COVID-19

আটটি ব্লকেই সেফ হোম তৈরির নির্দেশ

গত বছর করোনার প্রথম পর্বে রামপুরহাট স্বাস্থ্য জেলায় তারাপীঠ ঢোকার মুখে রামপুরহাট সাঁইথিয়া রাজ্য সড়কের ধারে একটি বেসরকারি লজে ১৬০ শয্যার সেফ হোম গড়ে তোলা হয়েছিল।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা 

রামপুরহাট  শেষ আপডেট: ২৩ এপ্রিল ২০২১ ০৮:২৫
Share:

গা ঘেঁষাঘেষি ভিড়ে সংক্রমণ ছড়ানোর আশঙ্কা নিয়েই করোনা ভ্যাকসিন নিতে অপেক্ষা। বৃহস্পতিবার রামপুরহাট পুর-হাসপাতালে। ছবি: সব্যসাচী ইসলাম

করোনার দ্বিতীয় ঢেউয়ে সংক্রমণের হার ঊর্দ্ধমুখী দেখে রামপুরহাট স্বাস্থ্য জেলার অধীন ৮টি ব্লকেই সেফ হোম গড়ে তোলার নির্দেশ দিল স্বাস্থ্য দফতর। বুধবার স্বাস্থ্য ভবন থেকে এক নির্দেশিকায় ওই নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। রামপুরহাট মহকুমা প্রশাসনিক ভবনে নির্দেশিকা এসে পৌঁছনোর পরেকোথায় কোথায় সেফ হোম গড়ে তোলা যায় তা দেখতে শুরু করেছে প্রশাসন।

Advertisement

রামপুরহাট স্বাস্থ্য জেলার এক আধিকারিক জানান, রামপুরহাট স্বাস্থ্য জেলায় জেলা প্রশাসন থেকে মুরারই ১ ব্লকের আম্বুয়া সরকারি মডেল স্কুল এবং নলহাটি ১ ব্লকের সিএডিসি ভবনে সেফ হোম গড়ে তোলার অনুমোদন মিলেছে। সেই মতো ওই দুই ব্লকে জেলা প্রশাসনের অনুমোদন প্রাপ্ত জায়গায় সেফ হোম আজ কালের মধ্যে চালু করা হবে। বাকি রামপুরহাট ১, রামপুরহাট ২, নলহাটি ২, মুরারই ২, ময়ূরেশ্বর ১ এবং ময়ূরেশ্বর ২ এই ৬ টি ব্লকে সেফ হোম গড়ে তোলার জন্য এখনও পর্যন্ত কোনও সরকারি জায়গা পাওয়া যায়নি।

রামপুরহাট স্বাস্থ্য জেলার উপ মুখ্য স্বাস্থ্য আধিকারিক প্রকাশ কুমার রায় জানান, মুরারই ১ ব্লকের রাজগ্রামে আম্বুয়া সরকারি মডেল স্কুলে ১০০ শয্যার এবং নলহাটি ১ ব্লকের সিএডিসি ভবনে ৫০ শয্যার সেফ হোম গড়ে তোলা হচ্ছে। বাকি ব্লকগুলিতে জেলা প্রশাসন থেকে সরকারি জায়গার অনুমোদন পেলে সেই মতো সেফ হোম গড়ে তোলা হবে। জেলা প্রশাসনের এক আধিকারিক জানান, বর্তমানে ভোটের মরসুমে বিভিন্ন কিসান মান্ডি-সহ, কলেজ, হস্টেল এবং অন্য সরকারি প্রতিষ্ঠান কেন্দ্রীয় বাহিনীর দখলে রয়েছে। তাই ভোট না পেরোলে ওই সমস্ত প্রতিষ্ঠানে সেফ হোম গড়ে তোলা যাচ্ছে না। সেই পরিস্থিতিতেও স্বাস্থ্য ভবনের নির্দেশে সেফ হোম গড়ে তোলার জন্য সরকারি জায়গার সন্ধান করা হচ্ছে।

Advertisement

এ দিকে স্বাস্থ্য দফতরের তথ্য অনুযায়ী গত বছর এপ্রিল মাসে রামপুরহাট স্বাস্থ্য জেলায় যেখানে মাত্র তিন জন করোনা আক্রান্ত রোগীর সন্ধান মিলেছিল সেখানে এ বছরে এপ্রিল মাসে সেই সংখ্যা তিন হাজার ছাড়িয়ে গিয়েছে। আক্রান্ত রোগী এবং মৃত্যুর হারও গত বছরের করোনার প্রথম পর্বের থেকে অনেক বেশি। করোনার দ্বিতীয় ঢেউয়ে সংক্রমণের হার দ্রুত গতিতে বৃদ্ধি পাওয়া স্বাস্থ্য দফতর থেকে জেলা প্রশাসনের কাছে উদ্বেগের বিষয় হয়ে দাঁড়িয়েছে। স্বাস্থ্য আধিকারিকদের মতে, গোষ্ঠী সংক্রমণের ফলে আক্রান্তের হার বৃদ্ধি পেলেও বাসিন্দাদের লাগামছাড়া মনোভাব, ন্যূনতম সচেতনতা বোধের অভাবে সংক্রমণের মাত্রা বৃদ্ধি পাচ্ছে।

গত বছর করোনার প্রথম পর্বে রামপুরহাট স্বাস্থ্য জেলায় তারাপীঠ ঢোকার মুখে রামপুরহাট সাঁইথিয়া রাজ্য সড়কের ধারে একটি বেসরকারি লজে ১৬০ শয্যার সেফ হোম গড়ে তোলা হয়েছিল। নলহাটি ১ ব্লকের বিডিও অফিস লাগোয়া একটি সরকারি প্রশিক্ষণ কেন্দ্রে ৫০ শয্যার সেফ হোম গড়ে তোলা হয়েছিল। পরিযায়ী শ্রমিকদের স্বাস্থ্য পরীক্ষা করার পরে যাদের জ্বরের লক্ষণ ছিল তাদেরকে ওই দুই সেফ হোমে পর্যবেক্ষণে রাখা হতো। এ ছাড়াও কোডিড আক্রান্ত হলেও যাঁদের শ্বাস কষ্ট বা অন্য কোনও উপসর্গ ছিল না তাঁদেরও ওই দুই সেফ হোমে রাখা হতো। করোনা আক্রান্ত অথচ যাঁদের গৃহ পর্যবেক্ষণে থাকার ঘর নেই তাঁদেরকেও তারাপীঠ এবং নলহাটি ১ ব্লকের সেফ হোমে রাখা হতো। করোনা রোগীর সংখ্যা কমে যাওয়ায় চলতি বছরের জানুয়ারি মাসে ওই দুই সেফ হোম তুলে দেওয়া হয়।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন