পরিবেশ রক্ষা থেকে পথচলার বার্তা পুরুলিয়ায়

কারও ভাবনায় সবুজ রক্ষার বার্তা, কারও ভাবনায় দুর্ঘটনার সতর্কতা, তো কেউ ফুটিয়ে তুলছেন শিক্ষিকার ভূমিকায় দুর্গা। এমনই নানা রূপে অসুরদলনীকে দর্শকদের সামনে তুলে ধরছে পুরুলিয়া শহরের বিভিন্ন পুজো কমিটি।

Advertisement

প্রশান্ত পাল

শেষ আপডেট: ০৭ অক্টোবর ২০১৬ ০১:২৯
Share:

কারও ভাবনায় সবুজ রক্ষার বার্তা, কারও ভাবনায় দুর্ঘটনার সতর্কতা, তো কেউ ফুটিয়ে তুলছেন শিক্ষিকার ভূমিকায় দুর্গা। এমনই নানা রূপে অসুরদলনীকে দর্শকদের সামনে তুলে ধরছে পুরুলিয়া শহরের বিভিন্ন পুজো কমিটি।

Advertisement

শহরের ডাকবাংলো সর্বজনীনের ভাবনায় পরিবেশ রক্ষা। গাছ বাঁচানোর মধ্যেই যে পরিবেশের ভারসাম্য রক্ষা করা সম্ভব, সেই বার্তাই থাকছে গোটা মণ্ডপ জুড়ে। যে মাঠে এখন এই পুজো হয়, আগে ওই জায়গা ফাঁকা পড়ে ছিল। পুজো কমিটির সদস্য বাবলু কর্মকার, রঞ্জিত কর্মকার. কৌশিক চট্টরাজদের মতো কয়েকজন বেশ কয়েকটি গাছ লাগান। পালা করে যত্ন করাও শুরু করেন তাঁরা। ধীরে ধীরে ডালপালা মেলতে থাকে গাছগুলি। তা থেকেই বৃক্ষরোপনকেই পুজোর থিম করার কথা তাঁদের মাথায় আসে।

এই পুজো কমিটির আরও এক উদ্যোক্তা পুরুলিয়ার প্রাক্তন পুরপ্রধান বিনায়ক ভট্টাচার্যের কথায়, ‘‘দিনে দিনে জলাভাব তীব্র থেকে তীব্রতর হচ্ছে। বছর দুয়েক বৃষ্টি না হওয়ায় এ বার গ্রীষ্মে জলকষ্ট আমরা সবাই দেখেছি। সে কারণে পরিবেশ রক্ষার বার্তা দেওয়া জরুরি হয়ে উঠেছে।’’ প্রতিমা শিল্পী অজয় বাউরির কথায়, ‘‘দেবী এখানে বনদেবীর রূপে আসছেন। তিনি পরিবেশ রক্ষাকারী তো বটেই, সৃষ্টিরও দেবী। জঙ্গল ধ্বংস হওয়ায় বিপন্ন পশুর দল দেবীর স্মরণাপন্ন হয়েছে। তাদের আর্জি, পরিবেশ না বাঁচলে তারা যেমন বিপন্ন, তেমন মানুষও বিপন্ন।’’

Advertisement

সদরপাড়া সর্বজনীনের মণ্ডপে মায়ের সনাতনী মূর্তিকে সাক্ষী রেখেই ফুটিয়ে তোলা হচ্ছে দেবী দুর্গার দু’টি অন্য রূপ। শিল্পী আশিস নন্দীর তুলিতে ফুটে উঠছে দেবীর ‘মাতৃরূপেন’ ও ‘বিদ্যারূপেন’ এই দু’টি রূপ। আশিষবাবুর কথায়, ‘‘মা যেমন ভাবে সন্তানকে শাসন করেন, সেই রূপে দেবীকে ফুটিয়ে তোলা হয়েছে। অন্য ভাবে মাকে বিদ্যাদাত্রী হিসেবে তুলে ধরা হয়েছে।’’ তাঁর মতে, দিকে দিকে এখন অসুরের সংখ্যা বেড়ে গিয়েছে। কতজন অসুরকে মা বধ করবেন? তার থেকে বরং তাঁদের শিক্ষাদান করাই সঠিক মনে হয়েছে মায়ের।

শহরের নামোপাড়া রথতলা সর্বজনীনের মণ্ডপে এ বার দুর্ঘটনা রোখার বার্তা দেওয়া হচ্ছে। উদ্যোক্তাদের মতে, অনেক সময় অসতর্কতায় দুর্ঘটনা প্রাণ কাড়ছে। পুজো কমিটির সভাপতি শ্রীমন সরকারের কথায়, ‘‘দুর্ঘটনায় কেউ পঙ্গু হয়ে যাচ্ছেন, কারও বা প্রাণহানি হচ্ছে। তাই উৎসবের প্রাঙ্গণ থেকেই এ নিয়ে সবার মধ্যে সচেতনতা ছড়িয়ে দিতে চাইছি।’’ তাই ‘সেফ ড্রাইভ, সেভ লাইফের’ বার্তা তুলে ধরতে স্বল্প দৈর্ঘ্যের ছবি দেখানো হচ্ছে। থাকছে ভিডিও ক্লিপিংসও। জেলা পুলিশ সুপার রূপেশ কুমার বলেন, ‘‘মানুষের জীবন অনেক মূল্যবান, এটা আমরা প্রচারের চেষ্টা করছি। একটি পুজো কমিটি তাঁদের পুজোয় এই ভাবনা উপস্থাপন করছে। এটা ভাল।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন