নজরে: সেই ওয়ার্ড। নিজস্ব চিত্র
দু’মাস ধরে একের পর এক চুরি হয়েছে রামপুরহাট জেলা হাসপাতালের এসএনসিইউ ওয়ার্ডে। অভিযোগ, উধাও হয়েছে শীতাতপনিয়ন্ত্রকের লক্ষাধিক টাকার যন্ত্রাংশ। দু’দিন আগে সেই খবর প্রকাশ্যে এসেছে। হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের বক্তব্য, নিরাপত্তারক্ষীর অভাব রয়েছে। তাতেই এমন বিপত্তি। নজরদারি বাড়ানোর আশ্বাসও দেওয়া হয়েছে।
হাসপাতালের রোগীকল্যাণ সমিতির চেয়ারম্যান তথা মন্ত্রী আশিস বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, ‘‘এমন খবর জানা নেই। কয়েক দিনের মধ্যেই রোগীকল্যাণ সমিতির সভায় এ নিয়ে আলোচনা করা হবে। ঘটনায় জড়িতদের খুঁজে বের করে আইনি পদক্ষেপ করতে বলা হবে পুলিশকে।’’
হাসপাতাল চত্বরে বাতানুকূল যন্ত্রের সামগ্রী চুরির ঘটনা অবশ্য নতুন নয়। হাসপাতাল সূত্রে খবর, বছর দু’য়েক আগে ব্লাড ব্যাঙ্কের এসি-র তামার পাইপ চুরি গিয়েছিল। রামপুরহাট হাসপাতাল লাগোয়া এলাকায় সিউড়ির বিধায়ক তথা বিধানসভার স্বাস্থ্য বিষয়ক স্ট্যান্ডিং কমিটির সদস্য অশোক চট্টোপাধ্যায়ের নার্সিংহোমে দিন পনেরো আগে এসি-র যন্ত্রাংশ চুরি করতে গিয়ে হাতেনাতে ধরা পড়েছিল এক দুষ্কৃতী। তার কয়েক দিন আগে হাসপাতালপাড়া এলাকায় একটি বেসরকারি প্যাথোলজি সেন্টারেও একই ভাবে চুরি হয়।
রামপুরহাট হাসপাতালের এসএনসিইউ ইউনিটে অসুস্থ শিশুদের চিকিৎসা চলে। হাসপাতাল সূত্রে খবর, বছর দু’য়েক ওই ওয়ার্ডে প্রায় ৭ লক্ষ টাকা খরচ করে চারটি টাওয়ার এসি এবং একটি স্পিলট্ এসি বসানো হয়। ওই ওয়ার্ডে সাত দিন ২৪ ঘণ্টা চলে শীতাতপনিয়ন্ত্রক। জানা গিয়েছে, সে সব যন্ত্র থেকে কয়েক দিনের ব্যবধানে তামার পাইপ, কনডেন্সর এবং কম্প্রেসার চুরি গিয়েছে। প্রাথমিক ভাবে অনুমান, রীতিমতো ছক কষে ওি কাজ করা হয়েছে। হাসপাতাল সূত্রে জানা গিয়েছে, গত রবিবার রাতে দু’টি এসি-র কম্প্রেসার চুরি যায়। তার দু’দিন আগে চুরি হয় তামার পাইপ।
রামপুরহাট হাসপাতালের পূর্ত দফতরের ইলেকট্রিকাল বিভাগের সহকারী বাস্তুকার সায়ন্তন চট্টোপাধ্যায় জানান, দু’মাস ধরে চুরির ঘটনা ঘটছে। ৬ বার হানা দিয়েছে দুষ্কৃতীরা। প্রতিটি ক্ষেত্রেই থানায় অভিযোগ করা হয়েছে। তিনি জানান, বৃহস্পতিবার গভীর রাতে ফের এসি যন্ত্রের তামার পাইপ চুরি গিয়েছে। ওই ওয়ার্ডে শীতাতপনিয়ন্ত্রক চালু রাখতে শুক্রবার গভীর রাত পর্যন্ত কাজ করেছেন পূর্ত দফতরের কর্মীরা।
বছরখানেক আগেই হাসপাতাল চত্বরে নজরদারি বাড়াতে সিসিটিভি ক্যামেরা বসানো, ২৪ ঘণ্টার জন্য পুলিশ মোতায়েন করা হয়। হাসপাতালের মূল ভবনে বহাল রয়েছেন বেসরকারি সংস্থার ১১ জন নিরাপত্তা কর্মী। সুপার স্পেশ্যালিটি হাসপাতালেও নিরাপত্তাকর্মী রয়েছেন। তার পরেও এসএনসিইউ-এর মতো গুরুত্বপূর্ণ ওয়ার্ডে চুরির ঘটনায় বিব্রত হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ।
হাসপাতালের সুপার শর্মিলা মৌলিকের বক্তব্য, হাসপাতালের মূল ভবনে নিরাপত্তাকর্মীর অভাব রয়েছে। নজরদারি আরও বাড়ানো হবে।