পরীক্ষার হলে ঢুলছেন ‘শিক্ষক’, শাস্তি পেল ৭ ছাত্র, দেখুন সেই ভিডিয়ো

স্কুল ও শিক্ষকদের কুৎসা করে একটি ভিডিয়ো তৈরি করে তা সোশ্যাল মিডিয়ায় ছড়িয়ে দেওয়ার অভিযোগে একাদশ শ্রেণির ৭ পড়ুয়াকে সাময়িক ভাবে স্কুলে আসতে নিষেধ করলেন সিউড়ির বীরভূম জেলা স্কুল কর্তৃপক্ষ।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

সিউড়ি শেষ আপডেট: ২৮ অগস্ট ২০১৮ ০০:৪৫
Share:

ভিডিয়ো থেকে নেওয়া ছবি।

স্কুল ও শিক্ষকদের কুৎসা করে একটি ভিডিয়ো তৈরি করে তা সোশ্যাল মিডিয়ায় ছড়িয়ে দেওয়ার অভিযোগে একাদশ শ্রেণির ৭ পড়ুয়াকে সাময়িক ভাবে স্কুলে আসতে নিষেধ করলেন সিউড়ির বীরভূম জেলা স্কুল কর্তৃপক্ষ।

Advertisement

২৪ অগস্ট ওই বিষয়টি জানানো হয় অভিযুক্ত পড়ুয়াদের অভিভাবকদেরও। প্রধান শিক্ষক চন্দন সাহা বলেছেন, ‘‘শতাব্দীপ্রাচীন, ঐতিহ্যমণ্ডিত একটি স্কুলে পড়াশোনা করে যদি নিজের স্কুল ও শিক্ষকদের সম্মানের কথা কোনও পড়ুয়া না ভাবে, তা হলে তাকে শাস্তি পেতে হবে।’’

সোশ্যাল মিডিয়ায় ছড়িয়ে পড়া ভিডিয়োয় দেখা গিয়েছে— পরীক্ষার হলে চেয়ারে বসে ঢুলছেন ‘শিক্ষক’। সুযোগ বুঝে চলছে দেদার টুকলি, অন্যের খাতা দেখে লেখালেখি। শিক্ষক গভীর ঘুমে আচ্ছন্ন হতেই আরও বেপরোয়া হয়ে ওঠে কয়েক জন পড়ুয়া। শিক্ষকের পকেট থেকে মানিব্যাগ বের করে নেওয়া থেকে নানা অভব্যতা চালাতে থাকে। ঘুম ভাঙলে ছাত্রদের তিরস্কার করে ক্লাস থেকে বেরিয়ে যান শিক্ষক। ভিডিয়োর নাম দেওয়া হয়েছে ‘ব্যাড এগজাম’।

Advertisement

ছড়িয়ে পড়া সেই ভিডিয়ো দেখুন...

স্কুল সূত্রে জানা গিয়েছে, সপ্তাহখানেক আগে স্কুলের পড়ুয়াদের একাংশের মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়া ভিডিয়োর খবর জানতে পারেন স্কুল কর্তৃপক্ষ। ভিডিয়োয় থাকা ৭ পড়ুয়াকে চিহ্নিত করে ডেকে পাঠানো হয়। ডাকা হয় তাদের অভিভাবকদেরও। পড়ুয়াদের দাবি, তারা মজার ছলে এটা করে ফেলেছে। ‘অভিঘাত’ এমন হবে বুঝতে পারেনি। তবে স্কুল সিদ্ধান্ত নেয়, এমন অন্যায়ের পরে ওই পড়ুয়াদের স্কুলে ক্লাস করতে দেওয়া হবে না। আগে তাদের অনুশোচনা হোক। বুঝে নিক, যা তারা করেছে সেটা অন্যায়। তার পরে সিদ্ধান্ত।

তবে ওই ঘটনা নিয়ে দ্বিমত রয়েছে। অভিভাবকদের একাংশ বলছেন — ‘‘অন্যায় করেছে ওই ছাত্ররা। স্কুল সঠিক পদক্ষেপ করেছে।’’ অন্য অংশের দাবি—তিরষ্কার করতে হবে। সতর্ক করতে হবে। কিন্তু ক্লাস করতে না দিলে ছাত্রেরা পিছিয়ে পড়বে। তা পড়ুয়া ও স্কুল উভয়ের জন্যই ক্ষতিকারক।

প্রধান শিক্ষকের বক্তব্য, ‘‘আমাদের আপত্তির কারণ দু’টি । এক, ফোন স্কুলে আনা বারণ। কিন্তু ফোনের ক্যামেরা দিয়ে ভিডিয়ো করা হয়েছে। দুই, স্কুল ও শিক্ষকদের অবমাননা। জেলা স্কুলের শিক্ষকেরা পরীক্ষার হলে ঘুমোচ্ছেন এটা স্বপ্নেও ভাবা কঠিন। পৃথিবী জুড়ে ছড়িয়ে থাকা এই স্কুলের কৃতী ছাত্রদেরও অপমান করা হয়েছে। এই অন্যায় যে ছাত্রেরা করেছে, তাদের শাস্তি পেতেই হবে।’’ একইসঙ্গে তিনি বলেন, ‘‘কোনও ছাত্রের ভবিষ্যৎ নষ্ট হোক বা বছর নষ্ট হোক চাইছি না। আমরা ওদের শত্রু নই, শিক্ষক। এই সিদ্ধান্ত পুজো পর্যন্ত বলবৎ থাকবে।’’

শিক্ষকদের একাংশের বক্তব্য, গত বার উচ্চমাধ্যমিকের টেস্ট পরীক্ষায় অনেক পড়ুয়া অত্যন্ত খারাপ ফল করেছিল। এমন ঘটনায় উদ্বিগ্ন হয়ে যখন অভিভাবকদের সঙ্গে বৈঠকে বসা হয়, তখনই জানা যায় ওই সব পড়ুয়া স্মার্টফোনে চরম ভাবে আসক্ত। এর পরেই ফোন নিয়ে কড়া অবস্থান নেয় স্কুল। প্রতিটি ক্লাসের পড়ুয়া ও অভিভাবকদের জানানো হয়, স্কুলে কোনও ভাবেই ফোন আনা যাবে না। তার পরেও এমন কাণ্ড। অন্য পড়ুয়াদের বার্তা দিতেই এমন পদক্ষেপ করা হয়েছে।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন