ফিরল সাত’টি দেহ, অরন্ধন গোটা গ্রামে

শনিবার সিউড়িতে ময়নাতদন্তের পরে দেহগুলি নিয়ে আসা কেওটপাড়ায়। তবে ভট্টাচার্য পরিবারের বাড়িতে কোনও দেহই নিয়ে যাওয়া হয়নি। সে সব রাখা হয়েছিল স্থানীয় কালীতলা মাঠে।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা 

মহম্মদবাজার শেষ আপডেট: ১৪ এপ্রিল ২০১৯ ০৩:১২
Share:

শোকার্ত: কালীতলা মাঠে দেহের অপেক্ষা প্রতিবেশী, আত্মীয়, পরিজনদের। নিজস্ব চিত্র

বাসের সঙ্গে যাত্রিবাহী গাড়ির ধাক্কায় মৃত সাত জনের দেহ ফিরল কেওটপাড়ায়। দুর্ঘটনায় শোকের ছায়া গোটা এলাকায়। শুক্রবার রাত থেকেই কার্যত ‘অরন্ধন’ ছিল পাড়া-পড়শিদের সকলের বাড়িতেই।

Advertisement

শনিবার সিউড়িতে ময়নাতদন্তের পরে দেহগুলি নিয়ে আসা কেওটপাড়ায়। তবে ভট্টাচার্য পরিবারের বাড়িতে কোনও দেহই নিয়ে যাওয়া হয়নি। সে সব রাখা হয়েছিল স্থানীয় কালীতলা মাঠে। গ্রামের এক বাসিন্দা মানসী চট্টোপাধ্যায় বলেন, ‘‘বাড়িতে নব্বই বছরের বুড়ো বাবা, আশি বছরের মা শুধু রয়েছেন। দুর্ঘটনার খবর পাওয়ার পর থেকে দু’জনেই বাক্যহারা। এই সময়েই ছেলে, বৌমা, নাতি-নাতনিদের নিথর দেহ চোখের সামনে দেখলে তাঁদের কী হবে, সেই ভয়েই ওই দেহগুলি বাড়িতে নেওয়া হয়নি।’’

দাদা সঞ্জয়, ছোটভাই সন্দীপের মৃত্যু হয়েছে দুর্ঘটনায়। শনিবার কালীতলার মাঠে দাঁড়িয়ে একের পর এক পরিজনের দেহ দেখে মেজভাই সঞ্জীব ভট্টাচার্য বলেন, ‘‘এ ভাবে সবাইকে হারাবো ভাবতে পারিনি।’’ বক্রেশ্বর শ্মশানে সঞ্জীবের ছেলে, বছর সতেরোর সায়ক-ই মৃত ৬ জনের শেষকৃত্য করে।

Advertisement

পুলিশ সূত্রে খবর, ওই দুর্ঘটনায় গুরুতর জখম সঞ্জীবের খুড়তুতো ভাই রাহুলকে এ দিন কলকাতার হাসপাতালে স্থানান্তরিত করা হয়েছে। তাঁর স্ত্রী রিমি এখনও সিউড়ির হাসপাতালে চিকিৎসাধীন। তাঁর অবস্থাও আশঙ্কাজনক।

ভট্টাচার্য পরিবার সূত্রে জানা গিয়েছে, কামারপুকুর রামকৃষ্ণ মিশন হাইস্কুলের বাংলার শিক্ষক ছিলেন সঞ্জয়বাবু। তাঁর সহকর্মীরাও এ দিন এসেছিলেন কেওটপাড়ায়। সন্দীপবাবু মহম্মদবাজারের একটি বেসরকারি স্কুলে শিক্ষকতা করতেন। রাহুলবাবুও ছিলেন মহম্মদবাজারের একটি প্রাথমিক স্কুলের শিক্ষক।

স্থানীয় এক বাসিন্দা বললেন, ‘‘এক সঙ্গে এক পরিবারের এত জন দুর্ঘটনায় মারা গেলেন। গণপুরের জঙ্গলের ওই রাস্তায় যাতায়াত করতে এ বার কিছুটা হলেও আশঙ্কায় তো ভুগবেন অনেকেই।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন