিয়েছে ৬২টি আসন। তার মধ্যে ৩টি আসনে বিজেপি এবং ১টি আসনে নির্দল প্রার্থী জয়ী হয়েছেন। ৫৮টি আসন পেয়েছে সিপিএম।
জঙ্গলমহল এলাকায় ল্যাম্পস (লার্জ সাইজ মাল্টিপারপাস কো-অপারেটিভ সোসাইটি)-এর গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রয়েছে। চাষিদের সার, বীজ দেওয়া, ভর্তুকি মূল্যে চাষের যন্ত্রাংশ দেওয়া, ধান কেনা বেচাস স্বল্প সুদে কৃষি ঋণ ইত্যাদি কাজ হয় ল্যাম্পস-এ। বোরো থানার মানবাজার ২ দক্ষিণাঞ্চল ল্যাম্পস এলাকার সব থেকে বড় কৃষি সমবায় সমিতি হিসাবে পরিচিত। সেটিতে বোরো-জারাগোড়া, আঁকরো, বুড়িবাঁধ ও জামতোড়িয়া-বড়গড়িয়া অঞ্চলের প্রচুর সদস্য রয়েছেন।
মানবাজার ২ দক্ষিণাঞ্চল ল্যাম্পস বরাবর বামেদেরই দখলে ছিল। নির্বাচনী জটিলতার ফলে ২০১৪ সালে সেখানে মনোনীত সদস্যদের নিয়ে কমিটি তৈরি করা হয়। সেই সময়ে তৃণমূলের জেলা পরিষদ সদস্য সুধীর সোরেনকে চেয়ারম্যান মনোনীত করে সমিতির কাজ চালানো হচ্ছিল।এ বারের নির্বাচনে অনিয়মের অভিযোগ তুলে স্থগিতাদেশ চেয়ে সম্প্রতি আদালতের দ্বারস্থ হয়েছিল তৃণমূল। শুক্রবার আদালত সেই আবেদন খারিজ করে। রবিবার নির্বাচন হয়।
রবিবারের নির্বাচনে ভোট দেন ১৯৫৮ জন সদস্য। মনোনীত কমিটির মেয়াদকালে ওই ল্যাম্পস-এ আরও ১৪০০ সদস্য নেওয়া হয়েছিল। কিন্তু তাঁদের ভোটাধিকার ছিল না। তৃণমূলের মানবাজার ২ ব্লকের সভাপতি হংসেশ্বর মাহাতোর দাবি, ওই ১৪০০ জনের ভোটাধিকার থাকলে ফল অন্যরকম হতে পারত।
এ বারের নির্বাচনের শুরু থেকেই বেশ কিছুটা পিছিয়ে ছিল শাসকদল। বুড়িবাঁধ অঞ্চলের ১২টি আসনে তৃণমূল কোনও প্রার্থী দিতে পারেনি। বাকি তিনটি অঞ্চলের আরও ১৩টি আসনেও প্রার্থী দিতে না পারায় গোড়াতেই ২৫টি আসনে বিনা প্রতিদ্বন্দ্বীতায় এগিয়ে যায় সিপিএম।
স্থানীয় বাসিন্দা প্রাক্তন সিপিএম বিধায়ক সুশান্ত বেসরা এই জয় প্রসঙ্গে বলেন, ‘‘মানুষ যে আমাদের পাশে রয়েছেন এই নির্বাচনে ফের তা প্রমাণিত হল।’’ তবে এই পরাজয়কে গুরুত্ব দিতে নারাজ বান্দোয়ানের তৃণমূল বিধায়ক রাজীব সোরেন। তিনি বলেন, ‘‘একটি ল্যাম্পসের হারজিতে এলাকায় তেমন প্রভাব পড়ে না। তবু বিষয়টি নিয়ে দলীয় স্তরে ব্যাখ্যা চাওয়া হবে।’’