বেণীমাধব ইনস্টিটিউশনে চলছে প্রদর্শনী। ছবি: তাপস বন্দ্যোপাধ্যায়।
রক্ষীবিহীন লেভেল ক্রসিংয়ে স্বয়ংক্রিয় সিগনালিং ব্যবস্থা থেকে সৌরতাপে টারবাইন ঘুরিয়ে বিদ্যুৎ উৎপাদন, ভূমিকম্পরোধী বাড়ি থেকে প্রাকৃতিক উপায়ে জলের তাপমাত্রা নিয়ন্ত্রণ করা, কিংবা বাসে বা মোটরবাইকে যেতে যেতে বিনা বিদ্যুতে মোবাইল চার্জ দেওয়ার মতো হরেক মডেল নিয়ে হাজির হল বীরভূমের বিভিন্ন স্কুলের পড়ুয়ারা। সে সব জেনে নিতে ভিড় জমাল পড়ুয়া, শিক্ষক ও অভিভাবকেরা।
রাষ্ট্রীয় শিক্ষা অভিযানের উদ্যোগে জেলার ৩২টি স্কুলের পড়ুয়ারা তাদের ৪০টি এমন বিজ্ঞান মডেল নিয়ে হাজির হয়েছিল সিউড়িতে। প্রদর্শনীর ব্যবস্থাপনায় ছিল শতবর্ষে পা দেওয়া সিউড়ির বেণীমাধব ইনস্টিটিউশন। মঙ্গলবার থেকে দু’দিনের জন্যে আয়োজিত বিজ্ঞান প্রদর্শনীতে দেখা গেল পড়ুয়াদের বিজ্ঞানমনস্কতা। সঙ্গে ছিল দু’দিনের বইমেলাও। কলকাতা থেকে বেশ কিছু প্রকাশনা
সংস্থা বইয়ের সম্ভার নিয়ে হাজির ছিল। অনুষ্ঠানের সূচনা হয় জেলা পরিষদের সভাধিপতি বিকাশরায় চৌধুরীর হাতে।
নিজেদের হাতে তৈরি সেই সব মডেল কী ভাবে মানুষের কাজে আসতে পারে, আগত দর্শকদের কাছে তার খুঁটিনাটি ব্যাখ্যা তুলে ধরে স্কুল সিউড়ির চন্দ্রগতি স্কুলের শুভজিৎ মণ্ডল, সঞ্জয় চট্টোপাধ্যায়, নানুরের মাসতুরিন জাহান, শুভঙ্কর সরকার ময়ূরেশ্বরের লক্ষ্মী মণ্ডল, তিতলি মজুমদারের মতো আরও অনেকে। সেরা বিজ্ঞান মডেল তৈরির পুরস্কার পেয়েছে রামপুরহাটের বিষ্ণুপুর রসমঞ্জরী উচ্চবিদ্যালয়। প্রাকৃতিক উপায়ে জলের তাপমাত্রা নিয়ন্ত্রণ করার উপায় বাতলে দিয়েছে ওই স্কুলের দুই পড়ুয়ার তৈরি বিজ্ঞান মডেল। দ্বিতীয় স্থানে সিউড়ির চন্দ্রগতি মুস্তফি মেমোরিয়াল স্কুল। ওই
স্কুলের দুই পড়ুয়া বানিয়েছে সৌরতাপে টারবাইন ঘুরিয়ে কী ভাবে বিদ্যুৎ উৎপাদন ও সংরক্ষণ করা যায় তার মডেল।
ভিলেজ কার্ডিওগ্রাফ বা গ্রামীণ হৃদস্পন্দন মাপার যন্ত্রের বিজ্ঞান মডেল বানিয়ে তৃতীয় স্থানে চিনপাই উচ্চ বিদ্যালয়। শুধু প্রথম তিন স্থানাধীকরিকেই নয় প্রদর্শনীতে সকল যোগ দেওয়া স্কুলের জন্যও জন্যে ছিল শংসাপত্র। সিউড়ির স্কুলের ব্যবস্থাপনায় খুশি আসা পড়ুয়া ও তাদের শিক্ষক-শিক্ষিকারা। বিভিন্ন স্কুল থেকে আসা শিক্ষকেরা বলছেন, ‘‘এখানে সব সুষ্ঠু ভাবে সম্পন্ন হয়েছে।’’ বেণীমাধব ইনস্টিটিউশনের প্রধান শিক্ষক শিশির দাস বৈরাগ্য বলেন, ‘‘এটা আমাদের শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের জন্যে বিশেষ বর্ষ। তাই এমন একটা অনুষ্ঠানের দায়িত্ব পেয়ে ভাল লাগছে।’’